আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের লক্ষ্যবস্তুতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনী এক সঙ্গে বিমান হামলা শুরু করেছে। মার্কিন এক কর্মকর্তার বরাতে শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) এতথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
হুতিদের শক্ত ঘাঁটি ইয়েমেনের রাজধানী সানা ও লোহিত সাগরের বন্দর শহর হুদাইদাহতে হামলার খবর পাওয়া গেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, লোহিত সাগরে পণ্যবাহী জাহাজে একের পর এক হামলার কারণে ইরানের মদদপুষ্ট বলে পরিচিত হুতিদের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের বিরোধের শুরু। হুথির এক কর্মকর্তা এক্সে নিশ্চিত করেছেন যে ইয়েমেনজুড়ে ব্যাপক হামলা চালানো হয়েছে।
বার্তাসংস্থা এপি জানিয়েছে, হুথিদের ব্যবহৃত সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে ব্যাপক বোমা হামলা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সেনারা।
ইয়েমেনের রাজধানী সানায় এপির সাংবাদিকরা চারটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন, কিন্তু যুদ্ধবিমানের কোনো চিহ্ন দেখতে পাননি। হুদাইদাহের দুই বাসিন্দা জানান, তারা পাঁচটি শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র কয়েকটি দেশ লোহিত সাগরে হুতিদের হামলার জন্য ‘পরিণতির’ সম্পর্কে সতর্ক করে।
ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব শিপিং জানিয়েছে, বিশ্বের কন্টেইনারবাহী জাহাজগুলোর ২০ শতাংশ এখন লোহিত সাগর এড়িয়ে চলাচল করছে, এর বদলে তারা আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণ প্রান্ত দিয়ে অনেক দীর্ঘ পথ ঘুরে গন্তব্যে যাচ্ছে।
হুতিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার তারা ইসরায়েলকে সমর্থন যোগানো মার্কিন একটি জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এটি ছিল ১৯ নভেম্বর থেকে লোহিত সাগরে হুতিদের চালানো ২৬তম হামলা।
মার্কিন সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত প্রায় সোয়া ১০টার দিকে ইয়েমেনের হুতি নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলো থেকে ইরানের নকশা করা একমুখী ড্রোন, জাহাজ বিধ্বংসী ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও জাহাজ বিধ্বংসী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়।
লোহিত সাগরে মোতায়েন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস ডোয়াইট ডি আইজেনহাওয়ার থেকে কয়েকটি এফ/এ-১৮ যুদ্ধবিমান উড়ে গিয়ে এবং চারটি ড্রেস্টয়ার থেকে ১৮টি ড্রোন, দু’টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ধ্বংস করা হয়।
আরব বিশ্বের সবচেয়ে গরিব দেশ ইয়েমেনে গত ৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। এ যুদ্ধ মূলত দেশটির প্রায় ৫৬ শতাংশ সুন্নি ও প্রায় সাড়ে ৪৩ শতাংশ শিয়াদের মধ্যে। তবে ইয়েমেনে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চলমান সশস্ত্র সংগ্রামের প্রধান বিবদমান পক্ষ জাতিসংঘ সমর্থিত সরকার ও বিরোধী হুতি আন্দোলনকারী।
সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন আরব সামরিক জোটই মূলত হুতিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। তাদের লক্ষ্য, ইয়েমেনে জাতিসংঘ সমর্থিত ও আন্তর্জাতিক মহলে স্বীকৃত সরকারের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। আরব আমিরাত এই জোটের অন্যতম শরিক দেশ।
সময় জার্নাল/এলআর