রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

আইটিতে নতুন আরও দেড়শো কর্মীর কর্মসংস্থানের সুযোগ

শনিবার, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩
আইটিতে নতুন আরও দেড়শো কর্মীর কর্মসংস্থানের সুযোগ

নোবিপ্রবি সংবাদদাতা:

দেশের শীর্ষস্থানীয় আইটি প্রতিষ্ঠান বিডিকলিং আইটি লিমিটেডের নতুন অফিসের উদ্বোধন করা হয়েছে। এতে করে চার শতাধিক কর্মীর প্রতিষ্ঠান বিডিকলিংয়ে নতুন করে আরও প্রায় দেড়শো কর্মীর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এমনকি আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে শুধুমাত্র আইটি সেক্টরেই ৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে বলে জানিয়েছে বিডিকলিং।

শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বনশ্রী এফ-ব্লক এলাকায় নতুন এই অফিসের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি রাসেল টি আহমেদ।

উদ্বোধন শেষে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে বিডিকলিংয়ের অগ্রযাত্রা ও চ্যালেঞ্জ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অথিতি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ। এসময় তিনি বলেন, বিশ্বে আইটি সেক্টরে প্রচুর কাজের চাহিদা রয়েছে। সে অনুপাতে আমরা কাজ করতে পারছি না। তবে সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে আমরা দেশের জন্য আরও রেমিট্যান্স নিয়ে আসতে পারি।

রাসেল টি আহমেদ বলেন, এই মুহূর্তে আমরা আইসিটি সেক্টর থেকে প্রায় দেড় মিলিয়ন ডলার এক্সপোর্ট করি। এরমধ্যে প্রথম চারটি ডেসটিনেশন হলো, আমেরিকায় ৩৪ শতাংশ যায় এবং যুক্তরাজ্যে হয় ৩০ শতাংশ। এছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানেও বড় একটা অংশ আমরা এক্সপোর্ট করে থাকি। এই মুহুর্তে এই সময়ে শুধুমাত্র আমেরিকাতে ৩ মিলিয়ন আইসিটি লোকের স্বল্পতা আছে। যুক্তরাজ্যে ১ মিলিয়নের মতো, ইউরোপের দেড় মিলিয়নের মতো এবং জাপানে সাড়ে ৮ লাখের মতো লোকের স্বল্পতা আছে। তারা কাজের লোক খুঁজে পাচ্ছে না, মানুষের অভাব। এই মানুষগুলোই কিন্তু আমরা হতে পারি। আমাদের জন্য বড় একটা সুযোগ।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র এই চারটি দেশের চাহিদা যদি আমরা ১০ শতাংশও পূরণ করতে পারি, তাহলেই আমাদের এক্সপোর্ট ২০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে। আর আইসিটিতে সমগ্র বিশ্বের যে চাহিদা আছে, তার ১ শতাংশও যদি আমরা পূরণ করতে পারি, তাহলেও আমাদের এক্সপোর্ট ছাড়িয়ে যাবে ২০ মিলিয়ন।

ফ্রিল্যান্সিং করারোপ প্রসঙ্গে বেসিস সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে একটা ভুল বুঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে কথা বলেছি। আইসিটি ইন্ডাস্ট্রি আইনের ১২৪ ধারা অনুযায়ী ২০২৪ সাল পর্যন্ত ফ্রিল্যান্সারদের জন্য কোন কর নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে অন্যান্য ব্যাংকগুলোকে একটা সার্কুলার দিয়েছে। একটা নতুন কিছু নয়। সুতরাং এটা নিয়ে ফ্রিল্যান্সারদের ভয়ের কিছু নেই।

তিনি আরও বলেন, আমরা খুঁজে নিয়ে দেখেছি অনেক ফ্রিল্যান্সাররাই ব্যাংক থেকে ক্যাশ ইনসেনটিভ পায় না। কোন কোন কারণে তারা পায় না, সেটি আমরা খুঁজে বের করেছি এবং সেটা নিয়েও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে আমরা মিটিং করেছি। আশা করছি আগামী ২/৩ মাসের মধ্যেই এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

