শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নেকাব না খোলায় ছাত্রীর ভাইভা নেয়নি শিক্ষকরা

শনিবার, জানুয়ারী ২০, ২০২৪
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নেকাব না খোলায় ছাত্রীর ভাইভা নেয়নি শিক্ষকরা

ইবি প্রতিনিধি:

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নেকাব খুলতে না চাওয়ায় এক ছাত্রীর বিভাগীয় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার ভাইভা (মৌখিক পরীক্ষা) নেওয়া হয়নি।

গত ১৩ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার ভাইভায় এ ঘটনা ঘটে।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ ডিসেম্বর বিভাগটির ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষের ভাইভায় নেকাব পরে অংশ নেয় ভুক্তভোগী ছাত্রী। এসময় ভাইভা বোর্ডের শিক্ষকরা তার পরিচয় নিশ্চিতের জন্য তাকে নেকাব খুলতে বলেন। এসময় ওই ছাত্রী নেকাব খুলতে অস্বীকৃতি জানান এবং প্রয়োজনে নারী শিক্ষকদের মাধ্যমে তার পরিচয় নিশ্চিত করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তাকে ভাইভা বোর্ডের সকল সদস্যদের সামনে নেকাব খুলতে বলেন শিক্ষকরা। পরে নেকাব না খোলায় তার ভাইভা নেওয়া হয়নি।

জানা যায়, ঘটনার দিন ভাইভা বোর্ডে উপস্থিত ছিলেন হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগে অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি শিমুল রায়, পরীক্ষা কমিটির সভাপতি উম্মে সালমা লুনা ও বিভাগের শিক্ষক শহিদুল ইসলাম।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাথে কথা বলে জানা যায়, নেকাব না খোলায় সেদিন অন্য সবার ভাইভা নিলেও শুধুমাত্র তার ভাইভা নেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে নেকাব খুলে ভাইভায় অংশ নিতে চাইলে আবারো তার ভাইভা গ্রহণ করা হবে বলে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে তাকে জানানো হয়। তবে ওই শিক্ষার্থী পুরুষ শিক্ষকদের সামনে নেকাব খুলতে সম্মত হননি। ফলে  এখনও পর্যন্ত তার ভাইভা নেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে বিভাগীয় শিক্ষক ও ভাইভা বোর্ডের সদস্য শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তাকে ভাইভায় নেকাব খোলার জন্য রিকোয়েস্ট করেছি। তাকে বুঝিয়েছি যে, চার বছর পর তুমি এভাবে চাকরির ভাইভাতে গেলে রিটেনে ভালো করলেও তোমার চাকরি হবে না। যখন সে রাজি হয়নি তখন আমরা পরীক্ষা কমিটির সভাপতির নেতৃত্বে সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে ভাইভা থেকে বের করে দিয়েছি। এরপরে আমরা কয়েক দফায় তার সাথে কথা বলেছি কিন্তু সে তার অবস্থান থেকে ফিরে আসেনি।’

পরীক্ষা কমিটির সভাপতি উম্মে সালমা লুনা বলেন, ‘ভাইভা বোর্ডে আমরা তাকে বলেছিলাম সে যে আমাদের স্টুডেন্ট তা প্রমাণ করার জন্য। কিন্তু তিনি তা প্রমাণ করতে পারেননি। 

এছাড়া নারী শিক্ষিকা দ্বারা পরিচয় নিশ্চিতের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে বোর্ডের অন্য শিক্ষকরা অবজেকশন জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, এভাবে করলে তাহলে আমরা মার্ক দিব না।’

বিভাগটির সভাপতি শিমুল রায় বলেন, ‘এর আগে লিখিত পরীক্ষায় আমরা তাকে নারী শিক্ষিকা দ্বারা রিকগনাইজ করেছিলাম। ভাইভাতেও নারী শিক্ষিকা ছিলেন। কিন্তু সবসময় তো থাকে না, সেক্ষেত্রে আমরা কি করবো? সে জায়গা থেকে আমরা তাকে রিকোয়েস্ট করছিলাম। কিন্তু সে তার অবস্থানে অনড় থাকায় তার ভাইভা নেয়া হয়নি।’

ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন বলেন, ‘ধর্মীয় বিশ্বাসের যায়গা থেকে নেকাব করে তাহলে শিক্ষিকাদের দ্বারা তাদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে পরীক্ষা ও ভাইভাতে সুযোগ দেয়া যায়। তবে ভাইভাতে যেহেতু আই কন্টাক্ট গুরুত্বপূর্ণ সেক্ষেত্রে মুখ খুলে অংশ নেয়া ভালো কিন্তু তাদের জোর করা যাবে না। হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিষয়টি আমি যেহেতু জানিনা, সেক্ষেত্রে তা জেনে এবিষয়ে কথা বলবো।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘এই কাজটি উচিৎ হয়নি। আমাদের সামনেও অনেক সময় এরকম শিক্ষার্থীরা থাকে আমরা সবসময়ই নারী শিক্ষকের মাধমে তাদের আইডেনটিফাই করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে গেলে তাদের (শিক্ষকদের) পেনাল্টি হতে পারে।’

সাইফ ইব্রাহিম 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল