শ্রীলংকাকে হোয়াইটওয়াশের মাধ্যমে ঘরের মাঠে আরও সফল সিরিজ শেষ করতে আজ শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে খেলতে নামছে বাংলাদেশ। দুপুর ১টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি সরাসরি দেখাবে গাজী টিভি ও টি-স্পোটর্স।
সিরিজের প্রথম ম্যাচ ৩৩ রানে জিতে বাংলাদেশ। পরেরটি বৃষ্টি আইনে ১০৩ রানে জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেয় টাইগাররা। ২০১৫ সাল থেকে ১১টির মধ্যে এই নিয়ে ১০মবারের মত সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ। ঐ সময় থেকেই ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজেদের সামর্থ্য দেখাতে শুরু করে টাইগাররা। ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের কাছেই একমাত্র সিরিজ হার বাংলাদেশের।
সিরিজ নিশ্চিত হওয়ায় শেষ ম্যাচের গুরুত্ব কমই। কিন্তু ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার জন্য সিরিজের প্রতি ম্যাচের পয়েন্টে গুরুত্ব অনেক বেশি। তাই দু’দলের কাছেই এ ম্যাচের গুরুত্ব অনেক বেশি।
বাংলাদেশের জন্য এটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কারন তারা জানে পরের সিরিজটি বিদেশের মাটিতে খেলতে হবে। আর বিদেশের মাটিতে টাইগার দলের যে রেকর্ড তাতে পয়েন্ট অর্জন করা খুবই কঠিন।
শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচ জিতলেও নিজেদের পারফরমেন্সে খুশি নয় বাংলাদেশ দল। অনভিজ্ঞ শ্রীলংকার বিপক্ষে নিজেদের সেরাটা দেয়ার উপায় খুঁজছে বাংলাদেশ। অন্য দিকে অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের বাদ দিয়ে নতুন অধিনায়ক হিসেবে কুশল পেরেরার উপর আস্থা রাখে লংকানরা।
দুই সিনিয়র খেলোয়াড় অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সহায়তায় প্রথম দুই ম্যাচেই বাংলাদেশকে জয় এনে দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম।
প্রথম ম্যাচে ৮৪ রান এবং দ্বিতীয়টিতে ১২৭ বলে ১২৫ রান করেন মুশফিক। দু’বারই বাংলাদেশকে বিপদ থেকে রক্ষা করেছিলেন তিনি।
বল হাতে বাংলাদেশকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। দুই ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি আইসিসি ওয়ানডে র্যাংকিংএ বোলারদের তালিকায় দ্বিতীয়স্থানে উঠেছেন মিরাজ।
সর্বশেষ দুই সিরিজ মিস করা সাকিব আল হাসান দলে ফিরে এখনো নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। তাই বাংলাদেশের পারফরমেন্স মোটেও আশানুরুপ হচ্ছে না।
তবে বাংলাদেশের প্রধান মাথাব্যাথা হলো- লিটন দাস, মোহাম্মদ মিঠুন, তাসকিন আহমেদ ও সাইফুদ্দিনের মত খেলোয়াড়দের নিয়ে। যারা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের হাল ধরবেন।
ধারাবাহিক ব্যর্থতার কারনে দ্বিতীয় ম্যাচের একাদশে সুযোগ হয়নি মিঠুনের। তার পরিবর্তে একাদশে সুযোগ পেয়েও নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি মোসাদ্দেক হোসেন।
গেল বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৭৬ রান করা লিটন দাস ফর্মহীনতায় ভুগছেন। তার ঐ স্কোর ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। শেষ ৮ ম্যাচে মাত্র ৯১ রান করেন লিটন। এরমধ্যে গেল ম্যাচে ২৫ রান তার সর্বোচ্চ। শেষ ওয়াানডের জন্য দলে নেয়া হয়েছে নাইম শেখকে। এতে লিটনের বাদ পড়ার সম্ভাবনা বেড়েছে।
তবে যাই হোক না কেন, সতীর্থদের কাছ থেকে সেরা পারফরমেন্স প্রত্যাশা করছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। কারন প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার লক্ষ্য বাংলাদেশের।
তামিম বলেন, ‘সিরিজ জয়ে খুশি, তবে আমরা এখনো আমাদের সেরাটা খেলতে পারিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখনো এটি পারিনি। আশা করছি, পরের ম্যাচেই ছেলেরা শক্তভাবে ফিরে আসবে এবং নিজেদের সেরাটা দিতে সমর্থ হবে।’
অন্য দিকে শেষ ম্যাচ জিতে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়াতে চায় শ্রীলংকার। গেল দুই ম্যাচে ভালো অবস্থায় থেকেও, অভিজ্ঞতার অভাবে লড়াই করতে পারেনি তারা। এমনটাই মনে করেন শ্রীলংকার অধিনায়ক কুশল পেরেরা।
পেরেরা বলেন, ‘এটি খুবই হতাশার। অভিজ্ঞতার অভাব আমাদের সমস্যায় ফেলেছে। দুই ম্যাচেই মিডল-অর্ডারের ব্যর্থতা আমাদের ভুগিয়েছে। আমাদের খেলোয়াড়দের নিজেদের শক্তি-সামর্থ্য ও বিশ্বাসের উপর আস্থা রাখতে হবে এবং ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে হবে।’
পরিসংখ্যানে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে শ্রীলংকা। এই ফরম্যাটে ৫০ ম্যাচে ৩৯টিতে জিতেছে শ্রীলংকা। বাংলাদেশ জিতেছে মাত্র ৯টি ম্যাচ, এরমধ্যে শেষের দুই ম্যাচও আছে। বাকী দু’টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। ওয়ানডে ক্রিকেটে দাপট দেখানোর পর থেকে শ্রীলংকার বিপক্ষে বাংলাদেশের নয় জয় এসেছে।
সময় জার্নাল/ইএইচ