আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গোপন তৎপরতা আরও বাড়িয়েছে ইসরাইলের ছদ্মবেশী এলিট বাহিনী।
যুদ্ধবিরতির মধ্যেও ব্যাপক ধরপাকড়ের পাশাপাশি একের পর এক টার্গেট কিলিং চালাচ্ছে। টার্গেট করা হচ্ছে মূলত ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের সদস্যদের। এরপর সুযোগ মতো তাদেরকে বাড়ি বা কর্মস্থল থেকে উঠিয়ে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে।
এই বাহিনীর হাতে সর্বশেষ টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হয়েছেন পশ্চিম তীরের আল-আমারি রিফিউজি ক্যাম্পের ২৪ বছর বয়সি টগবগে যুবক আহমেদ জামিল ফাহদ।
ইসরাইলের চলতি মাসেই অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেম নতুন একটি মহল্লা দখলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা থেকে গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইল। টানা ১১ দিনের এই সংঘাতে নারী ও শিশুসহ ২৩২ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়।
১১ দিনের বিরামহীন বিমান হামলার পর মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় উভয়পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। কিন্তু এই যুদ্ধবিরতির মধ্যেও থেমে নেই ইসরাইল।
অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর ঢালাও ধড়পাকড় চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। শুধু ধরপাকড়েই সীমাবদ্ধ নেই তারা। ছদ্মবেশে চালাচ্ছে গোপন হত্যা মিশনও।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির পর গত মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের ইসরাইল সফরের কয়েক ঘণ্টা আগে পশ্চিম তীরের রামাল্লা শহরের আল-আমারি রিফিউজি ক্যাম্পের ছেলে আহমেদ ফাহাদকে গুলি হত্যা করে ইসরাইলি বাহিনী।
ফাহাদের পরিবার জানায়, ইসরাইলের একদল ছদ্মবেশী এজেন্ট তাকে আটক করে নিয়ে যায়। এরপর ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তাকে পেছন থেকে বেশ কয়েকটি গুলি করা হয়। গুলি করার পর তাকে রামাল্লার উম-আল শারায়িত এলাকায় ফেলে রাখা হয়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় তার। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মারা যান ফাহাদ।
আলজাজিরা জানিয়েছে, ফাহাদের এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে ইসরাইলের ছদ্মবেশী এলিট স্পেশাল ফোর্স ‘মুসতারিবিন’ ইউনিটের সদস্যরা।
এই ইউনিটটি প্রশিক্ষিত ইসরাইলি সেনাদের মাধ্যমে গঠিত। ছদ্মবেশে সাধারণ ফিলিস্তিনি পশ্চিম তীরে বিচরণ করে। রাত-বিরাতে সুযোগ পেলেই ফিলিস্তিনিদের বাড়িতে অভিযান চালায়, আটক করে শেষে হত্যা করে।
ফিলিস্তিনে ভয়ংকর এই বাহিনীর একের পর এক হত্যাকাণ্ডে সর্বত্র একটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সেইসঙ্গে চাপা ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে।
ইসরাইলের এই কর্মকাণ্ড নিয়ে ইতোমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো। আদালা নামে ইসরাইলের এই গোপন বাহিনীকে ‘অবৈধ ও বর্ণবাদী’ বলে অভিহিত করেছে।
সময় জার্নাল/এসএ