ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরে মিঠাপানির বিলুপ্ত প্রায় একটি কুমির উদ্ধার করেছে বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা অঞ্চলের একটি উদ্ধারকারী দল। তিন ঘন্টা চেষ্টার পর স্থানীয়দের সহায়তায় কুমিরটি উদ্ধার করে বন বিভাগ।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে প্রায় ৩ ঘন্টার চেষ্টায় সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নের গজারিয়া এলাকার ভুবনেশ্বর নদ হতে কুমিরটি উদ্ধার করা হয়। কুমিরটি নিয়ে বিকেলেই উদ্ধারকারী দলটি সড়কপথে সুন্দরবনের করমজল বণ্যপ্রাণী উদ্ধার কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। উদ্ধারকৃত কুমিরটি প্রায় ৭ ফুট লম্বা।
গত বুধবার বিকেলে জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের শিকদার ডাঙ্গী গ্রামের ভুবনেশ্বর নদে প্রথম কুমিরটি দেখা যায়। পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে কয়েকবার কুমিরটি ভেসে ওঠে। এতে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকার মানুষকে সাবধান করে। সতর্ক করে বিভিন্ন মসজিদ থেকে মাইকিংও করা হয়।
পরে কুমিরটি ওই স্থান থেকে দুই কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নের গজারিয়ায় দেখা যায় রোববার।
কুমিরটি উদ্ধারে রোববার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে ফরিদপুর সদর উপজেলার পাটপাশা এলাকায় খুলনা থেকে পরিদর্শনে আসেন বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মৎস্য বিশেষজ্ঞ মফিজুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি দল।
তবে সেখানে কুমিরের কোন খোঁজ না পাওয়ায় তারা ফিরে যান। আজ মঙ্গলবার সকালে গজারিয়া ব্রিজের নিকট ভুবনেশ্বর নদে কুমিরটি দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা তাদের খবর দিলে পুনরায় বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মৎস্য বিশেষজ্ঞ মফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল আসেন। স্থানীয় জেলে ও সাধারণ মানুষের সহযোগিতায় তিন ঘন্টা চেষ্টার পর উদ্ধার করা হয় কুমিরটি।
বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মৎস্য বিশেষজ্ঞ মফিজুর রহমান জানান,
কুমিরটি প্রথমে সুন্দরবনের করমজল বণ্যপ্রাণী উদ্ধার কেন্দ্রে নেয়া হবে। পরে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ করে এব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২১ সালের ৯ আগস্ট ফরিদপুর সদরের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নে পদ্মা নদীর সাথে সংযুক্ত একটি খাঁড়ি বা খালে মিঠা পানির একটি কুমির পাওয়া গিয়েছিল। কুমিরটি সাত দিন ধরে ওই জলাধারে অবস্থান করেছিল। পরে সেটিকে ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে পাঠায় প্রাণী সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ।
এমআই