ঢাবি প্রতিনিধি: পুলিশি নির্যাতন বন্ধ এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যয়ের শিক্ষার্থী খাদিজা ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাসহ আটককৃত ছাত্রনেতাদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে নেতারা এ দাবি জানান।
ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেন, পুলিশি নির্যাতন বাংলাদেশে নতুন কোন ঘটনা নয়। ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল পুলিশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কী তান্ডব চালিয়েছিল আপনারা জানেন। তৎকালীন বিজয় একাত্তর হলসহ বিভিন্ন হলে অমানবিক নির্যাতন করেছিল। মুদিবিরোধী আন্দোলনে তারা তান্ডব চালিয়েছিল। কর্মসূচি থেকে ছাত্র অধিকার পরিষদের চার নেতাকে রিমান্ডে নিয়ে এডিসি হারুন চোখে মরিচ দিয়েছিল। গত শুক্রবার চাকরিতে আবেদনের সময়সীমা ৩৫ বছর প্রত্যাশীদেরকে তারা পিটিয়েছে। আওয়ামী সরকারের আমলে ছাত্র আন্দোলনকে থামানোর জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়েছে পুলিশকে।
তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালে সিলেটে রায়হান নামের এক যুবককে টাকার জন্য পিটিয়ে হত্যা করেছে। রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় রুম্মন শেখকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। উত্তরার পশ্চিম থানার আলমগীর হোসেম নামক এক মোটরচালককে হত্যা করেছিল পুলিশ। গত ১৪ বছরে পুলিশ যতটা বেপরোয়া হয়েছে এর আগে কোন সরকারের আমলে পুলিশ এতটা বেপরোয়া ছিল না। পুলিশ আগ্রাসন চালানোর এত সাহাস কোথায় পেয়েছে?
তিনি আরও বলেন, আপনারা দেখবেন, আওয়ামী সরকার নিজেদের গদি টিকিয়ে রাখার জন্য পুলিশকে আগ্রাসী বানিয়েছে। খাদিজার কী অপরাধ ছিল? কিন্তু আজ একবছর হওয়ার পরও তাকে কারাগারে থাকতে হচ্ছে। সরকার বোঝাতে চায় খাদিজা সাধারণ শিক্ষার্থী হলেও সরকারী বিরুদ্ধে যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে কঠোর সরকার। বিন ইয়ািমন মোল্লাকে রাতের বেলা ঘর থেকে তুলে আনা হয়েছে। ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদিজাতুল কুবরা, বঙ্গবন্ধু সরকারী কলেজের শিক্ষার্থী ইসমাইল হোসেনসহ আটককৃত সকলের মুক্তির দাবি জানান তিনি।
পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদিব বলেন, আজকের বাংলাদেশ একটি পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। পুলিশ যে ভয়ানক দানবে পরিণত হয়েছে তা থেকে সরকারী দল, বিরেধী দল—কেউ রেহাই পাচ্ছে না।গত পাঁচবছরে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে এসএসসি শিক্ষার্থীদেরও সে নির্মম আক্রমণ করে। বিচারবহির্ভূত হত্যার সাথে যারা জড়িত তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে।
বিন ইয়ামিন মোল্লার পিতা রফিকুল ইসলাম মোল্লা জানান, আজ দেশের আইনের অবহেলার কারণে আমার ছেলেকে জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছে। আইনের প্রয়োগ থাকলে আমাকে এখানে আসতে হতো না। আমার ছেলেকে মুক্তি দিন৷
বিন ইয়ামিন মোল্লার মা হাসিনা বেগম বলেন, আজকে এই রাজু ভাস্কর্যের সামনে আমার ছেলের পদচারণার কথা ছিল অথচ সে আজ কারাগারে সেলে বন্দি। আমার ছেলের কোন অপরাধ নাই। ও তো মানুষের কথা বলতে গেছে।
এসজে/আরইউ