এর আগে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিডিকলিং আইটি লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাবিনা আক্তার। এসময় তিনি বলেন, আজকের এই দিনটা আমাদের জন্য খুবই আনন্দের। প্রথম কারণ হলো, আজকের অনুষ্ঠানে আমরা এমন ক’জন অথিতিকে আমরা পেয়েছি, যারা ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত ব্যস্ত একেকজন মানুষ। যাদের আলোয় প্রতিনিয়ত আলোকিত হচ্ছে আমাদের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। আর দ্বিতীয় কারণ হলো, বিডিকলিং আইটি লিমিটেড হাটিহাটি পা-পা করে তার নিজস্ব লক্ষ্যের দিকে ছুটে চলছে। আজকে ছয় হাজার স্কয়ার ফিটের এই বিশাল অফিস উদ্বোধন এবং নতুন আরও দেড় শতাধিক মানুষের কাজের ক্ষেত্র তৈরির মাধ্যমে আমরা আমাদের স্বপ্নের পানে আরও একধাপ এগিয়ে গিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, অনলাইন শ্রমবাজার বা ফ্রিল্যান্সিং খাতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। সারা বিশ্বের এ শ্রমবাজারে বাংলাদেশের অংশ প্রায় ১৬ শতাংশ। তবে এ খাতের কর্মী হিসেবে বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও আয়ের দিক থেকে ৮ম। বিশ্বে ফ্রিল্যান্সিংয়ের বাজার দেড় ট্রিলিয়ন ডলার। তাই এই বাজার আরও সম্প্রসারণের সুযোগ করে দিতে আয়ের বিপরীতে ১০ শতাংশ উৎসে কর কর্তনের বিধান বাতিল করতে হবে।

অনুষ্ঠান শেষে সভাপতির বক্তব্যে বিডিকলিং আইটি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, শুধুমাত্র আইটি সেক্টরেই ৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে বিডিকলিং আইটি লিমিটেড। ৯ বছর আগে আমাদের যাত্রাটা বিস্তর পরিসরে ছিলো না। ড্রয়িং রুমের একটা কম্পিউটারে আমাদের কাজ শুরু হয়েছিলো, আজ এই পর্যায়ে এসে আমাদের সাথে কাজ করছে ৪ শতাধিক এমপ্লয়ী। আশা করছি ২০৩০ সালের মধ্যেই বিডিকলিং দেশের আইটি সেক্টরে অপ্রতিদ্ধন্ধি এক নাম হয়ে উঠবে।

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার ক্রাইসিস দূর করতে হলে ফ্রিল্যান্সারদের রেমিটেন্সে কর বসানোর সিদ্ধান্ত না নিয়ে বরং ফ্রিল্যান্সারদের রেমিট্যান্সে সরকার ঘোষিত যে প্রণোদনার কথা বলা আছে, সেগুলোর সহজীকরণ করতে হবে। একইসঙ্গে মানুষের হাতের কাছে অর্থ লেনদেনের সার্ভিসটি পৌঁছে দিতে হবে। বর্তমানে সরকারের পলিসি হলো, বেসিসের সদস্যরা বিটুবি বিজনেসের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ ইনসেন্টিভ পাবে, আর ফ্রিল্যান্সার হলে ৪ শতাংশ পাবে। আমরা যদি দেখি, সত্যিকার অর্থে ফ্রিল্যান্সাররা সুবিধাটুকু পাচ্ছে না। সুতরাং নতুন করে কর না বসিয়ে বরং ফ্রিল্যান্সারদের দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আনার প্রক্রিয়াটা সহজ করে দিতে হবে।

তিনি বলেন, ফ্রিল্যান্সারদের প্রণোদনা বাস্তবায়ন না হলে এবং নতুন করে করারোপ করার চিন্তা করলে খাতটি বরং খাতটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সেই সঙ্গে বৈধ পথে বৈদেশিক মুদ্রা আসার রাস্তাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে অনলাইনে লেনদেন হবে, হুন্ডিতে টাকা আসবে।

অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন হ্যাশটেক আইটি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী আসলাম হাসিব, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রোডাকশন কোম্পানী লিমিটেডের ডিজিএম এবং ‘প্রিয় বনশ্রীবাসি’ ফেসবুক গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সাইফুদ্দিন মানিক। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিডিকলিংয়ের জিএম, হেড অব এইচআর, ফিন্যান্স ম্যানেজার এইচআর এবং বিডিকলিং পরিবারের সদস্যরা। 

অনুষ্ঠানের শুরুতে ফিতা কেটে নতুন অফিসে প্রবেশ, অথিতীদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা, বক্তব্য এবং সব শেষে কেক কাটার মধ্য দিয়ে নতুন অফিসের উদ্ভোধন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল