শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪

নতুন স্পৃহা

বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ৫, ২০২৩
নতুন স্পৃহা

সৈয়দ আশিকুজ্জামান আশিক:

শিক্ষকতা একটি মহৎ পেশা যা শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে আসে। শিক্ষকরা শুধুমাত্র শিক্ষাদান এবং জ্ঞান প্রদান করেন না বরং শিক্ষার্থীদের জীবনের জন্য অনুপ্রাণিত ও অনুপ্রাণিত করেন এবং জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে এবং তাদের সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য কাজ করে চলেছে। সকল শিক্ষককে বিশ্ব শিক্ষক দিবসের শুভেচ্ছা!

আমার শখ লেখালেখি করা । ২০০৭ ও ২০০৮ সালে অতিরিক্ত পরিমানে লেখার কারনে অমনযোগিতা সৃষ্টি হয়। ফলে ২০০৯ সালে এসএসসি পরিক্ষায় মাত্র ৩.১৯ পেয়ে উত্তীর্ন হই। রেজাল্ট হওয়ার দিন থেকে আমার মধ্যে হতাশা কাজ করত। আমার আব্বু-আম্মু পূর্বের ভালো পড়ালেখার কথা বিবেচনা করে ভবিষ্যতে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করতে সহায়ক হয়, সেজন্য ডিপ্লোমা ইন ফার্মেসিতে, আইএমটি ঢাকাতে ভর্তি করে দেন। পরিবারের সবারই চাওয়া যেন উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারি । আমি ও তাই চাইতাম । কিন্তু অনেক হতাশা কাজ করত । ২০১০ সালে ডিপ্লোমা ইন ফার্মেসির প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হয়। ৬ মাস সেশনজটের কারনে প্রথম বর্ষের চুড়ান্ত পরীক্ষা ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার পর দ্বিতীয় বর্ষের ক্লাস
শুরু হয়, নতুন বিষয় এবং নতুন শিক্ষক। তারপরও খুব একটা ভালো লাগত না। পড়ালেখা করতাম শুধু মাত্র পাস করার মতো ইচ্ছা আছে কিন্তু তেমন কোন স্পৃহা নেই। ২০১২ সালের প্রথম দিন থেকে ফার্মাকোলজি ও ফার্মাসিউটিকস পাঠ দেয়া শুরু করেন মোঃ এনামুল হক স্যার। বর্তমানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক; ফার্মেসি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান। উচ্চ শিক্ষা ছুটিতে এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থাইল্যান্ডে, পিএইচডি করছেন। স্যারের কথাবার্তা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পাঠদান, সবার সাথেই সহানুভূতিশীল আচরন, উচ্চশিক্ষার স্পৃহা, জার্নালগুলোতে গবেষণা এবং পর্যালোচনা নিবন্ধ প্রকাশ করার অভ্যাস সব কিছু আমাকে খুবই মুগ্ধ করে। মোঃ এনামুল হক স্যার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মেসিতে স্নাতক এবং মাস্টার্স করেন। জীবনের নতুন পাওয়া যেন স্যারের কাছ থেকে শুরু। নিজেকে নতুন করে
আবিষ্কার করা। পড়া কত সহজেই বুঝিয়ে দিত। পড়াশোনায় খুব একটা মনোযোগী ছিলাম না।

ক্লাসে যেতেও খুব একটা ভালো লাগতো না। কী হবে? যেতেই হবে তাই যাওয়া । মাঝে মাঝে ক্লাসে যেতেও হতো । স্যারের ক্লাসে নিয়মিত আছি। ভালো ফলাফল করতে না পারলেও স্যারের সব ক্লাসে অংশ গ্রহণ করতাম। ভালোই লাগত। নতুন স্পৃহার সৃষ্টি হয়ে গেল, ধীরে ধীরে পারব। কিছু দিন পর আবিষ্কার করলাম নতুন এক স্পৃহা আমার ভালো লাগছে। নিয়মিত পড়া লেখা করছি। আর কোন হতাশা কাজ করছেনা। প্রতিটি কাজেও অনেক শক্তি বেড়ে গেছে। যেন কিছু পাওয়ার ইচ্ছা । আমাকে জয় করতে হবে। স্যার নিয়মিত পড়া ধরতেন। নিয়মিত পড়তাম এবং পড়া দেওয়ার চেষ্টা করতাম । একদিন ক্লাসে পড়ানোর বললেন তুমি ক্লাসের সবার সামনে এসে পড়া বলবে। কনফিডেন্টলি বলবে । তাছাড়া তুমিতো পারবে । তখন আমার পড়া লেখার প্রতি আমার আগ্রহ বেড়ে গেল। সেদিন থেকে আমার স্যারের প্রতি ভালোবাসা শ্রদ্ধা অনেকাংশে বেড়ে গেল। চার মাস ক্লাস নেওয়ার পর মোঃ এনামুল হক স্যার সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক যোগ দেন। আমার নতুন স্পৃহার, আশা আকাঙ্খা, প্রেরনা, মনোযোগ সৃস্টির প্রধান পৃষ্টপোষক মোঃ এনামুল হক স্যার। একজন শক্তিশালী মানুষ নিজেকে বাঁচাতে পারে, একজন মহান মানুষ অন্যকে বাঁচাতে পারে। যার সব কিছু আমাকে উৎসাহ জুগিয়েছে নতুন চলার পথ। আরো নানা ঘটনায় মোঃ এনামুল হক স্যার হয়ে উঠেছেন আমার প্রিয় শিক্ষক।

লেখক: গবেষণা সহকারী, বায়োইনফরমেটিক্স রিসার্চ ল্যাব, সেন্টার ফর রিসার্চ
ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিআরআইডি), ঢাকা।


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল