সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী, বাকৃবি প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) আবাসিক হলগুলোর ডাইনিংএ খাবারের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতির কারণে খাবারের দাম বৃদ্ধিতে ভুগছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আবাসিক শিক্ষার্থীদের নিত্যদিনের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে তাদের পরিবার। অনেক শিক্ষার্থীই দুই বেলা খাবার খেয়ে দিন যাপন করছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা খাবারের দাম কমানো ও খাবারের মান বৃদ্ধির জোর দাবি জানিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে খেঁাজ নিয়ে জানা যায়, বাকৃবিতে ছেলেদের ৯টি হলের মধ্যে ৩টি হলের ডাইনিং বন্ধ রয়েছে। ফজলুল হক হল, ঈশা খাঁ হল ও আশরাফুল হক হলের ডাইনিং বন্ধ রয়েছে। বাকি ৬ টি হলের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হল ও শহীদ জামাল হোসেন হলে দুবেলা খাবার খেতে শিক্ষার্থীদের ৯০-১০০ টাকার মতো খরচ পড়ছে। হোসেন শহীদ সোরওয়ার্দী হল ও শামসুল হক হলে ৯০ টাকা, শহীদ নাজমুল আহসান হলে ৮০-৯০ টাকা। শাহজালাল হলে একবেলা খাবারে দেড় প্লেট ভাত, মাছ ও ভর্তা খেতেই ৬০ টাকার মতো খরচ পড়ে শিক্ষার্থীদের। যা মোটের ওপর ১০-২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া এসব হলগুলোতে খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এদিকে ছাত্রী হলগুলোর মধ্যে দুবেলা খাবার খেতে রোজী জামাল হলে ৮৫ টাকা, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ও সুলতানা রাজিয়া হলে ৮০ টাকা, বেগম রোকেয়া হলে খরচ পড়ে ৭৫ টাকা, তাপসী রাবেয়া হলে ১ বেলা খাবার খেতেই প্রায় ৫০-৫৫ টাকার মতো খরচ পড়ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। হলগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্নার পাশাপাশি খাবারের মান নিম্নমানের বলে জানায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বাকৃবির পশুপালন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানায়, মুদ্রাস্ফীতির কারণে সব জিনিসের দাম বেড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে খাবারের দামও বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু খাবারের মানের দিকে বিন্দুমাত্র নজর নেই কর্তৃপক্ষের। এছাড়াও কয়েকটি আবাসিক হলের ডাইনিং বন্ধ রয়েছে। তাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বারের মোড় কিংবা শেষ মোড় হতে আমাদের খাবার কিনে খেতে হচ্ছে। হোটেলগুলোতে চড়া দামে খাবার বিক্রি করা হচ্ছে।
বেগম রোকেরা হলের ২য় বর্ষের আবাসিক এক শিক্ষার্থী বলেন, অন্যান্য সরঞ্জামের দামের সাথে মিলিয়ে ডায়নিংয়ে খাবারের দাম বেড়েছে। কিন্তু পুষ্টির মাত্রায় চিন্তা করলে খাবারের মান একেবারেই নিম্ন। এদিকে ১ম এবং ২য় বর্ষের সকলের জন্য ডায়নিংয়ে কুপন কাটা বাধ্যতামূলক। ডায়নিংয়ের যদি পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার না পায় সেক্ষেত্রে বাইরে থেকে আলাদা করে খাবার খেতে হয়। এতে একবেলার খাবারের জন্য দ্বিগুন টাকা খরচ হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ডাইনিং বন্ধের বিষয়ে আমি জানি না। এগুলো প্রভোস্ট কাউন্সিলের দায়িত্বের ভিতরে পড়ে না। ডাইনিংএ নিন্মমানের খাবার পরিবেশনের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রত্যেকটি হলের নিজ নিজ প্রভোস্ট এগুলো দেখভাল করেন। তারা বিষয়টি সমাধান করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ডাইনিং চালু করার জন্য আমরা বন্ধ হলগুলোর প্রভোস্টদের সাথে কথা বলবো। খাবারের মান ভালো করার জন্য ডাইনিং এ যারা দায়িত্বে আছে তাদের কাজ করতে হবে। বিশেষ করে ছাত্রনেতাদের ভূমিকা রাখতে হবে। হাউজ টিউটররা এ কাজে সাহায্য করবে। ডাইনিং চালু হলে ও খাবারের মান ভালো হলে শিক্ষার্থীদের খাবারের খরচ কমবে।
এমআই