সময় জার্নাল ডেস্ক:
শীতের হরেক রকম সবজিতে ভরে উঠেছে বাজার। এরপরও কোনোভাবেই নাগালে আসছে না দাম। বিশেষ করে টমেটোর বাজারে দেখা গেছে আগুন। মাসখানেক আগে বেশির ভাগ সবজির দর ছিল ৭০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। কোনোটির দাম দেড়শ টাকাও ছুঁয়েছিল। শুক্রবার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৪০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে মিলছে অধিকাংশ সবজি। যদিও শীতকালে সবজির দাম আরও কম থাকে।
শুক্রবার বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি টমেটো কিনতে ভোক্তাকে খরচ করতে হচ্ছে ১৪০ টাকা। অন্যান্য সবজিও ৪০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে আগে থেকে বেড়ে যাওয়া চাল-আটা, চিনি, ডালসহ কয়েকটি নিত্যপণ্য এখনও উচ্চমূল্যে স্থির হয়ে আছে। নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক এই দামে সীমাহীন কষ্টে স্বল্প আয়ের মানুষ।
আজ বাজারে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকায়, ধুন্দল ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ টাকা, লেবুর হালি ২০ থেকে ৪০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ২০০ টাকা, কলার হালি ২০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া কাঁচা মরিচ ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি মুলা ৩০ টাকা, শিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুরমুখী ৭০ টাকা ও গাজর ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৩০ টাকা, মুলা শাক ১০ টাকা, পালং শাক ১৫ টাকা, কলমি শাক ৮ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা জনান, সবজির কেজিতে পাইকারি দরের চেয়ে ১৫ থেকে ২০ টাকার ব্যবধান থাকছে খুচরা বাজারে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, সবজি পচনশীল পণ্য। পরিবহন ও অন্যান্য খরচের সঙ্গে মুনাফা হিসাব করলে ১০ থেকে ১৫ টাকা ব্যবধান থাকবেই। তালতলা কাঁচাবাজারের সবজি ব্যবসায়ীরা বলেন, পাইকারি বাজার থেকে কেনার পর কিছু সবজি পচে যায়। ভ্যান ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ হিসাব করে খুচরা ব্যবসায়ীদের বিক্রি করতে হয়।
এদিকে চলতি বছর বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে আলু। দুই মাস আগে সরকার খুচরা পর্যায়ে আলুর কেজি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা বেঁধে দিলেও তা কার্যকর হয়নি। অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণে সরকার বাজার তদারকি ও আমদানির উদ্যোগ নেয়।
ভারত থেকে আলু আমদানির পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি বাজার। খুচরা পর্যায়ে এখনও ৫০ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে সবজি জাতীয় এ খাদ্যপণ্যটি। যেখানে এক বছর আগে আলুর কেজি ছিল ২২ থেকে ২৫ টাকা। পুরোনো আলুর পাশাপাশি নতুন আলু দেখা গেছে বাজারে। তবে দাম আকাশচুম্বী। প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা দরে।
ওদিকে চলতি বছরের আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। কিন্তু চালের বাজারে সেই প্রভাব দেখা যায়নি। মাসখানেক আগে সব ধরনের চালের দর বেড়েছিল। এখনও সেই দরেই বিক্রি হচ্ছে। মান ও বাজারভেদে মোটা চালের কেজি ৫০ থেকে ৫৪, মাঝারি চাল ৫৫ থেকে ৬০ এবং সরু চালের কেজি ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একই চিত্র রয়েছে আটার বাজারে।
দুই সপ্তাহ ধরে আবারও অস্থির চিনির বাজার। খুচরা দর ১৩০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও খোলা চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়। তবে প্যাকেট চিনি কোথাও বিক্রি হতে দেখা যায়নি।
ভারত রপ্তানি মূল্য বেঁধে দেয়ার পর দেশের বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম হু হু করে বেড়ে ১১০ থেকে ১২০ টাকা উঠেছিল। তবে ২০ টাকার মতো দাম কমে এখন ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে ১৪০ টাকায় বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজের দাম কমে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকার আশপাশে।
এদিকে মাছের দামও নাগালের বাইরে রয়েছে। বাজারে ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছের কেজি ৯০০ টাকা, শিং মাছ (আকারভেদে) ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, রুইয়ের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, মাগুর ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা, মৃগেল ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, পাঙাশ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে।
সময় জার্নাল/এলআর