মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

চৌদ্দগ্রামে মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারির নামে ৮ লক্ষ টাকা ঋণ তুলে দপ্তরী উধাও

মঙ্গলবার, নভেম্বর ১৪, ২০২৩
চৌদ্দগ্রামে মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারির নামে ৮ লক্ষ টাকা ঋণ তুলে দপ্তরী উধাও

মোঃ এমদাদ উল্যাহ, চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা:

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের খিরনশাল ইসলামিয়া ফাযিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার দপ্তরী আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও দুই শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করে জনতা ব্যাংক থেকে আট লক্ষ টাকার ঋন উত্তোলণ করে উধাও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত দপ্তরী আবদুর রহমান মাদরাসার সিংরাইশ গ্রামের আবদুল কাদেরের ছেলে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা আতœসাৎ করারও অভিযোগ রয়েছে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দপ্তরী আব্দুর রহমান ২০১০ সালে খিরনশাল ইসলামিয়া ফাযিল মাদরাসায় যোগদান করেন। যোগদানের পরে তিনি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমানের কাছের লোক হয়ে উঠেন। আব্দুর রহমানকে অধ্যক্ষ মাদরাসায় ক্যান্টিন বসিয়ে চাকুরীর পাশাপাশি ব্যবসার সুযোগ করে দেন। আস্থাভাজন হওয়ায় অগ্রীম স্বাক্ষর নিয়ে শিক্ষকদের বেতন উত্তোলণ, মাদ্রাসার কম্পিউটার ব্যবহার, বিভিন্ন আলমিরা ব্যবহার করতো আব্দুর রহমান। 

মাদরাসার বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষের অবর্তমানে আব্দুর রহমানই সর্বসেবা। এই সুযোগে তিনি অধ্যক্ষের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে জনতা ব্যাংক, চৌদ্দগ্রাম শাখা থেকে শিক্ষক আবদুল হান্নানের নামে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারী ৪ লক্ষ টাকা এবং কম্পিউটার অপারেটর মাছুমের নামে গত বছরের ২৩ অক্টোবর ৪ লক্ষ টাকার ঋণ উত্তোলণ করেন।

মাদরাসার ইংরেজী শিক্ষক আব্দুল হান্নান জানান, গত ১৫ দিন আগে আমি ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারি আমার নামে  ৪লক্ষ টাকার একটি ঋণ উত্তোলণ করা হয়েছে। অথচ আমি কোনভাবেই উক্ত ঋণ করি নাই। দপ্তরী আব্দুর রহমান কিভাবে কাগজপত্র তৈরি করে আমার নামে ঋণ নিয়েছে তা আমার জানা নেই। ইতোমধ্যেই আমি ব্যক্তিগতভাবে থানায় যোগাযোগ করেছি। বিজ্ঞ আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। একই অভিযোগ করেন মাদ্রাসার কম্পিউটার অপারেটর মাছুম। তার নামেও ৪ লক্ষ টাকার ভুয়া ঋণ উত্তোলণ করেছে আব্দুর রহমান।  

এ বিষয়ে জনতা ব্যাংক চৌদ্দগ্রাম শাখার তৎকালীন শাখা ব্যাবস্থাপক (বর্তমান কর্মস্থল-কুমিল্লা কোটবাড়ী গন্ধমতি শাখা ব্যবস্থাপক) মোমিনুল হক জানান, ‘যথাযথ নিয়ম মেনে ঋণ গ্রহীতাদের স্বাক্ষর যাচাই করে দুইজনের ঋণ অনুমোদন দিয়েছি। এতে কোন জাল জালিয়াতি হয়নি’। 

জনতা ব্যাংক চৌদ্দগ্রাম শাখার ব্যবস্থাপক মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, গত কিছুদিন আগে খিরনশাল মাদরাসার মাছুম নামীয় এক কর্মচারী জানান, তার ঋণের বিষয়ে সে জানেনা। একই অভিযোগ করেন মাদ্রাসার আরেক শিক্ষক আব্দুল হান্নান। মুলত; শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ঋন প্রদানের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানের প্রত্যায়ন, এমপ্লয়ি সার্টিফিকেট, এমপি’ও কপি, এমপি’ও ২ বছর পূর্ণ হওয়াসহ সকল শর্তাবলী মেনে ঋণ প্রদান করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এ দুটি ঋণ উত্তোলনের সময় আব্দুর রহমান ঋণের কাগজপত্রে গ্রাহকদের স্বাক্ষর জাল করেছেন এবং এ বিষয়ে তাকে ব্যাংকের একটি চক্র সহযোগীতা করেছেন। 

অভিযুক্ত আব্দুর রহমানের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে একাধিক দিন একাধিকবার কল করে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার পিতা আবদুল কাদের এবং ভগ্নিপতি আবদুল বারেক বলেন, গত ২৭ অক্টোবর থেকে আব্দুর রহমানের খোঁজ নেই। এখন পর্যন্ত নিখোঁজের কোন সাধারন ডায়েরী করেননি বলেও জানান তার বাবা।
এ বিষয়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমানের বক্তব্য জানতে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে মঙ্গলবার কল করলে আবদুর রহমানের বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে সরাসরি মাদরাসায় গিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক আবদুল হান্নান ও কর্মচারি মাসুম বিল্লাহসহ কথা বলবেন বলে জানান। তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ বন্ধ রাখতে অনুরোধ করেন’। 

মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনির হোসেন জানান, দপ্তরি আব্দুর রহমান একাধিক শিক্ষক কর্মচারীর নামে জালিয়াতি করে ব্যাংক থেকে ঋণের বিষয়ে গত মাসের শেষে কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্তের আলোকে মাদরাসা থেকে তাকে শোকজ করা হয়েছে। 
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার একেএম মীর হোসেন জানান, স্বাক্ষর জাল করে একাধিক শিক্ষক/কর্মারীর নামে ঋণ নেয়ার বিষয়টি আমি অধ্যক্ষের মাধ্যমে জেনেছি। ঋণের কাগজপত্রে অধ্যক্ষের স্বাক্ষর প্রমাণের বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। অধ্যক্ষ অভিযুক্ত পিয়ন আব্দুর রহমানকে শোকজ করেছেন বলে জানিয়েছেন। 

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল