রাবি প্রতিনিধি:
হলের আবাসনকে কেন্দ্র করে ছাত্র রাজনীতি করা ছাত্রলীগের কাজ না বলে মন্তব্য করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। আজ সোমবার (১৮ সেপ্টম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাশ বাংলাদেশ মাঠে আয়োজিত শাখা ছাত্রলীগের ২৬ তম সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, হলে শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যাকে পুঁজি করে ছাত্র রাজনীতি করা ছাত্রলীগের কাজ না। সিট বাণিজ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা-ই ছাত্রলীগের কাজ। আবাসিক হলে শিক্ষার্থীরা যেন সুন্দর পরিবেশে থাকতে পারে সেটা ছাত্রলীগকে নিশ্চিত করতে হবে।
কেন্দ্রীয় এ সভাপতি আরও বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা মৌলবাদীদের জায়গা দেয় না। রাবির ছাত্ররা কখনো তাদের সাথে আপোস করতে জানে না। স্বাধীনতা বিরোধী ও মৌলবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে ছাত্রলীগের ছেলেরা জীবন দিয়েছে। তবুও তারা আপোস করেনি। আগামী দিনে ছাত্রলীগকে সুন্দরের পথে পরিচালিত করার লক্ষ্যে আমরা সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছি। গোটা বাংলাদেশের সামনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ হবে আইকনিক।
সাদ্দাম আরও বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত দেশ হিসেবে পরিচিত হব,সেই লক্ষ্য আমাদের কাজ করতে হবে। মিছিল মিটিংয়ে সীমাবদ্ধ না থেকে আমাদের নতুনত্ব নিয়ে আসতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সামনে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের স্বপ্ন দেখাচ্ছে, সেই স্বপ্ন পূরণে আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সমস্যা সমাধানে প্রশাসন যেন কাজ করে সেই অনুরোধ করছি প্রশাসনকে।
প্রধান বক্তা হিসেবে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সাথে সংগ্রাম ওতোপ্রোতো ভাবেই জড়িত। ছাত্রলীগের অজস্র ভাইয়ের রক্ত রঞ্জিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌলবাদীদের আশ্রয় দেওয়া যাবে না। আজকের দিনে শিবিরের টর্চার থেকে বেরিয়ে শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে ছাত্রলীগরা। যারা বিশ্বিবদ্যালয়ের দায়িত্ব নিবে তারা যেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে। আর যারা দায়িত্ব পাবেন না তারা দায়িত্বপ্রাপ্তদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবেন। রাজশাহীর মাটিকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের চেতনায় গড়ে তুলতে সবাই একসাথে কাজ করব।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, জাতীয় রাজনীতিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতার সংখ্যা খুবই সীমিত। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্ব খুবই কম। রাজশাহীতে ছাত্রলীগ করা মানে মরুভূমিতে ফুলের বাগান করা। এসময় তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এছাড়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, সংসদে নির্বাচন আসলেই নিজেদের জাতীয়বাদী পরিচয় দেওয়া একটা দল ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করে মৌলবাদী কর্মকাণ্ড চালাতে চায়।
সম্মেলনে পদপ্রত্যাশীদের উদ্দ্যেশ্যে লিটন বলেন, আজকে এখানে অনেক পদপ্রার্থী আছে। কিন্তু সবাইকে নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ বিষয়ে আলোচনা করে ঠিক করবে৷
সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা।
এছাড়া বিশেষ বক্তা হিসেবে ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ হীল বারী, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. সাখাওয়াত হোসেন রনি, উপ-কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক মো. সাব্বির হোসেন এবং সহ-সম্পাদক আদনান হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
এমআই