বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

এই বর্ষে অটোপাশ বা অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়ন হোক

বৃহস্পতিবার, মে ২৭, ২০২১
এই বর্ষে অটোপাশ বা অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়ন হোক

মাঈমুন নূর মনি: ইউনিভার্সিটি খোলা হোক & এইবর্ষে অটোপাশ বা অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়ন হোক। আর নয় সেশনজট!

আমি সবার মতো ইউনিভার্সিটি খুলে দিক যেমন চাই তেমনি চাই এই ঝুলে থাকা বর্ষ থেকে মুক্তি পেতে।

অনেকেই বলছেন খুলে এক্সাম হোক। কিন্তু ভেবে দেখেছেন, খোলার যেখানে কোন নাম গন্ধ নেই সেখানে এক্সাম এর পর রেজাল্ট পেতে কত দেরী হবে? স্বাভাবিক ভাবে ৭-৮ মাস লেগে যায়। আর করোনা কালীন হয়তো এক বছর চলে যাবে রেজাল্ট দিতে। এর মাঝে আমরা কি কি হারাবো?

পড়া লেখার প্রতি আগ্রহ কমে গেছে(যেটা এই মার্চ২০২০-মে ২০২১ এর মধ্যে অনেক নিচে নেমে এসেছে।)

★ বেড়েছে হতাশা। আরো বাড়বে।

★ ড্রপ আউট হয়ে যাচ্ছে অনেকে।

★ অনেক দরিদ্র ঘরের সন্তান আশার আলো না দেখে ঝরে পরছে।

★ যেই সময়ে ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস করার কথা ছিল এক বর্ষ শেষ করে অন্য বর্ষে উঠার কথা ছিল সেই সময় কাউকে কাউকে বিয়ের পীড়িতে বসতে হচ্ছে।

★ সরকারি চাকরির বয়স চলে যাচ্ছে। 

★ ১.৫ বছর জীবন থেকে হারিয়ে গেছে।

এক্সাম যদি হয় ও তাহলে রেজাল্টের জন্য মাঝ দিয়ে আরো ১ বছর চলে যাবেই। হ্যাঁ আমি জানি এর মধ্যে আরেক বর্ষে উঠিয়ে দেয়া হবে। কিন্তু যেই বর্ষের ক্লাসই আমরা করতে পারি নি সবাই সমান ভাবে সেই বর্ষের চিন্তায় আলাদা পিছুটানে পরবর্তী শিক্ষা বর্ষে মনোনিবেশ করা খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। বর্তমানে যে যেই বর্ষে আছি সেই বর্ষই আমাদের কাছে বোঝার রুপ নিয়েছে। এই বোঝা থেকে নিস্তার না পেলে আমরা পরবর্তী বর্ষে মনোনিবেশ করতে পারবো বলে আমার মনে হয় না।

আমার মতে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা যেমন জরুরি, তেমনি জরুরি খোলার পর যে যেই বর্ষে আছে সেই বর্ষে Auto pass বা Assignment এর মাধ্যেমে মূল্যায়ন করা(অনার্স চতুর্থবর্ষ এবং মাস্টার্স্ট ব্যতীত)। এতে রেজাল্ট দিতে খুব কম সময় লাগবে সর্বোচ্চ ২০-২৫ দিন। এতে করে শিক্ষার্থীরা ১.৫ বছরের ডিপ্রেশন থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাবে। এবং যেই বর্ষে আছে বর্তমানে সেই বছরের জন্য পিছুটান বা এই জমে থাকা ডিপ্রেশন কমবে।সামনের বর্ষে মনোনিবেশ করতে পারবে।

এখন অনেকে বলবেন যে, "Assignment বা Auto pass এ সঠিক মূল্যায়ন সম্ভব না।" তাদের উদ্দেশ্যে বলছি "পরীক্ষা হলেও সঠিক মূল্যায়ন সম্ভব না। এর কারণ গ্রামে থাকার কারনে এবং নেট স্বল্পতার কারনে অনেকেই ক্লাস করতে পারে নি। আর অনলাইন ক্লাস যথেষ্ট না। কারণ আমরা এর সাথে যথেষ্ট পরিচিত নই।

এখন ৪র্থ বর্ষ বাদে বলছি এর কারণ কি? এর কারণ এটা তাদের গ্রাজুয়েশনের ফাইনাল পরীক্ষা। এর পর তারা চাকরির পরীক্ষা দিবে বা চাকরীর জন্য এপ্লাই করবে। তাই তাদের রেজাল্টে এক্সাম হয়ে সেই নাম্বার আসলে সেটা গুরুত্ব পাবে। তাই তাদের পরীক্ষা জরুরি এবং তারা এটা চান।

শিক্ষার্থীদের মানসিক দিক বিবেচনা করে, পিছিয়ে যাওয়া রুখতে হলে, আগ্রহ ফিরিয়ে আনতে হলে, সেশন জট থেকে মুক্তি দিতে হলে অটোপাশ বা এসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়ন করে পরবর্তী বর্ষে উঠিয়ে দিয়ে শিক্ষা কার্জক্রম চালু করলেই কেবল ফলপ্রসূ হবে বলে মনে করি। এতে করে ১.৫ বছরের লস কে লস কম মনে হবে। এই ১.৫ বছরকে বোঝা হিসেবে না দেখে প্রশান্তি নিয়ে পরবর্তী বর্ষে মনোনিবেশ করতে পারবে। ১ম,২য়,৩য় বর্ষের ক্ষেত্রে এমন করলে রেজাল্টে তেমন কোন পরিবর্তন আসবে না। বরং পরবর্তী বর্ষে মন দিতে পারবে তারা। তা না হলে সবাই সেই ১.৫ বছর ফেলা আসা নিয়ে হতাশায় ভুগবে এবং অনেক শিক্ষার্থীদের ফেল করার সম্ভাবনা আছে।অনেক কারনেই সকলে সমপরিমাণ ক্লাস করতে পারে নি অনলাইনে এবং অনলাইনে ক্লাস আমাদের জন্য ছিল নতুন অভিজ্ঞতা। তাই কারো পড়ালেখা সঠিক ভাবে হয় নি।

তাই অটোপাশ বা অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত হোক এবং অবিলম্বে ইউনিভার্সিটি খুলে দিক।

আর হতাশায় ফেলবেন না শিক্ষার্থীদের দয়া করে। তারা পড়ার আগ্রহর সাথে নিজেদের স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিতে বসেছে। আর কতো? আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য কাউন্সিলার যথেষ্ট না, আমরা দাবিও করছি না। আমাদের সুস্থ সুন্দর পরিবেশ দিন। আমাদের হারিয়ে যাওয়া ১.৫ বছর ফিরানো সম্ভব না। কিন্তু কিছুটা ক্ষতি কমানো সম্ভব সামনের দিক উজ্জ্বল করার জন্য। জাতিকে আর হতাশ করে দিয়েন না। আমরা ভেঙে যাচ্ছি। আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা ভেবে দেখবেন।

লেখক: মাঈমুন নূর মনি, শিক্ষার্থী, ইডেন মহিলা কলেজ। 

সময় জার্নাল/এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল