এম. পলাশ শরীফ, বাগেরহাট প্রতিনিধি :
একদিকে ইয়াস ও অপরদিকে পূর্ণিমার জোয়ার দুই মিলে বুধবার বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের পৌর সদর সহ উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
পৌর সদরের শহর রক্ষা বাঁধ উপচে ও উপজেলার বহরবুনিয়া সহ বিভিন্ন এলাকার ৩৫ কিলোমিটার কাচা-পাকা রাস্তা বেড়িভাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে গেছে কয়েকটি গ্রাম ফসলি জমি, এক হাজার মৎস্য ঘেরসহ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পরিবার। চালিতাবুনিয়া গ্রামের জিনিয়া (৪) বছরের এক শিশু জোয়ারের পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বুধবার সকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাড. আমিরুল আলম মিলন এলাকায় পরিদর্শন করেছেন।
খোজ নিয়ে জানাগেছে, ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে নদীর তীরবর্তী মোড়েলগঞ্জ পৌর সদর, বারইখালী, খাউলিয়া, বহরবুনিয়া, পুটিখালী, তেলিগাতি, পঞ্চকরণ, বলইবুনিয়া ইউনিয়ন। এসব এলাকার অধিকাংশ রাস্তা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ডুবে গেছে শত শত মৎস্য ঘের। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি।
১নং তেলিগাতী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোর্শেদা আক্তার, বারইখালী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান লাল, ১৫নং সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এইচএম মাহমুদ আলী, পঞ্চকরণ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দরু রাজ্জাক মজুমদার, খাউলিয়া ইউনিয়ন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন, বহরবুনিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান টিএম রিপন, বলইবুনিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী খান জানান, নদীগর্ভে তাদের প্রায় ২৫-৩০ কিমি. কাচা-পাকা রাস্তা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ন এলাকা। এ দুই ইউনিয়নের ৮ শ’ মিটার ওয়াপদা বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গেছে। মোড়েলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের গাবতলা, কাঠালতলা, খাউলিয়া, বহরবুনিয়া ও তেলিগাতী ইউনিয়নের প্রায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্ধী রয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রোকোনুজ্জামান জানান, নদীর তীরবর্তী সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে প্রায় ৮ শ’ লোক অবস্থান করছে। জোয়ারের পানিতে ক্ষয় ক্ষতির খোজ খবর নিয়ে নিরুপন করা হবে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় জানান, উপজেলার প্রায় সাড়ে ৩ শ’ ঘের সম্পূর্ণ ডুবে গিয়ে প্রাথমিকভাবে ৬ লাখ টাকার ক্ষতি স্বাধন হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে নদীর তীরবর্তী বহরবুনিয়া ইউনিয়নের। এদিকে বাস্তবে ঘের ডুবে গেছে কয়েক হাজার বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিফাত আল মারুফ জানান, লবনাক্ত জোয়ারের পানি দীর্ঘস্থায়ী হলে ফসলি জমির ক্ষতি হতে পারে। তবে চলতি মৌসুমে রোপা আউশের ১ শ’ হেক্টর বীজতলা ও ৫শ’ হেক্টর সবজি ক্ষেত রয়েছে বলে মাঠ পর্যায়ের এক উপ-সহকারী এক কৃষি কর্মকর্তা জানান। এলাকারা কৃষকরা জানান, জোয়ারের লবনাক্ত পানিতে রোপা আউশ ও সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ক্ষয় ক্ষতি ও যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। তবে সরকারিভাবে এখনো কোন বরাদ্ধ আসেনি বলে তিনি জানান।
বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. আমিরুল আলম মিলন উপজেলার গাবতলা সাইক্লোন সেল্টার, কুঠিবাড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন। খোঁজ-খবর নিয়েছে দুর্দশাগ্রস্থ অসহায় মানুষের। আশ^াস দিয়েছেন স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মানের।
এ সময় তার সাথে ছিলেন উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক এ্যাড. তাজিনুর রহমান পলাশ, সদর ইউনিয়নের নৌকা প্রতিকের মনোনীত প্রার্থী মো. হুমায়ুন কবির মোল্লা সহ অনেকে।
অপরদিকে ১৬ নং খাউলিয়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আলমঙ্গীর হোসেন পশুরবুনিয়া, বাবুয়ান, সন্ন্যাসী, চালিতাবুনিয়া, চিপা বারইখালী ও খাউলিয়া এলাকায় পানিবন্ধী এলাকার গিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছেন। #