স্পোর্টস ডেস্ক:
শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে এশিয়া কাপ শুরু করেছিলো বাংলাদেশ। সেই লঙ্কানদের বিপক্ষে সুপার ফোরে বাঁচা-মরার ম্যাচে মাঠে নামে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৫৭ রান সংগ্রহ করে লঙ্কানরা। রান তাড়ায় ব্যাট করতে নেমে বেশ সাবধানী শুরু করে টাইগাররা। তবে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত ২৩৬ রানে বাংলাদেশ অলআউট হলে, ২১ রানের জয় পায় লঙ্কানরা। এতে ফাইনালে যাওয়ার শেষ সুযোগটাও হারাল সাকিব-লিটনদের দল।
শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২৫৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দেখেশুনে খেলতে থাকেন দুই টাইগার ওপেনার নাইম ও মিরাজ। দলকে ভালো শুরু এনে দন এই দুই ব্যাটার। লঙ্কান বোলারদের কোন সুযোগ না দিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন মিরাজ-নাইম। তবে দলীয় ৫৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
২৯ বলে ২৮ রান করে ফেরেন মেক শিফট ওপেনার মিরাজ। তার বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন লিটন দাস। নাইমকে সঙ্গে নিয়ে বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করে লিটন। তবে দলীয় ৬০ রানে ফের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৪৬ বলে ২১ রান করে সাজঘরে ফিরে যান নাইম। এরপর তৃতীয় উইকেটে আসা টাইগার অধিনায়ক সাকিবও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সাকিব।
নামের পাশে ৩ রান যোগ করতেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। এরপর ক্রিজে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লিটন দাসও। স্পিনার ওয়াল্লালেগের ঘূর্ণিতে আটকা পড়েন তিনি। পঞ্চম উইকেটে জয়ের আশা মিটিমিটি জ্বালিয়ে রেখেছিলেন মুশফিকুর রহিম ও তাওহীদ হৃদয়। ধীরে ধীরে দলকে নিয়ে যাচ্ছিলেন লক্ষ্যের কাছে। তবে বেশিদূর গেলো না সেই পথ, ৭২ রানের এই জুটিতে আবারো বাঁধা হয়ে দাঁড়ালেন শানাকা।
দলীয় ১৫৫ রানে মুশফিককে ফেরান লঙ্কান এই পেসার। ৪৮ বলে ২৯ রান করেন মুশফিক। দলের এমন চাপের মাঝেও হেসে উঠেছে হৃদয়ের ব্যাট। ষষ্ট উইকেটে শামীমকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন এই ডানহাতি ব্যাটার। তবে দলীয় ১৮১ রানে শামীম ৫ রানে ফিরলে ভাঙে এই জুটিও। এরপর বাংলাদেশকে আশা জাগিয়ে থাকা হৃদয় দলীয় ১৯৭ রানে সাজঘরে ফেরেন। ৯৭ রানে ৮২ করেন এই ডানহাতি ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত ৪৮.১ ওভারে ২৩৪ রানে অলআউট হয় টাইগাররা।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই উইকেট পেয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ। তবে ডিআরএসের সহায়তায় জীবন ফিরে পান ওপেনার পাথুম নিসাংকা। এরপর দুই লঙ্কান ওপেনার মিলে ঝড়ো সূচনা করেন। প্রথম পাঁচ ওভারে তুলে নেন বিনা উইকেটে ২৬ রান। তবে ষষ্ঠ ওভারে প্রথম আঘাত হেনে টাইগার শিবিরে স্বস্তি এনে দেন পেসার হাসান মাহমুদ। তার করা গুড লেন্থ ডেলিভারীতে উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমের কাছে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন করুনারত্নে।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে পাথুম নিসাংকা ও কুশল মেন্ডিসের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়িয়েছে শ্রীলঙ্কা। এই দুই ডানহাতি ব্যাটারের অর্ধশত রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের ভীত গড়ছে দাসুন শানাকার দল। তবে ইনিংসের ২৪তম ওভারে শরীফুল ইসলামের বলে লেগ বি ফোরের ফাঁদে পড়েন নিসাংকা। এরপর ২৬তম ওভারে আরেক সেট ব্যাটার মেন্ডিসকেও সাজঘরের পথ দেখান পেসার শরিফুল ইসালাম।
ক্রিজে থাকা নতুন দুই ব্যাটারের পরীক্ষা নিচ্ছিলেন বাংলাদেশের স্পিনার। তবে চারিথ আসালাঙ্কাকে সাজঘরের পথ দেখান পেসার তাসকিন আহমেদ। ২৩ বলে ১০ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। পঞ্চম উইকেট জুটিতে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাও। হাসান মাহমুদের শিকার হয়ে মাত্র ৬ রান করে সাজঘরে ফিরেন।
ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা ও সাদিরা। দুই ডানহাতি ব্যাটারের ৬০ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের ভীত পায় শ্রীলঙ্কা। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে উইকেট হারিয়ে রানের পুঁজি পায় লঙ্কানরা। স্বাগতিকদের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৩ রান করেন সাদিরা। বাংলাদেশের হয়ে ৩টি করে উইকেট তাসকিন আহমেদ ও নেন হাসান মাহমুদ। এশিয়া কাপে টিকে থাকতে হলে সাকিব আল হাসানদের সামনে ২৫৮ রানের লক্ষ্য।
এমআই