আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইহুদ বারাক বলেছেন, আল-শিফা হাসপাতালের নিচে যে বাঙ্কারগুলো রয়েছে, সেগুলো নির্মাণ করেছিল ইসরাইলই। ইসরাইলি ঠিকাদারদের ওই বাঙ্কারগুলোই পরে হামাস ব্যবহার করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মান্টিন্যাশনাল নিউজ চ্যানেল সিএনএন-এ ক্রিস্টিয়ান আমানপুরকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন ইহুদ বারাক। উল্লেখ্য, আল-শিফা হাসপাতালে বলপূর্বক প্রবেশের পর ইসরাইলি সামরিক বাহিনী দাবি করে আসছে যে হামাস এই হাসপাতালটিকে সামরিক প্রয়োজনে ব্যবহার করছে এবং তারা এর নিচে সুড়ঙ্গ ও বাঙ্কার নির্মাণ করেছে।
কিন্তু ইহুদ বারাক বলেন, 'আমার ক্ষমতায় থাকার সময় ভালোভাবেই জানা ছিল যে, আল-শিফার নিচে ইসরাইল ঠিকাদারেরাই প্রথমে বাঙ্কার নির্মাণ করেছিল। এগুলোই হামাস কমান্ড পোস্ট হিসেবে ব্যবহার করেছে। আর এই ব্যবস্থার আওতায় বেশ কয়েকটি সুড়ঙ্গও ছিল।'
তিনি বলেন, 'সম্ভবত এটিই সম্ভবত এ ধরনের কমান্ড পোস্ট নয়। অন্যান্য হাসপাতাল এবং স্পর্শকাতর স্থানগুলোতেও আরো কয়েকটি এ ধরনের ব্যবস্থা আছে। তবে তবে নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, এই সঙ্ঘাতের সময়ও হামাস এগুলো ব্যবহার করেছে।
উল্লেখ্য, ইসরাইল ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে মিসরের কাছ থেকে গাজা দখল করে নেয়। এলাকাটি ২০০৫ সাল পর্যন্ত ইসরাইলি পূর্ণ সামরিক দখলদারিত্বের আওতায় ছিল। ওই সময়ে তারা এখন থেকে বসতি স্থাপনকারী এবং সৈন্যদের প্রত্যাহার করে নেয়। এই পদক্ষেপটি 'প্রত্যাহার প্রক্রিয়া' হিসেবে পরিচিতি পায়। এর দুই বছর পর হামাস উপত্যকাটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে।
ইহুদ বারাক বলেন, 'সম্ভবত চার থেকে পাঁচ দশক আগে এই কম্পাউন্ডের একেবারে সীমিত আকারের মধ্যে হাসপাতালটি যাতে কার্যক্রম চালানোর জন্য আরো জায়গা পায়, সেজন্য ফিলিস্তিনিদের সহায়তা করার জন্য আমরা এসব বাঙ্কার নির্মাণ করেছিলাম।
উল্লেখ্য, সাবেক ইসরাইলি জেনারেল ইহুদ বারাক ছিলেন ইসরাইলি দশম প্রধানমন্ত্রী। তিনি ১৯৯৯ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি ১৯৯৭ থেকে ২০০১ পর্যন্ত লেবার পার্টির নেতা ছিলেন। এরপর ২০০৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত একই পদে ছিলেন।
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সোমবার বলেছে, গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলীয় একটি হাসপাতালে ইসরাইলি হামলার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর রেডক্রসের সহায়তায় সেখান থেকে ২ শ’ রোগীকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। হাসপাতালটিতে ইসরাইলি হামলায় ১২ জন নিহত হয়।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা এএফপি’কে বলেন, জাবালিয়ায় অবস্থিত ইন্দোনেশীয় ঐ হাসপাতাল থেকে ইতোমধ্যে ২ শ’ জনকে উদ্ধার করে বাস যোগে দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরের নাসের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
তিনি বলেন, জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের কাছে অবস্থিত ১৪০ বেডের এই হাসাপাতাল থেকে রোগীদের সরিয়ে নেয়ার কাজ আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির সাথে সমন্বয় করে হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এখনো হাসপাতালটিতে ৪ শ’ রোগী রয়েছে। আমরা এসব রোগীকে সরিয়ে নিতে আইসিআরসি’র সাথে কাজ করছি।’
এই হাসপাতালের আশপাশে গৃহহীন হয়ে পড়া প্রায় ২ হাজার মানুষ রয়েছে বলেও তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন।
সময় জার্নাল/এলআর