নিজস্ব প্রতিবেদক:
দলের কোনো সংসদ প্রার্থীর আয় দৃষ্টিকটু মনে হলে প্রধানমন্ত্রী সময়মতো দেখবেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘কোনো প্রার্থীর আয় দৃষ্টিকটু মনে হলে সেটা তো এই মুহুর্তে সরকারের কিছু করণীয় নাই। এখন সরকার রুটিন ওয়ার্ক করছে। প্রধানমন্ত্রী সময়মতো দেখবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নেবেন।’
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ধানমণ্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সেতুমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রার্থীদের নিয়ে টিআইবির রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে করা এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সামগ্রিকভাবে দেশের আয় বেড়েছে। গত ১৫ বছরে বাজেট বেড়েছে ১২ গুণ। মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৫ গুণ। বাংলাদেশ এখন ৩৩তম অর্থনীতির দেশ। মানুষের আয় তো বাড়ে।
প্রার্থীদের আয় ২১০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে কাদের বলেন, আমি এভাবে প্রার্থীর সম্পর্কে বলতে চাই না। কিছু বলার থাকলে পরবর্তীতে কোনো ফোরামে সুযোগ হলে অবশ্যই বলব।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি লুটপাটের দল। হাওয়া ভবন হয়েছে লুটপাটের জন্য। যারা নিজেরা লুটপাট করে অন্যদের কীভাবে বলে? তারা আন্দোলনের পথ হারিয়ে পথহারা পথিকের মতো। কখন যে কি বলে, কী করে তাদের কথায় জনগণ কান দেয় না।
নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে বিএনপি লিফলেট দিচ্ছে এবং ভোটারদের অনুৎসাহিত করছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছিল যারা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করবে তাদের ব্যাপারে স্যাংশন দেবে এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী। এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সুস্পষ্টভাবে কথা বলেছে এখন এ প্রশ্নটা তাদেরকেই করা উচিৎ। এ প্রশ্নের জবাব আমার দেওয়ার কিছু নাই। সেটার জবাবে তারা কোন কৌশল অবলম্বন করেছে জানি না। আমরা ফ্রি এন্ড ফেয়ার, পিসফুল, ক্রেডিবল ইলেকশন চাই।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখানে কোনো জবরদস্তি নাই। কৌশলটা মানুষকে বুঝানো যে আপনাদের ভোটকেন্দ্রে আসা প্রয়োজন এবং ভোটাধিকার প্রয়োগ করা প্রয়োজন। এবং দেশের পরিস্থিতিতে, এই জনগণই অসহযোগিতা করা বা এ জনসমর্থনের অভাবে বিএনপি আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে। এবং জনসমর্থন ছিল না বলেই তারা তাদের আন্দোলনকে আর টেনে নিয়ে যেতে পারেনি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, সর্বশেষ ২৮ অক্টোবরে যে নগ্ন নৃশংসতা প্রদর্শন করেছে তার কারণে বিএনপি জনগণ থেকে আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মানুষ তাদের কোনো কর্মসূচি বিশ্বাস করে না৷ হরতালে না, অবরোধে না, এইসব কর্মসূচি জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রত্যাখ্যান করেছে বলেই জনসমর্থনের অভাবে তারা সন্ত্রাসের দিকে ঝুঁকে পড়েছে এবং তারা আগুন সন্ত্রাস করছে। আজকে তারা বাস পোড়াচ্ছে ট্রেন পোড়াচ্ছে, মানুষ মারছে, চোরাগোপ্ত হামলা চালাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পৃথিবীর কোথাও জনসমর্থন ছাড়া আন্দোলন সফল হয়নি। তারা গুপ্ত সন্ত্রাস, গুপ্ত হত্যা এই দিকে কেন ঝুঁকে পড়বে? সরকার হটানোর জন্য জনসমর্থন হচ্ছে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। সবচেয়ে বড় অস্ত্র। সেই অস্ত্রে মরীচিকা ধরে গেছে। এটা কাজে লাগছে না। জনসমর্থনের যে হাতিয়ার সেই হাতিয়ারে মরীচিকা ধরে গেছে। সেজন্য তারা অবরোধও সফল হয় না, ধর্মঘটও সফল হয় না। কাজেই চোরাগোপ্ত হামলা, বোমা হামলা ককটেল আগুন লাগানো এই সন্ত্রাসী পথ তারা বেছে নিয়েছে। তাদের রাজনীতি সন্ত্রাসযুক্ত হয়ে পড়েছে।
অনেক স্থানে নৌকার প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ওপর হামলা করছে। নির্বাচনী প্রচারকেন্দ্র ভেঙে দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যদি নির্বাচন বয়কট করে আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী, নৌকার প্রার্থী কেউ বয়কট করবে না। ইলেকশনে এমন বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে, সেজন্য বয়কট করতে হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি ভুয়া কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখনো সময় আছে। তারা যা বলেছে কথার সাথে কাজের মিল আছে কি না, সেটা দেখার এখনো সময় আছে। একটু ধৈর্য্য ধরুন। সেটা দেখার এখনো সময় আছে।
এমআই