ঢাবি প্রতিনিধি: নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশের পরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ (ডাকসুর) সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আখতার হেসেনসহ দলের নেতারা হামলার শিকার হয়েছেন।
আজ বুধবার দুপুর দেড়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার পরমাণু শক্তি কেন্দ্রের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
হামলায় সংগঠনের আনুমানিক ১২ জন নেতা আহত হয়েছেন। আহতেরা হলেন , নতুন ছাত্রসংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির যুগ্ম আহবায়ক লুৎফর রহমান, যুগ্ম সদস্য সচিব নুসরাত তাবাসসুম, যুগ্ম সদস্য সচিব আসাদুল্লাহ আল গালিব, ঢাবি কমিটির সদস্য নিশিতা জামান নিহা, যুগ্ম আহবায়ক ফয়সাল হাসান, সদস্য আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সদস্য সুমনা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক নুসাইবা তাসনিম সাবা, যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল হান্নান মাসউদ ও সদস্য সাদিয়া ইয়াসমিন ঐতিহ্য। তারা বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, ১০-১২ জনের মতো আহত হয়েছে। তবে আখতার ছাড়া কারও অবস্থা গুরুতর নয়। হামলা মূলত আখতারের উপরই হয়েছে।
গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির নেতাদের অভিযোগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈকতের জগন্নাথ হল শাখা ও মুহসিন হল শাখার কিছু নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে। তবে হামলার কথা অস্বীকার করেছেন সৈকত।
হামলায় আহত সংগঠনের যুগ্ম সদস্য সচিব আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, আমরা সম্মেলনের পর পদযাত্রা শেষ করে টিএসসিতে কিছুক্ষণ অবস্থান করছিলাম। পরে দুপুরের খাবার খাওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ফিল্ডের (কেন্দ্রীয় মাঠ) দিকে যাচ্ছিলাম। ওখানে হঠাৎ করে ছাত্রলীগের একটি টীম (দল) এসে এলোপাথাড়ি হামলা করে। সেখানে আমি, আখতার ভাই এবং ফয়সাল (যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল হাসান) ভাই ছিলাম। ওদের লক্ষ্য ছিল মূলত আখতার ভাই। ওরা এসেই আখতার ভাইয়ের মুখে, নাকে ঘুষি মারা শুরু করে। আমরা ওনাকে রক্ষা করতে গিয়ে আহত হই। কিছুক্ষণের মধ্যে আমাদের সংগঠনের আরও কিছু সদস্য পেছন থেকে আসছিলেন। তারা রক্ষা করতে আসলে তাদের উপরও হামলা করা হয়। ওখানে ছাত্রলীগের আট-দশজন উপস্থিত ছিল।
সংগঠনের যুগ্ম সদস্য সচিব নুসরাত তাবাসসুম বলেন, ভাইয়ের অবস্থা বর্তমানে খুবই খারাপ। উনি ছাড়া ৩-৪ জন মেয়েসহ মোট ১২ জনকে আহত হয়েছে। হামলার মধ্যে কারা ছিল তাদেরকে শনাক্ত করা কঠিন তবে জগন্নাথ হলের রনিসহ সৈকতের অনুসারীরা ছিল। মহসিন হলের ছাত্রলীগের অনুসারীরা ছিল।'
সংগঠনের ঢাবি শাখার সদস্য সাদিয়া ইসলাম ঐতিহ্য বলেন, 'আমরা রিকশায় ছিলাম। আমরা যখন দেখলাম ভাইকে মারতেছে, রিকশা থেকে নেমে ভাইকে সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করলে আমাদেরকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে ভাইকে হামলা করে। আমরা ভাইকে রক্ষা করতে পারি নাই। ভাই হেঁটে যাচ্ছিলেন, বৃষ্টির কারণে আমরা রিকশায় উঠেছিলাম।'
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক৷ তানভীর হাসান সৈকত বলেন, এ হামলায় ছাত্রলীগ জড়িত না। আমরা চাইলে তাদেরকে সংবাদ সম্মেলনেই বাধা দিতে পারতাম৷ আজকে সকাল থেকে থেকেই আমার নেতাকর্মীসহ আমরা মধুতে অবস্থানরত ছিলাম। সংবাদ সম্মেলন করার জন্য আখতার আমার সাহায্য চেয়েছে। তারা কেন এখন আমাদের দোষারোপ করছে জানি না। ওদেরকে মারার পেছনে আমাদের কোন রাজনৈতিক স্বার্থ নেই। বরং ওরা নুরের কাছ থেকে বেইমানির স্বীকার হয়ে নতুন দল করেছে। ওদেরকে প্রতিষ্ঠা করার পেছনে রাজনৈতিক স্বার্থ আছে।
উল্লেখ্য, আজ আখতার হোসেন ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষাথী নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে 'গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি' নামে নতুন রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের আত্মপ্রকাশ করে। সকাল ১১টায় ডাকসুর সামনে সংবাদ সম্মেলনে আত্মপ্রকাশের পর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পদযাত্রা করে দলটি। এরপরই হামলার ঘটনা ঘটে।
এসজে/আরইউ