ধর্ম ডেস্ক:
ইসলামে জুমাবার একটি মর্যাদাপূর্ণ দিন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘সূর্য উদিত হওয়ার দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এই দিনে তাঁকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে।’ (মুসলিম: ৮৫৪)
পবিত্র কোরআনে জুমা নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা আছে। জুমার দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে জুমার নামাজ। জুমার দিন ও জুমার নামাজের গুরুত্ব বোঝাতে আল্লাহ তাআলা বলছেন, ‘হে বিশ্বাসীরা! জুমার দিন যখন নামাজের জন্য ডাকা হয়, তখন তোমরা আল্লাহকে মনে রেখে তাড়াতাড়ি করবে ও কেনাবেচা বন্ধ রাখবে। এটাই তোমাদের জন্য ভালো; যদি তোমরা বুঝো।’ (সুরা জুমা: ৯)
শুক্রবারে জোহরের নামাজের পরিবর্তে জুমার নামাজকে ফরজ করা হয়েছে। খুতবার পরের এই দুই রাকাত নামাজ সর্বসম্মতিক্রমে ফরজ। জুমার নামাজ ছেড়ে দিলে হাদিসে ভয়াবহ ক্ষতির উল্লেখ করা হয়েছে। এজন্য প্রতিটি মুসলিমকে অবশ্যই জুমার নামাজ গুরুত্বসহ পড়া উচিত।
জুমার নামাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময় হলেও আমরা অনেকেই জুমার নামাজকে অবহেলা করে থাকি। অথচ বিনা কারণে কখনও জুমার নামাজ পরিত্যাগ করার সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে শরিয়তে কঠিন সতর্কবাণী রয়েছে। রাসুল (স.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি অবহেলা করে তিন জুমা পরিত্যাগ করে, আল্লাহ তাআলা তার হৃদয় মোহরাঙ্কিত করে দেন।’ (তিরমিজি: ৫০২)
আরও পড়ুন: যাদের জুমার নামাজের কোনো সওয়াব নেই
কারও জুমার নামাজ এক রাকাত ছুটে গেলে বাকি আর এক রাকাত ইমামের সালাম ফেরানোর পর উঠে পড়ে নিলে তার জুমা হয়ে যাবে। অনুরূপ কেউ দ্বিতীয় রাকাতের রুকুর আগে থেকে পেলেও ওই রাকাত এবং তার সঙ্গে আর এক রাকাত পড়লে তারও জুমার নামাজ হয়ে যাবে।
কিন্তু যদি কেউ দ্বিতীয় রাকাতের রুকু শেষ হওয়ার পর জামাতে শামিল হয়, তাহলে সে জুমার নামাজ পাবে না বলেই ধর্তব্য হবে। এই অবস্থায় তাকে জোহরের চার রাকাত আদায়ের নিয়তে জামাতে শামিল হয়ে ইমামের সালাম ফেরানোর পর চার রাকাত ফরজ পড়তে হবে। (ফতোয়া ইসলামিয়্যাহ, সৌদি ওলামা-কমিটি: ১/৪১৮, ৪২১)
আরও পড়ুন: জুমার দিন সুরা কাহাফ ও দরুদপাঠের বিশেষত্ব
আর কেউ যদি জুমার নামাজ না পায় বা মসজিদে গিয়ে দেখে জুমা শেষ হয়ে গেছে তবে তাকে জোহরের নামাজ পড়তে হবে। কারণ জামাত ছাড়া জুমার নামাজ হয় না। হাদিসে এসেছে, ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার এক রাকাত পেয়ে যায়, সে যেন আর এক রাকাত পড়ে নেয়। কিন্তু যে (দ্বিতীয় রাকআতের) রুকু না পায়, সে যেন জোহরের ৪ রাকআত পড়ে নেয়।’ (ইবনে আবি শাইবা: ৬২১)
প্রসঙ্গত, ইমাম সাহেব যদি বিনা অজুতে জুমার নামাজ পড়িয়ে নামাজের শেষে বিষয়টি মনে পড়ে, তাহলে মুক্তাদির নামাজ সহিহ হয়ে যাবে। আর ইমাম ওই নামাজ কাজা করতে চার রাকআত জোহর পড়বেন। (আল-মুন্তাকা মিন ফাতাওয়াল ফাওয়া: ৩/৬৮)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমার নামাজের গুরুত্ব বোঝার তাওফিক দান করুন। জুমাকেন্দ্রিক সকল মাসয়ালা জানার ও মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমআই