আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজায় অসংখ্য ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হলেও প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মিথ্যা বলছেন বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার ল্যাপিড।
নেতানিয়াহুকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সৈন্যদের হত্যার সময় অবিরাম মিথ্যাচার এবং দায়িত্ব এড়ানোর জন্য অভিযুক্ত করেন ল্যাপিড।
বুধবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ ইসরায়েলের বিরোধী দলীয় এই নেতা বলেন, নেতানিয়াহু তার সারাজীবন ধরে উস্কানি দেওয়া, মিথ্যা বলা এবং ঘৃণা তৈরি করার কাজ করেছেন। এখনও তাই করে যাচ্ছেন।
ইয়ার ল্যাপিড বলেন, এখনও নেতানিয়াহু মিথ্যা বলে যাচ্ছেন, যখন ভয়াবহ একটি যুদ্ধে ইসরায়েলি সৈন্যরা প্রতিদিন মারা যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, গাজায় যখন ইসরায়েলি সৈন্যরা মরছে তখন নেতানিয়াহু আবারও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে, আমার সঙ্গে এবং [যুদ্ধ মন্ত্রিসভার মন্ত্রীদের মধ্যে] বেনি গ্যান্টজ ও গাদি আইসেনকোটের সঙ্গে বিরোধের সূত্রপাত করছেন।
নেতানিয়াহু অবরুদ্ধ ভূখণ্ডে চলমান ইসরায়েলি যুদ্ধের সমাপ্তির পর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে গাজা উপত্যকা শাসন করার অনুমতি দেওয়ার মার্কিন প্রচেষ্টার বিরোধিতা করেন।
অপরদিকে মার্কিন কর্তৃপক্ষ চাইছে যে যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে গাজায় অবশ্যই একটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বা সরকার থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, গাজা উপত্যকার নিরপরাধ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের ওপর প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে গেলেও কোনো পশ্চিমা দেশ বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন পর্যন্ত তেলআবিবকে আগ্রাসন বন্ধ করার আহ্বান পর্যন্ত জানায়নি।
মঙ্গলবার ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৮ হাজার ৬০৮ জন।
গাজার সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শতকরা ৭০ ভাগ নারী ও শিশু।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে নজিরবিহীন সামরিক অভিযান চালায়। ওই অভিযানে ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে বন্দি করে। সেদিন থেকেই ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গাজায় ভয়াবহ রক্তাক্ত অভিযান শুরু করে যা এখন পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলছে।
ইসরায়েলে সামরিক অভিযানের বিষয়ে আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের মুখপাত্র খালেদ কাদোমি বলেন, ‘দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো নৃশংসতার জবাবে এই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা চাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর এবং আমাদের পবিত্র স্থাপনা আল-আকসায় ইসরায়েলি নৃশংসতা বন্ধে উদ্যোগ নেবে। এগুলোই হামাসের এই অভিযানের কারণ।’
সূত্র : আল-জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সি
এমআই