সাইফ ইব্রাহিম, ইতি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) একাডেমিক শাখার প্রধান ও কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটিএম এমদাদুল আলমের উপর হামলা চেষ্টা এবং তাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের কর্মীদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় প্রশাসনিক ভবনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রতিবাদে বিকাল সাড়ে ৩টায় সংবাদ সম্মেলন এবং প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে কর্মকর্তা সমিতি। এসময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একাংশ এ হমলা চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করেন কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, '১৬ দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনের কর্মসূচি বাস্তবায়নে কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক কাজে অংশগ্রহণের জন্য নিষেধ করা হলেও অর্থ ও হিসাববিভাগের পরিচালক কাজ করছেন শুনে দুপুরে জোহর নামাজ শেষে তার সাথে কথা বলতে তার অফিসে যান তিনি।
এ সময় আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে মীর জিল্লুর, মীর মোরশেদ, আব্দুল হান্নান, মনিরুল, বাদল ও আসাদুজ্জামান মাখনসহ কয়েকজন ওই অফিসে ডুকে পড়েন। তারা তার সাথে খারাপ ব্যবহার শুরু করেন এবং তাকে মারধর করার জন্য উদ্যত হন।
এমন সময় ভাইরে ছাত্রলীগ কর্মীদের হইচই শোনা যায়। ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে কয়েকজন তার উপর হামলা করে। তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এবং তাকে তুলে নেওয়ায় জন্য চেষ্টা করে। এসময় সমিতি সাধারণ সম্পাদক ও অন্যান্য কর্মকর্তারা তাকে রক্ষা করেন। পরে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি উপস্থিত হয়ে কর্মকর্তা সমিতির সভাপতিকে উদ্ধার করেন। এছাড়াও ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঘটনাস্থলে ছাত্রলীগ নেতা হোসাইন মজুমদার, কর্মী শাহিন আলম, বাঁধন, হাফিজসহ আরও বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা মাঝেমধ্যে শান্ত হয়ে গেলে বিপক্ষে অবস্থান নেয়া কর্মকর্তারা চোখের ইশারায় তাদেরকে আবারো উত্তেজিত করেন বলে অভিযোগ করেন কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি।
কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটিএম এমদাদুল আলম বলেন, ' ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় পোষ্য কোটায় ভর্তি হয়ে এখন পোষ্য কোটার বিরোধিতা করছে। এর বিরুদ্ধে কথা বলছে।
তার নেতৃত্বে আমার উপর হামলা করা হয়েছে। এছাড়াও আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়েছে। এমনকি আমাকে তুলে নেওয়ায় জন্য চেষ্টা করা হয়েছে, এসময় অন্যান্য কর্মকর্তারা বাঁধা দেয়। অথচ তার পিতা আমার সহকর্মী। তিনি দাঁড়িয়ে থেকে তার সন্তানকে দিয়ে আমাকে হেনস্তা করিয়ে নিলেন।'
তিনি আরও বলেন, ' আমরা আমাদের ন্যায়সঙ্গত এবং যৌক্তিক দাবি আদায়ে ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির মধ্য দিয়ে আন্দোলন করে আসছি। মাত্র ১৫-১৬ জনের একটি গ্রুপ যারা অতীতেও সমিতিকে বিভক্ত করেছে, তারা এখনও ব্যক্তি স্বার্থের লোভে আমাদের আন্দোলনের বিরোধিতা করছে। তারা সমিতির বাইরে অবস্থান নিয়ে পরিকল্পিতভাবে ছাত্রলীগের একাংশকে দিয়ে এই ঘটনাটা ঘটিয়েছে। যে ছাত্রলীগগুলো এ ঘটনার ঘটিয়েছে তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ছাত্রলীগ হতে পারে না। ঘটনায় জড়িতদের বিচারের জন্য আমি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এছাড়া যে কর্মকর্তারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তারা সকলের কাছে চিহ্নিত। জনগন তাদের বিপক্ষে। আমাদের কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করবো। সেখানে সবাই যে সিদ্ধান্ত দেবে আমরা সমিতি তাদের বিরুদ্ধে সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।'
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের নিকট জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, 'কর্মকর্তাদের চলমান আন্দোলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এসময় কিছু ছাত্র সমিতির সভাপতির কাছে জবাবদিহিতার জন্য যায়। এবং এক ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তখন আমি তাদের নিভৃত করার জন্য সেখানে যাই।'
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, 'ঘটনাস্থলে গিয়ে আমি বিশৃঙ্খলা দেখেছি। পরে উদ্ভূত পরিস্থিতি সমাধান করেছি।'
সময় জার্নাল/এলআর