গোলাম আজম খান, কক্সবাজার: কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে আজ সকালে থেকে থেমে থেমে ঝড়ো হাওয়া বইছে। বৈরী পরিবেশে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতও ফাঁকা, উত্তাল সৈকতে ওড়ানো হচ্ছে লাল নিশানা। দুপুরে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। সমুদ্র সৈকতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের কয়েক ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এ ছাড়া জোয়ারের পানি ঢুকে মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া ও কক্সবাজার সদরের গোমাতলি,চৌফলন্দীসহ বেশকিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (২৫ মে) সকাল থেকে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে আঘাত হানছে জিও ব্যাগে। আবার অনেক সময় পানি জিও ব্যাগ ডিঙিয়ে আঘাত করছে ঝাউবিথী ও টুরিস্ট পুলিশের বক্সে। এদিকে সৈকতে মানুষজন যাতে নামতে না পারে তার জন্য দায়িত্ব পালন করছে লাইফ গার্ড কর্মী ও টুরিস্ট পুলিশ।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কক্সবাজারকে তিন নম্বর সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে ইয়াসের প্রভাবে কক্সবাজারে বাতাসের গতিবেগ যেমন বেড়েছে, ঠিক তেমনি ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। আর সাগরের পানির উচ্চতা ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী দুই একদিন এই অবস্থা বিরাজ করবে। এছাড়া উচ্চ জোয়ারের কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সী সেইভ লাইফ গার্ডের ইনচার্জ সাইফুল্লাহ সিফাত বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। উচ্চ জোয়ারে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ঝাউবিথীতে আঘাত হানছে। এতে গত দুইদিনে প্রায় দুই শতাধিক ঝাউগাছ উপড়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে টুরিস্ট পুলিশের উপ পরিদর্শক ইয়ার হোসেন বলেন, এই ধরনের জোয়ার আগে দেখিনি। জোয়ারের পানি টুরিস্ট পুলিশ বক্সে আঘাত করছে। জিও ব্যাগও ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তবে সাগরের কেউ যাতে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য সজাগ রয়েছে পুলিশ।
সেন্টমার্টিন ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হাবিব খান জানিয়েছেন, গত সোমবার সকাল থেকে বঙ্গোপসাগর প্রচণ্ড উত্তাল। জোয়ারের ধাক্কায় দ্বীপের উত্তর ও পশ্চিম ও পুর্বদিকের জেটি ঘাটসহ সৈকতের বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙে যাচ্ছে। এর সাথে জড়ো হাওয়া বহিয়ে যাচ্ছে। দ্বীপে বসবাসরত বাসিন্দারা ভয়ে আতংকিত হয়ে পড়েছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন সুত্র জানায়, উপকূলের ১০ লাখ মানুষকে সরিয়ে আনার প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। প্রস্তুত ৫৭৬ টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র সহ অন্তত এক হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বহুতল। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার মজুদ রাখা হয়েছে।
সময় জার্নাল/এমআই