গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে টানা অষ্টম দিনের মতো বিক্ষোভ করছে। বিক্ষোভকারী শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিল্প পুলিশ, গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ এবং র্যাব সদস্যরা কাজ করছেন।
মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ছয়দানা, মালেকের বাড়ি, তেলিপাড়া, বোর্ড বাজার, ভোগড়া বাইপাস, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মৌচাক, শফিপুর এলাকার হাজার হাজার (নারী ও পুরুষ) শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
বিক্ষোভকারী শ্রমিকরা জানান, বর্তমান বাজারে খাদ্য পণ্যসহ সব ধরণের পণ্যের দাম বেড়েছে। তাদের যারা ৮হাজার টাকা বেতন পান সেই বেতনে বাসাভাড়াসহ জীবন বাচানোই দায়। তাই দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে সংগতি রেখে তাদের বেতন বাড়িয়ে ২৩ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে কয়েকশ’ পোশাক শ্রমিক ভোগড়া এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলসহ এসে বেশ কয়েকটি কারখানায় হামলা চালায়। এর মধ্যে ভোগড়া বাসন সড়ক এলাকায় সাংওয়াং কারখানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। শ্রমিকরা ওই কারখানার প্রধান ফটক ভেঙে ভিতরে ঢুকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর চালায়। পরে তারা আলেমা ও মিম ডিজাইনে হামলা চালাতে গেলে কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের ছুটি দিয়ে দেয়।
অপরদিকে বাসন চান্দপাড়া এলাকায় নিডলড্রপ পোশাক কারখানাতেও শ্রমিকরা ভাঙচুর করে। পরে তারা মিছিলসহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উঠে বোর্ডবাজারের দিকে যায়। সেখানে তারা রাস্তায় ব্যারিকেট দিয়ে যানচলাচল বন্ধ করে দেয়। চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বাঁশ ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। পরে বিজিবি ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাঁশ সরিয়ে নেয়। উত্তেজিত শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নিতে রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস ছুড়লে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পরে।
এ বিষয়ে বাসন থানার ওসি আবু সিদ্দিক বলেন, শ্রমিকরা সড়কে বিক্ষোভ করছে। তারা যেন জানমালের কোনো প্রকার ক্ষয়-ক্ষতি করতে না পারে সেদিকে দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের এএসপি মোশারফ হোসেন জানান, সকাল থেকে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছে। যে কোন বিশৃংখলা রোধে শিল্প পুলিশ কাজ করছে।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, পোশাক শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণ করতে বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শ্রমিকদের ভাংচুর না করে শান্ত থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সোমবার পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ, রাসেল হাওলাদার নামে একজন শ্রমিক নিহত ও অর্ধশতাধিক শ্রমিক আহত হয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কোনাবাড়ি এলাকায় একটি ফ্যাক্টরিসহ পুলিশ বক্স, বাস ও একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় এবং কয়েকটি কারখানাসহ বহু গাড়ি ভাংচুর ও মহাসড়ক অবরোধ করে। ওই আন্দোলন চলে রাত পর্যন্ত। ফলে শ্রমিক আন্দোলনে অগ্নিগর্ভ হয়ে যায়।
এসজে/আরইউ