মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে করা রিট খারিজ

বুধবার, মে ২৬, ২০২১
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে করা রিট খারিজ

সময় জার্নাল রিপোর্ট : ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ‘ত্রুটিপূর্ণ’ ফলাফল বাতিল করে সংশোধিত নতুন মেধা তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির নির্দেশনা চেয়ে করা রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

তবে রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, যদি কোনো শিক্ষার্থী তার ফলাফল ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বলে মনে করেন তবে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে আবেদন করতে পারবেন। মন্ত্রণালয় সাতদিনের মধ্যে তা খতিয়ে দেখে সমাধান করবে।

বৃহস্পতিবার (২৭ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই বিষয়ে করা রিট খারিজ করে এমন পর্যবেক্ষণ দেন।

এর আগে গত সোমবার (২৪ মে) এই রিটের শুনানি শেষ হয়। পরদিন মঙ্গলবার এ বিষয়ে আদেশ দেয়ার জন্য দিন ধার্যের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে জানা গেলেও পরে আজকের দিন ঠিক করেন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট ভার্চুয়াল বেঞ্চ।

ওইদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

এর আগে গত ১৯ মে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল ত্রুটিপূর্ণ দাবি করে তা সংশোধন সাপেক্ষে নতুন মেধা তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়েছে।

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করেন।

রিটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ও পরিচালক এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে বিবাদী করা হয়।

রিটে বলা হয়েছে, গত ৪ এপ্রিল প্রকাশিত ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা ফলাফলে অসংখ্য ভুল এবং বড় ধরনের অসঙ্গতি পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদফতর কর্তৃক গত ৭ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত ভর্তি পরীক্ষার নিয়ম অনুযায়ী একজন পরীক্ষার্থী কোনো মেডিকেল কলেজে ভর্তি থাকা অবস্থায় তিনি যদি দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন, তবে তার মোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৭ দশমিক ৫ নম্বর কর্তন করা হবে।

আবার কোনো পরীক্ষার্থী যদি গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে থাকেন, তাহলে তার ৫ নম্বর কাটা যাবে। কিন্তু প্রকাশিত ফলাফল থেকে দেখা যায়, অনেক পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রেই এই নিয়মটি পালন করা হয়নি।

যেসব পরীক্ষার্থীর ৭ দশমিক ৫ নম্বর কর্তন করার কথা, সেখানে মাত্র ৫ নম্বর কর্তন করা হয়েছে। ফলে ওইসব ভর্তি পরীক্ষার্থীর ২ দশমিক ৫ নম্বর বেশি দিয়ে মেধা তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। আবার প্রথমবার পরীক্ষায় যেখানে কোনো নম্বর কাটার কথা নয়, সেখানে অনেক পরীক্ষার্থীর ৫ নম্বর কর্তন করে মেধা তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।

এবারের ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত পাঠ্যপুস্তক অনুযায়ী অন্তত দুটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের সঠিক উত্তর ছিল দুটি করে। সেই সঙ্গে অন্তত তিনটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের কোনো সঠিক উত্তর ছিল না। সংরক্ষিত জেলা ও উপজাতি কোটার আসন পূরণেও ব্যাপক অসঙ্গতি করা হয়েছে।

ঢাকা জেলা কোটা আবেদনকারী পরীক্ষার্থীকে দেখানো হয়েছে মেহেরপুর জেলার পরীক্ষার্থী হিসেবে। উপজাতি কোটায় সংরক্ষিত আসনে অসংখ্য সাধারণ ছাত্রছাত্রীকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এসব ত্রুটি ও অসঙ্গতি রেখে মেধা তালিকা প্রণয়ন করার ফলে হাজার হাজার যোগ্য ও মেধাবী পরীক্ষার্থী মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার মুখে পড়েছেন।

এসব কারণে প্রকাশিত ফলাফল বাতিল করে এবং এসব ত্রুটি ও অসঙ্গতি সংশোধন করে নতুন মেধা তালিকা প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করলেও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। বরং ত্রুটিপূর্ণ মেধাতালিকায় ভিত্তিতেই মেডিকেল কলেজগুলোতে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে (২২ মে থেকে) স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর ভর্তি কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে।

রিটে আরও বলা হয়েছে, ত্রুটিপূর্ণ মেধা তালিকার ভিত্তিতে মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর অর্থই হলো প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীকে বঞ্চিত করা। তাদের আজীবন লালিত আকাঙ্ক্ষা চিকিৎসাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ থেকে বঞ্চিত করা। সেই সঙ্গে দেশের সামগ্রিক জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়া, যা বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭, ৩১, ৩২ ও ৪০ এর পরিপন্থী। তাই স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অধিদফতর কর্তৃক ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ত্রুটিপূর্ণ মেধা তালিকার ভিত্তিতে ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা এবং ত্রুটিপূর্ণ মেধা তালিকা বাতিল করে ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণ করে নতুন মেধা তালিকা প্রণয়ন করতে বলা হয়েছে।

ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব জানান, এর আগে মঙ্গলবার ২৪৮ পরীক্ষার্থীর পক্ষে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অধিদফতর কর্তৃক ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ত্রুটিপূর্ণ মেধা তালিকার ভিত্তিতে ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত এবং ত্রুটিপূর্ণ মেধা তালিকা বাতিল করে ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণপূর্বক নতুন মেধা তালিকা প্রণয়ন করতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। তারপরও এ বিষয়ে কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় সরকারের সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করে রিট করা হয়েছে।

সময় জার্নাল/আরইউ


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল