শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

গাফিলতির দায় নিচ্ছে না লিবিয়া

শনিবার, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩
গাফিলতির দায় নিচ্ছে না লিবিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:


ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস-বন্যায় হাজার হাজার মানুষ নিহতের ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে লিবিয়ার বিদ্রোহী সরকারের কর্মকর্তাদের ওপর। দেশটির অভ্যন্তর, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক বিশ্বের মতে, কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণেই ঘটেছে এই বিপুল প্রাণহানি।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে পূর্ব লিবিয়ায় ক্ষমতাসীন সরকারের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন— সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যরা ঝড়ের আগে দেরনা শহরের বাসিন্দাদের ঝড় সম্পর্কে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন, নিরাপদ স্থানে সরেও যেতে বলেছিলেন। কিন্তু সাধারণ লোকজনের অনেকেই এই সতর্কবার্তাকে ‘অতিরঞ্জিত’ মনে করে আমল দিতে চাননি।

জনগণের উদাসীনতার কারণেই নিহতের সংখ্যা এত বেড়েছে বলে মনে করছেন তারা।গত ১০ সেপ্টেম্বর লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর দেরনায় আছড়ে পড়ে ভূমধ্যসাগরে উদ্ভূত প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল। ঝড়ের ফলে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস এবং শহরটি ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া ওয়াদি দেরনা নদীর বাঁধ ভেঙে লাখ লাখ গ্যালন পানি শহরের ভেতরে প্রবেশ করায় আক্ষরিক অর্থেই ভেসে যায় শহরটি।

বস্তুত, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস-বন্যায় দেরনার অধিকাংশ আবাসিক ভবন ভেঙে পড়েছে এবং সেসব ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে এখনও উদ্ধার হচ্ছে শত শত দেহ। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় দিনে দেরনার বিভিন্ন ধ্বংসস্তুপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১১ হাজারের বেশি মরদেহ এবং এখনও অন্তত ২০ হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।

স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস-বন্যায় ইতোমধ্যে শহরের ৩০ শতাংশ অঞ্চল নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

২০১১ সালে বিদ্রোহী সামরিক গোষ্ঠির হাতে প্রেসিডেন্ট ‍মুয়াম্মার গাদ্দাফি নিহত হওয়ার পর গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়া। বর্তমানে ১৭ লাখ ৫৯ হাজার ৫৪১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দেশটি পূর্ব ও পশ্চিম— দুই ভাগে বিভক্ত। দু’টি আলাদা সরকার দেশের দুই অংশ নিয়ন্ত্রণ করে।

বেনগাজি শহরকে পূর্ব লিবিয়ার রাজধানী ঘোষণা করেছে বিদ্রোহী সরকার। তবে এই সরকার এখন পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ বা বৈশ্বিক কোনো স্বীকৃতি পায়নি। দেশটির মূল রাজধানী ত্রিপোলিতে আসীন সরকারই এখনও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।

ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী দেরনা শহরটির পড়েছে পূর্ব লিবিয়ায়। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ঝড়ের আগে চরম বৈরীভাবাপন্ন দুই সরকারের কাছ থেকে মিশ্র বার্তা পেয়ে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন তারা। ফলে, সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না যে কী করবেন— ঘরে থাকবেন না কি নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটবেন।

লিবিয়ার রাজনৈতিক দল তাঘির পার্টির শীর্ষ নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক গুমা এল গামাতি দেরনার একজন বাসিন্দা এবং এই বিপর্যয়ের অন্যতম ভুক্তভোগী। বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘বেনগাজিতে ক্ষমতাসীনদের উচিত ছিল ঝড়ের আগে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করা। তার পরিবর্তে তারা জনগণকে ঘরের মধ্যে থাকার এবং ঝড়ের সময় বাইরে বের না হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিল তারা। (ঝড়ের আগে) বেশ কয়েকবার এই নির্দেশনা প্রচার করা হয়েছে।’

তবে বেনগাজির বিদ্রোহী সরকারের অন্যতম জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং দেরনার মেয়র আবদুলমেনাম আল ঘাইথি এই অভিযোগ পুরোপুরি খারিজ করে দিয়ে সৌদি আরবের নিউজ চ্যানেল আল-হাদাথকে বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং অসত্য অভিযোগ। ঝড়ের তিন দিন আগে শহরের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য পুলিশ ও সেনা সদস্যদেরকে আমি নিজে নির্দেশ দিয়েছি।’

বেনগাজি প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তাও আবদুলমেনাম আল ঘাইথির এই বক্তব্যের সত্যতা শিকার করেছেন। এক কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, ‘ঝড়ের দু’-তিনদিন আগে থেকে যখন আবহাওয়া খারাপ হচ্ছিল, সেসময় পুলিশ এবং সেনাবাহিনী সাধারণ লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য বেশ কয়েকবার সতর্কবার্তা দিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে জনগণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ তাতে সাড়া দেননি। তারা ভেবেছিলেন, সরকার একটি সাধারণ ঝড় সম্পর্কে অতিরঞ্জিত তথ্য দিচ্ছে।’

এস.এম


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল