মো. জাহিদুল হক, চবি প্রতিনিধি
“সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণ এবং দীর্ঘমেয়াদী সুনীল অর্থনীতির প্রসারে বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি” প্রতিপাদ্যেকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) প্রতীকী জাতিসংঘ সংস্থা 'চিটাগং ইউনিভার্সিটি মডেল ইউনাইটেড ন্যাশনস এসোসিয়েশন'র (সিইউমুনা) ৮ম সম্মেলন শুরু হয়েছে ।
গতকাল বুধবার (৭ জানুয়ারি) দুপুর ২ টায় ব্যাবসায় প্রশাসন অনুষদের অডিটোরিয়ামে আন্তর্জাতিক এই সম্মেলন শুরু হয় । যেটি চলবে আগামী ১০ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
সম্মেলনের মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল জিদানের সভাপতিত্বে সম্মেলন শুরু হয়।
সম্মেলনে মেরিন সায়েন্স এন্ড ফিশারিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, সমুদ্র রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা উদ্যোগ গ্রহণ করে প্রতীকী সম্মেলন করছে এটা দেখে ভালো লেগেছে। আমরাও ২০১০ সালে এ বিষয়ে একটি খসড়া তৈরি করেছিলাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সমুদ্র বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে তাই তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন সায়েন্সের গবেষণাগার তৈরির জন্য কক্সবাজারে জায়গায় বরাদ্দ দিয়েছেন। আমরা সেখানে আন্তর্জাতিক মানের সমুদ্র বিষয়ক গবেষণাগার তৈরি করবো। দেশের অর্থনীতির উন্নতির পাশে সামাজিক সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবো বলে বিশ্বাস করি।
আইন বিভাগের অধ্যাপক জনাব এ.বি. এম আবু নোমান বলেন, এই সম্মেলনে ছেলেরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলবে। বিশ্ব নেতারা যেভাবে কথা বলে তারাও সেভাবে কথা বলবে। তারা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দেবে পরিবেশ নিয়ে সমুদ্র নিয়ে কাজ করার জন্য। তারাই পারবে এক সময় বিশ্বকে পরিবর্তন করতে।
সম্মেলনের মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল জিদান বলেন, আমাদের এই আয়োজনের উদ্দেশ্য হল বাংলাদেশ ও বিশ্বের শিক্ষার্থীদের একত্রিত করার মাধ্যমে স্কিল ডেভেলপমেন্ট করা এবং বৈশ্বিক সমস্যাগুলো সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭০ টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আজকের এই আয়োজনের মাধ্যমে ধন্য হয়েছে।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে। আরও উপস্থিত ছিলেন , মেরিন সায়েন্সস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো শাহনেওয়াজ চৌধুরী, লোকপ্রশাসন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, সহকারী প্রক্টর সৌরভ সাহা জয় ও নাজেমুল আলম মুরাদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যানেজমেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা এর অধ্যাপক ড. কৃতি সরকার।
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বৈঠক হচ্ছে ১০ টি কমিটির। কমিটিগুলো হলো, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি), জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ-১ (ডাইসেক), জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন (ইউএনএইচআরসি), আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থা (আইএমও), পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক সংস্থা (ওপেক), আর্কটিক কাউন্সিল, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি), বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ, আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা (আইপি)।
এসব কমিটিতে বিভিন্ন দেশের হয়ে প্রায় তিন শতাধিক তরুণ শিক্ষার্থী প্রতিনিধিত্ব করছেন। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন, কূটনীতি পরিচালন ও দলবদ্ধভাবে কাজ করে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা, সুনীল অর্থনীতির বিস্তার ও এর টেকসই বিকাশে সম্ভাব্য বাধা উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, সময়োপযোগী সমাধান নিরূপণ ও ভবিষ্যত পরিকল্পনার নিয়ে তারা আলোচনা করবেন।
ঢাবি, জাবি, রাবি সহ দেশ-বিদেশের প্রায় ৪০ টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করেছেন। ভারত, নেপাল, মালয়েশিয়া, সিয়েরা লিওন ইত্যাদি দেশ থেকে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরাও এ সম্মেলনে যুক্ত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে চবিতে 'চিটাগং ইউনিভার্সিটি মডেল ইউনাইটেড ন্যাশনস এসোসিয়েশন'র (সিইউমুনা) যাত্রা শুরু করে। সূচনালগ্ন থেকেই এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে কূটনীতিক কার্যক্রম সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দেওয়ার পাশাপাশি নেতৃত্ব সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে।
সময় জার্নাল/এলআর