আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইরানের ইসলামিক রেভুলশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) সোমবার সিরিয়ার গভীরে হামলা চালিয়েছে। ইরাকের কুর্দি অঞ্চলের পাশাপাশি সিরিয়ার এই হামলার ব্যাপক তাৎপর্য রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমনকি গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধের সাথেও এই হামলা সম্পৃক্ত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কুর্দিস্তান সিকিউরিটি কাউন্সিল জানিয়েছে, ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় নগরী ইরবিলের কয়েকটি ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। এতে চারজন নিহত এবং অন্য ছয়জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে প্রখ্যত কুর্দি ব্যবসায়ী পেশরাও দিজায়িসহ বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন। এই পেশরাওয়ের সাথে মোশাদের সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। তিনি ইসরাইলে তেল বিক্রি করে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।
ইরান দাবি করেছে, তারা সেখানে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোশাদের ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। উল্লেখ্য, গত মাসে সিরিয়ায় ইরানের শীর্ষস্থানীয় কমান্ডার রাজি মুসাভি নিহত হন। ইরান এজন্য ইসরাইলকে দায়ী করে প্রতিশোধ গ্রহণের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিল।
ইরান থেকে সিরিয়া ও লেবাননে অস্ত্র পরিবহনে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করতেন মুসাভি। এই হামলা ওই হত্যার প্রতিশোধ কিনা তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি।
আইআরজিসির উদ্ধৃতি দিয়ে ইরানের ফার্স নিউজ অ্যাজেন্সি জানিয়েছে, আইআরজিসি ইরাকের কুর্দিস্তান সদরদফতে ইসরাইলের মোশাদের গোয়েন্দা সদরদফতরে হামলা চালিয়েছে। বিবৃতিতে দাবি করা হয়, ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় স্থাপনাটি ধ্বংস হয়ে গেছে।
এদিকে মার্কিন কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলাটিতে মার্কিন কোনো স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, যুক্তরাষ্ট্রের কেউ হতাহত হয়নি।
অন্যদিকে সিরিয়ার অভ্যন্তরে আইএসআইএলের (আইএসআইএস) ঘাঁটিতে এই হামলা চালানো হয়। উল্লেখ্য, চলতি মাসের ৪ তারিখে ইরানের সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলায়মানিতে মৃত্যুবার্ষিকীতে আইএসআইএস তার কবরের কাছে দুটি আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছিল। ইরান তখনো বলেছিল, তারা এর প্রতিশোধ নেবে।
এই দুটি ঘটনার প্রেক্ষাপটে ইরান সোমবার ইরাক ও সিরিয়ায় হামলা চালিয়েছে।
সিরিয়ায় ইরান যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, তা নিক্ষেপ করা হয়েছিল দক্ষিণ-পূর্ব এলাকা থেকে। এর মানে হলো, এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রায় ,২০০ কিলোমিটার (৭৪৫ মাইল) পাড়ি দিয়েছে। ইরানের নিক্ষেপ করা এটাই সর্বোচ্চ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। এমনটাই মনে করেন ইরানের রাষ্ট্রীয় পরিচালিত ইরনা ওয়েবসাইটের সাথে সম্পর্কিত সামরিক সাংবাদিক মোহাম্মদ শালতোকি।
তিনি বলেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের জন্য একটি বার্তা। ইরান থেকে ইসরাইলের দূরত্বও একই। ফলে এই ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে ইরান বার্তা দিলো যে তারা নির্ভুলভাবে ইসরাইলের অভ্যন্তরে নির্দিষ্ট টার্গেটে হামলা চালাতে পারে।
সময় জার্নাল/এলআর