আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত তিন মাস ধরে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর অবশেষে ভারতে ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। পাশপাশি, এক মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে দেশটিতে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যাও কমে আসছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৭৯ হাজার ৭৭০ জন এবং এ রোগে এই দিন মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৫৪৮ জনের। গত আড়াই মাসে এই প্রথম দেশটিতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখের নিচে নেমে এলো। আগের দিন বুধবারের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যাও কমেছে প্রায় ৩০০।
শুক্রবার দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন সচিব লব আগরওয়াল বলেন, ‘গত ১৭ মের পর থেকে ভারতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ অতিক্রম করেনি। গত তিন দিন ধরে দেশে করোনা ‘পজিটিভ’ শনাক্তের হারও ১০ শতাংশের কম দেখা যাচ্ছে।
গত তিন সপ্তাহ ধরে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যাও কমছে ভারতে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবার (২৭ মে) দেশজুড়ে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ২৪ লাখ ২০ হাজার। চলতি মাসের ৯ তারিখেই এই সংখ্যা ছিল ৩৭ লাখ ৪০ হাজার। লব আগরওয়াল জানান, গত তিন সপ্তাহে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা কমেছে ২১ দশমিক ৫ শতাংশ।
যদিও ভারতে করোনা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি দেখা যাচ্ছে, কিন্তু এখনও দেশটির মহারাষ্ট্র, কেরালা, কর্নাটক ও তামিলনাড়ৃতে এ রোগে ‘পজিটিভ’ হিসেবে শনাক্তের হার দশ শতাংশেরও বেশি। চলমান করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এই রাজ্যগুলোতেই।
ব্যাপারটি নিয়ে কিছুটা উদ্বেগে আছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দেশটির জাতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, তাদের বর্তমান লক্ষ্য এই হার ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা।
ভারতের ‘থিঙ্ক ট্যাংক’ সংস্থা হিসেবে পরিচিত নিতি আয়োগের সদস্য ডা. ভি কে পল বলেন, ‘আমরা করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা কাটিয়ে উঠছি এবং এটি সম্ভব হয়েছে কয়েকটি রাজ্যে লকডাউন জারি ও দেশজুড়ে এই রোগটির বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির কারণে। সবদিক বিবেচনা করে ধীরে ধীরে যদি বিধিনিষেধগুলো তুলে নেওয়া হতে থাকে, সেক্ষেত্রে এই উন্নতি দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
ভারতে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি, কেরলায়। তার পর থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২ কোটি ৭৫ লাখ ৪৭ হাজার ৭০৫ জন এবং মারা গেছেন মোট ৩ লাখ ১৮ হাজার ৮২১ জন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
/এমআই