বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪

চৌদ্দগ্রামে পোল্ট্রি ব্যবসায়ী ইব্রাহিম খলিলের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের দাবি

সোমবার, নভেম্বর ২০, ২০২৩
চৌদ্দগ্রামে পোল্ট্রি ব্যবসায়ী ইব্রাহিম খলিলের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের দাবি

মোঃ এমদাদ উল্যাহ, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের পোল্ট্রি ব্যবসায়ী ইব্রাহিম খলিলের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন স্বজনরা। সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে এ দাবি জানান স্ত্রী রাবেয়া আক্তার।

লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, গত ১০-১২ বছর ধরে ইব্রাহিম খলিলের সাথে সম্পত্তি নিয়ে প্রতিবেশী রফিকুল ইসলাম, শাহ আলম ও মীর হোসেন গংয়ের সাথে বিরোধ রয়েছে। এ নিয়ে আদালতে উভয়পক্ষের মামলা চলছে। মামলা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে দীর্ঘদিন ধরে রফিকুল ইসলাম গং ইব্রাহিম খলিলকে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল।

এরই মধ্যে ১০ নভেম্বর শুক্রবার রাত আনুমানিক ১টায় শিবের বাজার এলাকায় ভাতিজা মোঃ হাসানের বৌ-ভাতের রান্নার অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফিরে ইব্রাহিম খলিল বলে, ‘যে জমি নিয়ে বিরোধ সেখানে রফিকুল ইসলামসহ ৫-৬ জন লোক ঘুরাঘুরি করতেছে। আমাকে সেখানে যেতে হবে। এ কথা বলে ইব্রাহিম খলিল প্রতিদিনের মতো মাছ ধরতে বের হয়ে যায়’। পরদিন ১১ নভেম্বর শনিবার ভোর ৬টায় শিবপুর গ্রামস্থ আমাদের নিজস্ব ধানের জমিতে ইব্রাহিম খলিলের লাশ দেখতে পেয়ে হাছিনা আক্তার আমাদেরকে জানায়। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি-ইব্রাহিম খলিলের লাশ উপুড় হয়ে পড়ে আছে। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যাই।

পরে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসককে খবর দিয়ে বাড়িতে নিয়ে গেলে তিনি ইব্রাহিম খলিলকে মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ আমাদের বাড়ি থেকে ইব্রাহিম খলিলের লাশ উদ্ধার শেষে থানায় নিয়ে যায়। আশঙ্কা প্রকাশ করতেছি, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ইব্রাহিম খলিলকে রফিকুল ইসলাম গং পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ জমিতে রেখে যায়। 

এছাড়া চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ যখন ইব্রাহিম খলিলের লাশ উদ্ধার করতে বাড়িতে পৌঁছে তখনই সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ থাকা রফিকুল ইসলাম গং এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। অদ্যাবধি পর্যন্ত তাকে এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। এছাড়াও চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ইব্রাহিম খলিল বাদি হয়ে পাশ^বর্তী আবুল হাসেম, তাঁর ছেলে হুমায়ন কবির, মৃত আবদুল মমিনের ছেলে শাহ আলম মিয়া, জহির মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিল।

রাবেয়া আক্তার আরও উল্লেখ করেন, লাশ উদ্ধার শেষে থানা পুলিশ তাকে চৌদ্দগ্রাম থানায় নিয়ে যায় এবং একটি লিখিত কাগজে স্বাক্ষর করতে বলে। স্বামীর মৃত্যুর শোকে কাতর থাকায় থানায় তৈরি করে দেওয়া লিখিত কাগজটি পড়ে দেখেনি। সে কাগজে স্বাক্ষর করে। পরবর্তীতে জানতে পারে, তার স্বামীর মৃত্যু নিয়ে অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড  হয়েছে। তার স্বামীর অপমৃত্যু হয়নি। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সরকার, আদালত ও পিবিআইসহ প্রশাসনের নিকট তিনি ইব্রাহিম খলিলের মৃত্যুর ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তিদের আইনের কাটগড়ায় দাঁড় করার আহবান জানান।  

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইব্রাহিম খলিলের মা অজিফা বেগম, ছোট ভাই রোমান উদ্দিন, বোন আলেয়া আক্তার, ভাবি মনোয়ারা বেগম, রোজিনা বেগম, রুবি আক্তার, সীমা আক্তার, নৌশিন শাওন, শ^াশুড়ি আনোয়ারা বেগম, শ্যালক সোহেল, জালাল মিয়াসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। 
এ ব্যাপারে রফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে(০১৬১৪৭০১৬০৪) একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। তবে তাঁর ভাই বাচ্চু মিয়া বলেন, রফিকুল ইসলাম কিংবা আমাদের পরিবারের সাথে ইব্রাহিম খলিলের পরিবারের সম্পত্তি নিয়ে কোন বিরোধ নেই। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের কোন অভিযোগ নেই, কিংবা তারাও আমাদের বিরুদ্ধে কোথাও কোন অভিযোগ করেনি’।   

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ত্রিনাথ সাহা সাংবাদিকদের বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা লাশ উদ্ধার শেষে থানায় নিয়ে আসি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে প্রেরণের আগে তার স্ত্রী রাবেয়া আক্তার এবং স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ ২০-২৫ জন লোক এসে আমাকে অনুরোধ করে, বিনা ময়নাতদন্তে লাশটা পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে। স্ত্রী রাবেয়া আক্তার বলে, আমার স্বামীর মৃত্যু নিয়ে কোন অভিযোগ নেই। তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই।

তাহলে আপনারা কেন লাশ ময়নাতদন্ত করবেন। তখন তিনি নিজে বাদি হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেন। আমি নিয়ম অনুযায়ী লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। সেখানে যদি হত্যার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে অপমৃত্যু মামলাটি নিয়মিত মামলা হিসেবে পরিণত হবে’।
 
সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল