মো. জাহিদুল হক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) ২৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে উদযাপিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু ভবনের সামনে থেকে এক র্যালির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কার্যক্রম শুরু হয়।
র্যালিটি জয় বাংলা চত্বর প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এসময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিরাজ দৌলাহ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নূরুল আজিম সিকদার, চবিসাসের সভাপতি মাহবুব এ রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু সহ চবিসাসের সাবেক ও বর্তমান সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
র্যালি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বেলুন উড়িয়ে ও কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করেন।
এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। এতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহাব উদ্দিন নীপু সাইবার নিরাপত্তা আইন'২৩: সাংবাদিকতায় নেতিবাচক প্রভাব ও করণীয় শিরোনামে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির ২৭ বছর পূর্ণ হয়েছে। সমিতির সাবেক নেতৃবৃন্দ এসে উপস্থিত হওয়ায় দেখে ভালো লাগছে। সাংবাদিক সমিতি ৬ জন দিয়ে শুরু হয়েছিল। আজ তা ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে। সাংবাদিকেরা জাতির বিবেক। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবকিছুই জাতির সম্মুখে তুলে ধরেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে সংবাদ পরিবেশনে বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রেখে চলতে হবে। আমাদের খারাপ কাজ কতটুকু হয়েছে জানিনা কিন্তু ভালো কাজের নিদর্শনও কম নাই। ব্যক্তিকে অপছন্দ করলেও বিশ্ববিদ্যালয় তোমাদের। তাই ইতিবাচক লেখাগুলো তুলে ধরবে বলে বিশ্বাস রাখি।
চবিসাসের সাবেক সভাপতি আসহাবুর রহমান শোয়েব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা করতে অনেক সাংবাদিকের রক্ত ঝরেছে। যা অন্যকোনো সংগঠনের ক্ষেত্রে ঘটে না। কিন্তু আমাদের উপাচার্য ইতিবাচক চিন্তা করে সংবাদ করার কথা বলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম হিসেবে ইতিবাচক কিছু ঘটবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে নেতিবাচক কিছু ঘটলে তা খুঁজে বের করাই সাংবাদিকদের মূল কাজ। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত হচ্ছে সাংবাদিকদের প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা না করে সহকারী হিসেবে বিবেচনা করবেন। এতেই সাংবাদিকদের থেকে ইতিবাচক সহযোগিতা পাবেন। সাংবাদিকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল অনিয়ম তুলে ধরবেন এটাই ইতিবাচকতা। কিন্তু প্রশাসনের সামনে একজন শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করা হলেও তাঁরা লিখিত অভিযোগের নামে সময়ক্ষেপণ করেন। এতে দোষীরা চাপ সৃষ্টি করার সুযোগ পেয়ে যান।
চুয়েট সাংবাদিক সমিতির সভাপতি বলেন, চবিসাসের প্রতি আমাদের ভালোবাসা থাকায় আজকে এখানে ছুটে এসেছি। চবিসাসের সাংবাদিকদের উপর নির্যাতন নিপীড়নের প্রতিবাদ যেন চুয়েট থেকেই আসে সেজন্য আমরা সবসময়ই আন্তরিক।
চবিসাসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের চৌধুরী বলেন, সারাদেশে সাংবাদিকতার একটা বিরাট সংকট দেখা যাচ্ছে। এতো বেশি প্রতিযোগিতার মধ্যে পেশা হিসেবে এতে বিরাট সংকট তৈরী হয়েছে। দেশের ভালো সাংবাদিকেরা ক্যাম্পাস থেকেই বেড়ে উঠেন। এই সংকট যেন কেটে উঠে তা আমরা দেখতে চাই।
চবিসাসের সাবেক সভাপতি হুমায়ুন মাসুদ বলেন, সাংবাদিকরা কখনো হলুদ সাংবাদিকতা করেন না। যারা হলুদ সাংবাদিকতা করেন তারা সাংবাদিক না। ক্যাম্পাসের ক্ষেত্রে হলুদ সাংবাদিকতা কখনোই করার সুযোগ নাই। এই সাংবাদিক সমিতিই বিশ্ববিদ্যালয়কে গত ২৭ বছর ধরে বিশ্বের সামনে ব্রান্ডিং করে যাচ্ছে যা আর কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন করতে পারেনি।
এমআই