এম.পলাশ শরীফ, বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ সুপার সাইক্লোন “ইয়াস” মোকাবিলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি, উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ৮৩টি সাইক্লোন শেল্টার, ১৮টি মেডিকেল টিম, ফায়ার সার্ভিস, স্বেচ্ছাসেবক টিম শুকনা খাবার, পানি বিশুদ্ধকরন ট্যাবলেট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সাবক্ষণিক যোগাযোগের জন্য খোলা হয়েছে কন্টোল রুম। বিকেল ৪ টায় মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা আসনের সংসদ সদস্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য এ্যাড. আমিরুল আলম মিলন জরুরী সভা করেছেন।
উপকূলীয় অঞ্চলের এ উপজেলাটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ কবলিত এলাকা সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত দুর্যোগ সিডর, আইলা, বুলবুল ও সর্বশেষ আম্পানের এক বছর যেতে না যেতেই নতুনভাবে ইয়াস মোকাবিলায় আতংকে রয়েছে। বিগত সুপার সাইক্লোন গুলোতে অতিরিক্ত জলোচ্ছাস হতাহত হয়েছে অনেকেই। আজও ভুলতে পারেনি সেই দিনের আতংকের কথা। এখন ঘুরে দাড়াতে পারেনি ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার পৌর সদরসহ ১৬টি ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী ইউনিয়নগুলো হচ্ছে পঞ্চকরণ, বহরবুনিয়া, বারইখালী, খাউলিয়া, হোগলাবুনিয়া, মোরেলগঞ্জ সদর, পুটিখালী, বলইবুনিয়া, তেলিগাতি। এছাড়াও সুন্দরন ঘেষা নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয়।
হুমকির মুখে রয়েছে পঞ্চকরনের নতুন বাজার, দেবরাজ এলাকার ১২শ’ মিটার ওয়াবদা ভেরিবাঁধ, পানগুছি নদীর গর্ভে ইতোমধ্যে এক কিলোমিটার রাস্তা বিলীন হয়েছে বলে ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার জানিয়েছেন।
এ ছাড়াও বহরবুনিয়ার ইউনিয়নের ফুলহাতা, ঘষিয়াখালী বাজার এলাকার অনেক কাঁচা পাকা রাস্তা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেলেও বাকি রাস্তাগুলো এখন হুমকির মুখে। মোড়েলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের গাবতলা এলাকার ভেরিবাঁধ না থাকার কারনে হুমকির মুখে গোটা গ্রাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে সাইক্লোন শেল্টারগুলো বলে চেয়ারম্যান মাহমুদ আলী জানিয়েছেন।
তেলিগাতি ইউনিয়নের হেড়মা, মিস্ত্রী ডাঙ্গা, নদীর তীরবর্তী বসতবাড়িঘর সহ রাস্তাঘাট হুমকির মুখে। সাইক্লোন শেল্টার না থাকায় জরুরী ভিত্তিতে সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করার দাবী ইউপি চেয়ারম্যান মোর্শেদা আক্তার।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল হোসেন মুফতি জানিয়েছেন ১৬টি ইউনিয়নে জরুরী ভিত্তিতে ১৬টি মেডিকেল টিম পৌরসভায় ১টি ও হাসপাতালে ১টি, মোট ১৮ টিমসহ ৫১ কমিউনিটি ক্লিনিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে ১৬০ মাঠ কর্মী ও হাসপাতাল কর্মীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
এ সর্ম্পকে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এ্যাড. শাহ-ই আলম বাচ্চু বলেন, সুপার সাইক্লোন ইয়াস মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলায় জরুরী সভায় প্রস্তাব রাখা হয়েছে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে আগে ভাগেই শুকনা খাবার, স্থানীয়ভাবে বিশুদ্ধ পানি বিশুদ্ধকরন ট্যাবলেট, সাইক্লোন শেল্টাগুলোতে সোলার প্যানেলগুলো সচল রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় প্রশাসনের নির্দেশনা মোতাবেক ইতোমধ্যে জুম মিটিং করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের জরুরী সভা হয়েছে। প্রস্তুতি রাখা হয়েছে ৮৩ সাইক্লোন শেল্টার ও ১৪৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাকা ভবন। বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী, গর্ভবর্তী মা, শিশু ও গবাদি পশু আগেভাগেই আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে যাওয়ার জন্য চেয়ারম্যানদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সময় জার্নাল/এসএ