বুধবার, জানুয়ারী ১৭, ২০২৪
মাহবুবুল আলম রিপন: ঢাকার ধামরাই উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এখন সরিষার হলুদ ফুলের অপরূপ দৃশ্য। আর এমন দৃশ্য দেখে মনে হবে যেন বিছিয়ে রাখা হয়েছে হলুদ চাদর। পাশাপাশি ক্ষেতজুড়ে মৌমাছিদের হল্লা। প্রায় প্রতিটি সরিষা ক্ষেত থেকেই চলছে মধু আহরণের ধূম। এতে সমন্বিত এই চাষে সরিষাচাষি ও মৌচাষি উভয়ই লাভবান হচ্ছেন।
চলতি মৌসুমে উপজেলাটির ১৬টি ইউনিয়নে ৭ হাজার ৪০০ হেক্টর সরিষার আবাদি ক্ষেত থেকে প্রায় ৫০ টন মধু উৎপাদন হবে বলে আশা উপজেলা কৃষি বিভাগের। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে সরিষা ক্ষেতে মৌমাছির খামার করলে সরিষার ফলন বেশি হয়। এবছর ধামরাই উপজেলায় কৃষি অফিসের সহযোগিতায় আটিগ্রাম, ইকুরিয়া, আশুলিয়া, ভাড়ারিয়া, দীঘলগ্রামে ৯টি ব্লকে ১১ স্থানে ২০০০টি মৌ কলোনির (স্থানীয় নাম মধুর বাক্স) মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে।
মৌ চাষি এরশাদুল ইসলাম জানান, তিনি মৌ চাষ সম্পর্কে একাধিক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ধামরাইয়ে তিনি কয়েকবছর ধরেই মধু চাষ করেন। প্রতি ৫০টি বাক্সে আট দিন পর পর ১৪০-১৬০ কেজি মধু আহরিত হয়।
ইকুরিয়া গ্রামের মৌ চাষী তাহের জানান, ৪০টি বাক্স নিয়ে তিনি মৌ চাষ শুরু করেন। বিনিয়োগ করেছিলেন ১ লাখ টাকা। এখন তার ১০০টি বাক্স। প্রতি সপ্তাহে গড়ে সাত মণ মধু আহরণ করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার কিছুটা দূরে সরিষাখেতের পাশেই সারিবদ্ধভাবে বসানো হয়েছে মৌমাছির বাক্স। হাজার হাজার মৌমাছি হলুদ রঙের সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে বাক্সে জমা করছে। সাত-আট দিন পর পর ওই সব বাক্স থেকে বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করে মধু সংগ্রহ করেন চাষিরা।
কৃষি কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, প্রতি বাক্সে ৫০ থেকে ৬০ হাজার মৌমাছি আর একটি মাত্র রানী মৌমাছি থাকে। এরা ‘এফিস মিলিফেরা’ জাতের মৌমাছি। রানী মৌমাছি ডিম দেয়। অন্য মৌমাছিগুলো মধু সংগ্রহ করে। সরিষাখেতে মৌমাছি থাকলে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৫-২০ ভাগ ফলন বাড়ে। সরিষা ফুলে মৌমাছি যে পরাগায়ণ ঘটায় তাতে সরিষার দানা ভালো হয়।
তিনি আরো জানান, সরিষার চাষের পাশাপাশি ২০০০টি মৌমাছি চাষের ব্লকে এ পর্যন্ত ১০ টন মধু সংগ্রহ করা
হয়েছে। আশা করি এ বছর প্রায় ৫০ টন মধু সংগ্রহ করা যাবে।
এমআই