বুধবার, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৩
জেলা প্রতিনিধি:
ধনে পাতাই এখন জীবিকা নির্বাহের একমাত্র পথ। একদিকে তারা যেমন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন, গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর রাথুরা গ্রামের সিংহভাগ মানুষ গত দেড় যুগ ধরে বিলেতি ধনে পাতা চাষ করছেন। অন্যদিকে কর্মসংস্থানও হচ্ছে স্থানীয় মানুষের। পাশাপাশি এ উপজেলার উৎপাদিত পাতা রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে।
সরেজমিনে জানা যায়, নারী-পুরুষ দলবেঁধে জমি থেকে ধনে পাতা তুলছে। কেউ কেউ ফসলি জমি থেকে পাতা তুলে আনছেন। গাছের নিচে বসে কয়েকজন পাতা থেকে ময়লা ছাড়াচ্ছেন। কলা গাছের খোলসের অংশ দিয়ে বানানো রশি দিয়ে তা আঁটি বাঁধার কাজ করছেন।
পাতার আঁটি বাঁশের খাঁচা ভরে রাখছেন। কেউ কেউ বাড়ির আঙিনায় দাঁড়িপাল্লায় তা ওজন করছেন। কেউ আবার মাথায় কাপড় বেঁধে পাতার খাঁচা মাথায় নিয়ে ছুটছেন বাজারে। এ কাজে বেশি ভূমিকা রাখছেন নারী শ্রমিকরা।
রাথুরা গ্রামের কয়েকজন নারী শ্রমিক জানান, এক সময় তাদের সংসারে অনেক অভাব-অনটন ছিল। এখন তারা ধনে পাতার ক্ষেতে কাজ করে স্বচ্ছলতা এনেছেন। তা দিয়েই সংসার চালাচ্ছেন। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নারী শ্রমিকরা কাজ করেন। প্রতি ১ কেজি বেছে দিলে ৩ টাকা পাওয়া যায়। এতে তাদের সারাদিন প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকার কাজ হয়।
রাথুরা গ্রামের হরিদাস বলেন, ‘গ্রামের শতাধিক পরিবারের সদস্যরা ধনে পাতা চাষ করছেন। একেক পরিবারের ৪-৫ জন করে কাজ করছেন। এতে অনেক মানুষের কর্মসস্থান হয়েছে।
এ অঞ্চলে ২০০৭ সাল থেকে ধনে পাতার চাষাবাদ শুরু হয়েছে। প্রথম প্রথম পাতার বীজ সংগ্রহ করে এলাকায় চাষাবাদ হতো। এখন অনেকেই বীজ তৈরি করতে পারেন। দূর থেকে বীজ কিনে আনতে হয় না। মুষ্টি ও কেজি হিসেবে বাজারে বিক্রি হয়।’
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম বলেন, ‘বিলেতি ধনে পাতা লাভজনক ফসল। এটি নিজেই একটি মেডিসিনাল প্লেন হিসেবে ব্যহৃত হয়। এতে রোগবালাই কম হয়।
তাছাড়া যেসব এলাকায় বিলেতি ধনে চাষ হয়, ওইসব এলাকায় সুন্দর একটি গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। কালীগঞ্জের বিলেতি ধনে পাতা বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।’
সময় জার্নাল/এলআর