বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

নরসিংদী জেলখানা মোড়ে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি

বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ৭, ২০২৩
নরসিংদী জেলখানা মোড়ে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি

সাইফুল ইসলাম রুদ্র, নরসিংদী জেলা প্রতিনিধিঃ

নরসিংদী জেলখানা মোড়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কিছু অসাধু ট্রাফিক পুলিশের সাথে সু-সম্পর্ক রেখে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করছে কতিপয় দালাল। 

বৃহস্পতিবার (০৭ ডিসেম্বর) সকাল ৮ টা থেকে শুরু হয় বিভিন্ন লোকাল পরিবহন থেকে চাঁদাবাজি।  দেখা যায়, বিভিন্ন লোকাল বাস থেকে ২০/- টাকা করে চাঁদা নিচ্ছে মফিজ।  পরে জেলখানা মোড়ে মসজিদের কোনায় একটি ফ্ল্যাক্সিলোডের দোকানে দেখা যায় ট্রাফিক পুলিশের সাথে মফিজের ভাগ-বাটোয়ারা চলছে। একপর্যায়ে গণমাধ্যমকর্মীর উপস্থিতি টের পেয়ে ট্রাফিক পুলিশের বুকে থাকা নেমপ্লেট খুলে চলে যায়। 

তাকে এই চাঁদাবাজির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশ অনুযায়ী প্রতিনিয়ত এখানে টাকা উঠানো হয়। যেহেতু আমরা নি¤œস্তরের কর্মকর্তা আমরা এই বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।

এদিকে চলনবিল বাসের এক চালক মো. আল-আমিন সংবাদকর্মীকে জানান, এই জেলখানা মোড়ে প্রতিদিন প্রতি সিংগেল বাবদ ২০/- টাকা করে দিতে হয় এই দালালদের। না দিলে বিভিন্ন ট্রাফিক পুলিশ দিয়ে হয়রানী করে। তাই হয়রানী থেকে বাঁচতে আমরা এই চাঁদা দিয়ে যাচ্ছি।

অপরদিকে ভৈরব যাওয়ার পথে এক বাস চালক খোরশেদ আলম অভিযোগ করে বলেন, এখানে ২০/- টাকা করে চাঁদা না দিলে গাড়ি দাড়িয়ে রাখতে দেয় না। কিন্তুু ট্রাফিক পুলিশরা সরাসরি এই টাকা নেয় না। তারা বিভিন্ন মাধ্যমে টাকা নিয়ে থাকে।
এদিকে কলজে ছাত্র মোঃ শাহীনুর মিয়া জানান, আমি প্রতিদিন শিবপুর থেকে নরসিংদী সরকারী কলেজে যাতায়ত করে থাকি। যেহেতু আমি লোকাল বাসের মাধ্যমে যাতায়ত করে থাকি প্রায় সময়ই দেখি, কিছু অসাধু ট্রাফিক পুলিশ সাথে দালালদের মাধ্যমে বাসের হেল্পার ও ড্রাইভারদের নিকট থেকে চাঁদা নেওয়া হয়।

চায়ের দোকানদার সংবাদকর্মীদের জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ এভাবেই ২০/- টাকা করে চাঁদা উঠাচ্ছে এই মফিজ। এমনকি কোনো গাড়ি আটক করলে তার মাধ্যমে লেনদেন করেও গাড়ি ছাড়ানো হচ্ছে। মফিজের সাথে ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সংযোগ রয়েছে। যার ফলে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ কাজে আসে না।

জেলখানা মোড়ের এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, তিনি এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। টিআই-১ এর নিকট যোগাযোগ করার জন্য বলেন তিনি। সংবাদকর্মীদেরকে আপ্যায়ন করার জন্য জোর জুলুম করেন। একপর্যায়ে সংবাদকর্মীদেরকে তিনি ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন এবং জানান, এটি একটি ছোট কাজ এটি নিয়ে মাথা না ঘামালেও চলবে।

এদিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পিক-আপ চালক আশরাফ মিয়া বলেন, আমাদের প্রতি গাড়িই মাসিকভাবে ট্রাফিক পুলিশের সাথে চুক্তি করা আছে। তাই আমাদের গাড়ি যদি ভুলেও আটক করা হয় তাহলে ঐ ট্রাফিক পুলিশের নাম বললেই আমাদের গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়।

জেলখানা মোড়সহ নরসিংদীর বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের চাঁদাবাজির মহোৎসব চলছে বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। এসব পয়েন্টে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্বরত কিছু অসৎ কর্মকর্তা ফ্রিস্টাইলে চাঁদাবাজি করছেন। ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনের কাগজপত্র দেখার নামে ট্রাফিক পুলিশ ও সার্জেন্টদের দিয়ে গাড়ি আটকের পর মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে দালালদের মাধ্যমে। আর এ চাঁদাবাজি প্রকাশ্যে দিনের বেলায় বেশি হচ্ছে। ব্যস্ততম এলাকার যানজট নিরসনের পরিবর্তে ট্রাফিক ও সার্জেন্টদের চাঁদাবাজির কারণে জ্যাম আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।

এবিষয়ে নরসিংদী জেলার ট্রাফিক পুলিশের প্রধান শাখাওয়াত হোসেন গণমাধ্যমকর্মীদেরকে জানান, এ বিষয়টি তিনি অবগত নয়। মালিক সমিতি নিয়ে কিছুদিন পূর্বেও একটি প্রোগ্রাম করা হয়েছে জেলখানা মোড়ে। যদি কেউ ট্রাফিক-পুলিশের নামে চাঁদাবাজি করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল