সৌরভ শুভ, জাবি প্রতিনিধি:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শাখা ছাত্রলীগ নেত্রীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ না দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সিং এন্ড জিআইএস বিভাগের নিয়োগ বোর্ডে ছাত্রলীগের বাধা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্য অফিসের সামনে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
জানা যায়, রিমোট সেন্সিং এন্ড জিআইএস ইন্সটিটিউটের একজন শিক্ষক নিয়োগের জন্য নিয়োগ বোর্ড শুরু হওয়ার কথা ছিলো সকাল দশটায়। এ সময় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে প্রার্থীদের বের করে উপাচার্য অফিসের সামনে অবস্থান নেন। পরে দুপুর ১২ টায় উপাচার্যের সচিব গৌতম কুমার বিশ্বাস এসে প্রার্থীদের জানান, আজকের মত বোর্ড স্থগিত। প্রার্থীদের পরবর্তীতে চিঠির মাধ্যমে এ ব্যাপারে জানানো হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় রসায়ন বিভাগের তিন প্রভাষককে নিয়োগ দেয় বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। নবনিযুক্ত প্রভাষকরা ইতোমধ্যে চাকুরিতে যোগদান করেছেন। তবে শাখা ছাত্রলীগের সহ—সভাপতি সাদিয়া আফরিন পাপড়িকে নিয়োগ না দেয়ায় উপাচার্য অফিস অবরোধ করেছে নেতাকর্মীরা।
রসায়ন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নবনিযুক্ত তিনজন প্রভাষক ৩৯ ব্যাচ, ৪২ ব্যাচ ও ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী৷ তারা প্রত্যেকেই নিজ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে প্রথম বা দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন। তবে ছাত্রলীগের সহ—সভাপতি পাপড়ি স্নাতকে পঞ্চম ও স্নাতকোত্তরে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় নকল করে বহিষ্কৃত ও প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, শিক্ষক নিয়োগের বেলায় কোন প্রকার স্বজনপ্রীতি ও স্বাধীনতাবিরোধী কাউকে আমরা চাকরিতে দেখতে চাই না। স্বাধীনতার পক্ষের যোগ্য প্রার্থীরা নিয়োগ পাবেন এটাই আমরা চাই।
এদিকে নিয়োগ বোর্ড স্থগিত হওয়ায় অসুবিধায় পড়েছেন মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা পরীক্ষার্থীরা। প্রায় দুই ঘন্টা অপেক্ষার পর পরীক্ষা না দিয়েই ফিরে গেছেন তারা। রাজধানীর খিলগাঁও থেকে পরীক্ষা দিতে আসা সুজন জানান, আমি অফিস থেকে ছুটি নিয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছি। লম্বা সময় অপেক্ষা করার পর শুনি ভাইভা হবে না। এটা কোনভাবেই কাম্য নয়।
ইন্সটিটিউট অব রিমোট সেন্সিং এর পরিচালক অধ্যাপক শেখ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিভাগের জন্য শিক্ষক নিয়োগ খুবই জরুরি ছিল। মাত্র দুইজন শিক্ষক দিয়ে আমাদের বিভাগ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। একটি শুন্য পদের বিপরীতে ২৩ জন ক্যান্ডিডেট ছিল। তবে বোর্ড স্থগিত হওয়া খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম আমাদের সময়কে বলেন, ছাত্রলীগ যে দাবি জানিয়েছে আমাদের বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন সে দাবির সাথে পুরোপুরি একমত। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা বিভাগের সবোর্চ্চ ফলাফলধারীকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছি। আমি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় অন্তত ৪০ জন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। এক্ষেত্রে স্বাধীনতার বিপক্ষের কেউ নিয়োগ পায়নি।
সময় জার্নাল/এলআর