বুধবার, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৩
সাইফ ইব্রাহিম, ইবি প্রতিনিধি:
প্রতিমা স্থাপন, পূজা অর্চনা, শোভাযাত্রা ও ধর্মালোচনাসহ নানা আয়োজনে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উদযাপন করা হয়েছে।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসিতে স্থাপিত অস্থায়ী পূজা মন্ডপে প্রধান পুরোহিত কর্তৃক প্রতিমা স্থাপন ও পূজা অর্চনার মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
পূজা অর্চনা ও পুষ্পাঞ্জলী প্রদান শেষে বেলা ১২টায় টিএসসিসির সামনে থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্তরের সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী পুরুষের অবাধ স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা যায়। সকলে ঢোলের তালে তালে তাদের ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নাম কীর্তনের সহিত নেচে-গেয়ে শোভাযাত্রাকে আনন্দউৎসবে মাতিয়ে তোলেন। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের প্রধান সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
শোভাযাত্রা শেষে মিলনায়তনে ধর্মালোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তপন কুমার রায়ের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রথীন্দ্রনাথ রায়। ধর্মালোচক হিসেবে ছিলেন যশোর রামকৃষ্ণ আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক এবং বিবেকানন্দ শিক্ষা ও সংস্কৃতি পরিষদের সদস্য ডা. মিলন বসু। বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপ্না রাণী বিশ্বাস। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেন, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড জিওগ্রাফি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিপুল রায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মিঠুন বৈরাগীসহ সনাতন ধর্মাবলম্বী অন্যান্য শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে আলোচকরা শ্রী-কৃষ্ণের জন্ম, জীবনাদর্শ এবং বিভিন্ন গুন নিয়ে আলোচনা করেন। তারা বলেন, 'মানুষকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য শ্রী কৃষ্ণের মতো কুটনৈতিক আর দ্বিতীয়টি নেই। শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন পরম শখা। ভগবানের সন্তানরা যখন চরম অজ্ঞানতার অন্ধকারে নিমজ্জিত, নির্যাতিত, ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে তখন ভগবান তার সন্তানদের বাঁচাতে ধরণীতলে পতিত হন। শুধু পতিত হয়েই শেষ নয়, তিনি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন বারবার ফিরে আসার। আমরা প্রতিবছর জন্মাষ্টমী পালন করি, কিন্তু জন্মাষ্টমীর শিক্ষাটা আমরা গ্রহণ করি না। সনাতন ধর্মের মহৎ বার্তা নিয়ে জন্মাষ্টমী আমাদের দ্বারে উপনীত হয়। সেই বার্তাকে নিজেদের মধ্যে ধারণ করে জগৎটাকে সাজাতে হবে।'
ধর্মালোচনা শেষে প্রসাদ বিতরণ ও ধর্মীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পূজা শেষ হয়।
এমআই