হিলি প্রতিনিধি : দিনাজপুরের হিলিতে ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড দিনাজপুর শাখা থেকে লোন না দিয়েও লোন পরিশোধে চাপ ও মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে ব্যাংকের বিরুদ্ধে। ন্যায় বিচারের দাবিতে, লোন পরিশোধ ও মামলার হাত থেকে রক্ষা পেতে সংবাদ সন্মেলন করেছেন নারগীস পারভীন নামের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় হাকিমপুর প্রেসক্লাবে ওই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর পক্ষে তার স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান এই সংবাদ সন্মেলন করেন। সে হিলির পৌরসদের চন্ডিপুর এলাকার বাসিন্দা।
সংবাদ সন্মেলনে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড দিনাজপুর শাখা গত ২০১৮ সালে মেসার্স মদিনা ট্রেডার্স প্রো: নারগীস পারভীন দেখিয়ে শাখা ব্যবস্থাপক শাহাজাহান নিজেই আমার স্ত্রীর নামে একটি একাউন্ট খোলেন। যাহার একাউন্ট নম্বর ৪৫৭৮ ওই একাউন্ট থেকে ওই বছরের ১৬ অক্টোবর ও ২২ অক্টোবর ৩টি চেকের মাধ্যমে আমার স্ত্রীর পুরো নাম সাক্ষর করে একাউন্ট থেকে ৯৯লাখ টাকা উত্তোলন করে নেন। যাহার চেক নং যথাক্রমে ৪৮১৬৩৮১,৪৮১৬৩৮২,৪৮১৬৩৮৩। ৮মাস পর ব্যাংকে পরবর্তী নতুন ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম আসলে এই লোনের ঘটনা আমরা জানতে পারি। তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপকের নিকট ডাকযোগে রেজিষ্ট্রি পত্রের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে পত্র ফেরত দেন। পরবর্তীতে নতুন আসা ব্যাংক ম্যানেজার পণ্য আমদানি করার কথা বলে কৌশলে আমাদের দ্বারা পুনরায় ওই ব্যাংকে একটি একাউন্ট খোলায় ২০১৯সালের অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে। যাহার চেক নং ৫২০৮০৮১ হইতে ৫২০৮০৯০ পর্যন্ত একইসাথে ৯২শতক জমি মর্টগেজ কের নেয়। সেই একাউন্টের মাধ্যমে বেশ কিছু পণ্য আমদানি করা হয় নগদ টাকার মাধ্যমে। নতুন খোলা এই একাউন্ট নম্বর আর পুর্বের খোলা একাউন্ট নম্বর একই ছিল। কিন্তু ২০১৯ সালে খোলা সেই একাউন্টের চেক দিয়ে ৯দিনের মাথায় ১৫ তারিখে আদালতে চেকডিজ অনার মামলা করে ব্যাংক। ক্রমান্বয়ে পরপর তিনটি মামলা দায়ের করে ব্যাংক কতৃপক্ষ। আসলে আমরা ওই টাকা দেখিনি ব্যাংক থেকে উত্তোলন করিনি। এমনকি ওই টাকা কোন খাতে ব্যবহার করা হয়েছে তার কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি ব্যাংক কতৃপক্ষ। কিন্তু তারপরেও সেই টাকা আমার স্ত্রীর নামে লোন দেখিয়ে তা পরিশোধের জন্য আমাদের উপর জুলুম বা অত্যাচার করা হচ্ছে। এমনকি মামলার ভয় দেখিয়ে জেল খাটানোর ভয় দেখিয়ে দ্রুত টাকা পরিশোধ করার কথা বলা হচ্ছে। আমরা এখন নিরুপায় হয়ে এই জালিয়াতির হাত থেকে বাচতে আজকে এই সংবাদ সন্মেলন করছি বলে জানিয়েছেন তিনি। দেশবাসী আদালতসহ সবাই জানুক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড দিনাজপুর শাখা যে অপকর্ম করছে সেই অপকর্মের বিচার দাবী করছি আমি। আমরা চাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ন্যায় বিচারের আবেদন জানাচ্ছি বলে জানান তিনি।
ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড দিনাজপুর শাখার তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক মো.শাহজাহান বলেন, সে অবশ্যই ব্যাংক থেকে ৯৯লাখ টাকা লোন নিয়েছে এ বিষয়ে চুল পরিমান সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। আর ব্যাংকের কোন বিনিয়োগ কখনোই গ্রাহকের অনুমতি বা গ্রাহকের মর্টগেজ ছাড়া কোনদিনই হয় না। সেই ক্ষেত্রে এইখানেও ব্যাংকের নুন্যতম কোন ত্রুটি নেই। এগুলো নিয়ে সে বহুবার অভিযোগ করেছে কিন্তু কোনবারই সে অভিযোগ প্রমান করতে পারেনি। আমাদের ইন্টারনাল অডিট হয়েছে সবধরনের অডিট হয়েছে সেখানে সে কোনভাবেই প্রমান করতে পারেনি যে ব্যাংকের লোক তার বিনিয়োগ অনিয়ম করে করছে।
ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড দিনাজপুর শাখার বর্তমান শাখা ব্যবস্থাপক মো.হাসানুজ্জামান বলেন, বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা বিচারধীন রয়েছেন। সে সত্য বলছে নাকি আমরা সত্য বলছি এটি সম্পর্কে আদালত ফায়সালা দিবে।
এসজে/আরইউ