চবি প্রতিনিধি :
শাটল ট্রেনে শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৫০টি বাস ও মিনিবাস ভাঙচুর করেছেন বিক্ষুব্ধরা। এতে প্রায় ৩০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
গত বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেন চৌধুরীহাট এলাকায় আসলে ছাদের উপরে ঝুলে থাকা গাছের ডালপালার সাথে ধাক্কা খেয়ে আহত হন প্রায় ১৫ জন শিক্ষার্থী। কয়েকজন বাড়ি খেয়ে ছাদ থেকে পড়ে যান বলেও জানা গেছে। এরপর থেকে শাটল ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আহতদের মধ্যে তিন শিক্ষার্থীর অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক। তাদেরকে সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ইউনিটে (আইসিইউ) স্থানান্তর করেছেন চিকিৎসকরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চমেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশেক। আইসিইউতে থাকা শিক্ষার্থীরা হলেন আমজাদ হোসেন সোহাগ (১৮), খলিলুর রহমান (২২) এবং অংসইনু মারমা (২১)।
এছাড়া বাকিদের মধ্যে ৫ জন নিউরো সার্জারী ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। তারা হলেন তাইজুল ইসলাম (২১), আবু সাইদ (২৪), সান আহমেদ (২১), রাফসান (২৩) ও আসলাম (২২)।
রাত সাড়ে ৮ টার ট্রেন ক্যাম্পাসে আসার সাথে সাথে জিরো পয়েন্টে মূল ফটক আটকে টায়ার-চেয়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এরই মধ্যে কতিপয় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবন, পরিবহন দপ্তর, নিরাপত্তা দপ্তর এবং চবি ক্লাব ও অতিথি ভবনে হামলা ও তাণ্ডব চালায়। হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন দপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দীন বলেন, প্রায় ৩০ কোটি টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ৬০ এর অধিক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, শাটল ট্রেনে যে ঘটনা ঘটেছিল, এর মাধ্যমে যৌক্তিকভাবে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীদের শাটল ট্রেনের সমস্যাগুলোর একটা সমাধান করা যেতো।। কিন্তু কতিপয় দুষ্কৃতকারীর কারণে যেমন এই সমস্যাগুলোর সমাধান কঠিন হয়ে গেছে, তেমনি আমাদের পুরো বিশ্ববিদ্যালয়টাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।
প্রক্টর ড. মোহাম্মদ নুরুল আজিম সিকদার বলেন, আজকের শাটল ট্রেনের ছাঁদে থাকা প্রায় ১৫ জন শিক্ষার্থী গাছের বাড়ি খেয়ে আহত হয়েছেন। এখানে আমাদের কোন হাত নেই। আমরা শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাছাড়া, যারা ক্যাম্পাসের এই তাণ্ডবের সাথে জড়িত, তারা কোনভাবেই পাড় পারে না।
গতকাল রাতে এ বিষয়ে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার অত্যন্ত মর্মাহত হয়ে বলেন, এমন ধ্বংসযজ্ঞ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আর কখনোই দেখে নি। যে বা যারাই এর সাথে জড়িত কেউ ছাড় পাবে না।
এ বিষয়ে আজ (৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫টায় সংবাদ সম্মেলন ডাকেন চবি উপাচার্য। সংবাদ সম্মেলনে আইসিটি সেল প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম বলেন, মোট আহত ষোলজন। এর মধ্যে ৩ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আইসিইউতে নেয়া হয়েছে। ক্লাস-পরীক্ষা স্বাভাবিক রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। শাটল ট্রেন স্বাভাবিক করতে আমরা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, গতকালের ঘটনায় হাটহাজারী থানায় তিনটি অজ্ঞাত মামলা করা হয়েছে।
এসজে/আরইউ