শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

মন্ত্রীর বাড়ির বিদ্যুৎ বিল মাসে মাত্র ৩৭ টাকা

বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৩
মন্ত্রীর বাড়ির বিদ্যুৎ বিল মাসে মাত্র ৩৭ টাকা

শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত, লালমনিরহাট প্রতিনিধি:

সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি'র বাড়িতে ব্যবহৃত বিদ্যুতের বিল দেখানো হয়েছে মাসে মাত্র ৩৭ টাকা। নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী (নেসকো) দাখিল করা গত প্রায় চার বছরে বিদ্যুত বিল দেখানো হয়েছে ১১ হাজার ৬২০ টাকা। যা এখনো বকেয়া রয়েছে।

নেসকো থেকে প্রাপ্ত তথ্য জানায়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ উপজেলা) আসনে টানা দুই বারের আওয়ামীলীগের এমপি এবং কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার কাশিরাম গ্রামের প্রায়ত এমপি করিম উদ্দিন আহমেদের ছেলে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের নামে একটি সেচ সংযোগ রয়েছে। যার ডিজিটাল কন্জুমার নম্বর ২৮০০৪৮৯৪ ; মিটার নম্বর ৫১৫৬২৫১৩।

এ মিটারে প্রায় চার বছরে ৬১ হাজার ৩৪৪ টাকা বিদ্যুৎ বিল দেখানো হলেও এখনো তা বকেয়া রয়েছে। চলতি বছর ফেব্রুয়ারী থেকে মে মাস পযর্ন্ত গড়ে প্রতিমাসে সাড়ে ৯ হাজার টাকার বিল দেখানো হলেও জুন ও জুলাই মাসে শুন্য বিল দেখানো হয়েছে। ২০২২ সালের মার্চ মাসে ১৭ হাজার ২৩৬ টাকা বিল দেখানো হলেও জানুয়ারী- ফেব্রুয়ারী মাসে শুন্য বিল দেখা হয়েছে। গতবছর এপ্রিল মাস বিল দেখানো হয়েছে ৮০৪ টাকা এবং মে থেকে ডিসেম্বর পযর্ন্ত প্রতিমাসে বিল দেখানো হয়েছে ১৮০ টাকা।

সমাজকল্যান মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের নামে আরও একটি আবাসিক সংযোগ রয়েছে। সেখানেও একই অবস্থা।২০২০ সালের নভেম্বর মাসে বিদ্যুৎ বিল দেখানো হয়েছে ৩২ টাকা। এছাড়া কোন মাসে ৭২ টাকা আবার কোন মাসে ৫২ টাকা, ৬৫ টাকা, ১১১ টাকা বিল দেখানো হয়েছে। সর্বোচ্চ একটি বিল ২৪০৮ টাকা দেখানো হয়েছে ২০২২ সালের আগষ্ট মাসে। এ সংযোগেও গত প্রায় চার বছরে বিদ্যুত বিল দেখানো হয়েছে ১১ হাজার ৬২০ টাকা। যা এখনো বকেয়া রয়েছে।

মন্ত্রীর একমাত্র ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ একজন কলেজ শিক্ষক ও লালমনিরহাট জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি নেসকোর একজন আবাসিক গ্রাহক। তার বাড়িতে ব্যবহৃত মাসিক বিদ্যুৎ বিল দেখানো হয়েছে ৭২ টাকা, ১১১ টাকা, ১৫১ টাকা, ১৮৯ টাকা, ২২৯ টাকা ও ৫১২ টাকা। শুধু চলতি বছর জুলাই মাসে সর্বোচ্চ বিল ১৩,৫৬১ টাকা প্রস্তুত করা হয়েছে। গেল প্রায় চার বছরে বিল দেখানো হয়েছে ৭৯ হাজার ৯৯৫ টাকা। যা এখনো বকেয়া রয়েছে।

মন্ত্রীর ছোট ভাই শামসুজ্জামান আহমেদ ভুট্টুর একটি বানিজ্যিক সংযোগে গেল প্রায় চার বছরে বিল বকেয়া রয়েছে ৬ লাখ ২০ হাজার ১১৩ টাকা। তার নামে একটি সেচ পাম্পের সংযোগও রয়েছে। গেল চার বছর ধরে বিল বকেয়া রয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার ১১টাকা। তার বাবা প্রায়ত এমপি করিম উদ্দিন আহমেদের নামে একটি আবাসিক সংযোগ রয়েছে। এ সংযোগটি ব্যবহার করছেন তিনি। এ সংযোগে মাসিক বিল দেখানো হয়েছে ৬৩ টাকা, ১৭২টাকা, ২৯৪ টাকা, ২৮০ টাকা। সর্বোচ্চ বিল ৪৯৬টাকা দেখানো হয়েছে ২০২২ সালের আগষ্ট, সেপ্টম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে। গেল চার বছরে বিল দেখানো হয়েছে ১৮ হাজার ৫৭৭ টাকা।এখনো বকয়ো রয়েছে এসব বিল।

স্থানীয়রা জানান, এয়ার কন্ডিশন(এসি), ফ্রিজ, ফ্যানসহ সকল ধরনের ইলেকিট্রক পণ্য ব্যবহৃত হয় মন্ত্রী, তার ছেলে ও তার ছোট ভাইয়ের বাড়িতে। তাদের সেচ পাম্প থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমানে জমিতে ধান ও ভুট্টা চাষ করতে পানি সরবরাহ করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা হাসান আব্দুল মােলেক বলেন, ১৭ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় নেসকো কর্তৃপক্ষ আমার  বিরুদ্ধে মামলা করেছে। নেসকো কর্তৃপক্ষ শুধু সাধারন গ্রাহকের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে পারে কিন্তু তারা প্রভাবশালী গ্রাহকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে নিশ্চুপ থাকে।

রংপুর নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, অনেক গ্রাহকের বিল বকেয়া রয়েছে। বকেয়া বিল আদায়ে তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করছেন। বিদ্যুৎ বিল প্রস্তুত করতে কোন গাফিলতি করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে তারা খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।

নেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকিউল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎ বিল প্রস্তুত করতে কোন অসঙ্গতি হয়েছে কি না এবং এসব বকেয়া বিল খতিয়ে দেখা হবে। এজন্য  আগামি সপ্তাহে আমি নিজেই কালীগঞ্জ অফিস যাবো পরিদর্শন করতে। অনিয়ম হলে তা অবশ্যই বিদ্যুৎ আইনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল