আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর অনুরোধে সাড়া দিয়ে দেশটি থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করার কথা ঘোষণা করেছে ভারত। সৈন্যদের স্থানে 'প্রযুক্তিবিদ' পাঠানো হচ্ছে বলেও দেশটির একটি পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে।
আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘যোগ্য ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ’ পাঠানোর কথা জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, যদিও সেনা সদস্যদের সরিয়ে ঠিক কাদের পাঠানো হবে মালদ্বীপে, সে বিষয়ে বিস্তারিতভাবে কিছু জানায়নি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ক্ষমতায় আসার পরেই মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সৈন্য সরানোর জন্য সরকারিভাবে অনুরোধ জানিয়েছিল মুইজ্জু সরকার। দিন কয়েক আগে বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছিল, তাদের নির্ধারিত দিনের মধ্যেই ভারত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে। অবশ্য ভারত অন্য কথা বলেছিল। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি মলদ্বীপের দাবিই সত্যি হচ্ছে?
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লিতে মালদ্বীপ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে একটি বৈঠক হয়েছে ভারত সরকারের। দুই দেশের মধ্যে দ্বিতীয় শীর্ষস্তরের বৈঠক ছিল সেটি। চলতি মাসের শেষে তৃতীয় বৈঠক রয়েছে।
সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে সেই নিয়েই কথা বলেছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জায়সওয়াল। তিনি বলেন, ‘আমাদের যা বলার ছিল, তা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ করেছিল। শীর্ষস্তরের দ্বিতীয় বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত। তৃতীয় শীর্ষস্তরের বৈঠক হবে।’ তার পরেই জায়সওয়াল বলেন, ‘এখন যারা রয়েছেন মালদ্বীপে, তাদের জায়গায় যোগ্য ভারতীয় প্রযুক্তিবিদদের পাঠানো হবে।’
আনন্দবাজার জানায়, দ্বিতীয় বৈঠকের পর মালদ্বীপের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, ১০ মার্চের মধ্যে মালদ্বীপে তিনটি বিমানক্ষেত্রের মধ্যে একটি থেকে সেনা সদস্যদের সরাবে ভারত। বাকি দু’টি জায়গা থেকে ১০ মের মধ্যে ভারত সেনাসদস্যদের সরিয়ে নেবে।
বিবৃতিতে মুইজ্জু সরকার এও দাবি করেছিল, এই বিষয়ে তাদের সাথে একমত হয়েছে ভারত। যদিও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, মালদ্বীপে বিমান চলাচল করতে পারে এমন পরিস্থিতি বজায় রাখতে পারস্পরিক সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টা করছে ভারত। যাতে মালদ্বীপের মানুষকে মানবিক সাহায্য এবং ওষুধপত্র সরবরাহ করতে পারে নয়াদিল্লি।
মালদ্বীপের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল, ১৫ মার্চের মধ্যে ওই দেশ থেকে ভারতকে সেনাসদস্যদের সরাতে বলেছে মুইজ্জু সরকার। উল্লেখ্য, নির্বাচনের আগে মুইজ্জু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি ক্ষমতায় এলে মালদ্বীপ থেকে ভারতকে সেনা সদস্যদের সরিয়ে নিতে বলবেন। প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেয়ার পর ওই কাজটাই করেন তিনি।
আনন্দবাজার জানায়, এখন মালদ্বীপে ৭০ জন সৈন্য, সমু্দ্রে টহলের জন্য ডর্নিয়ের ২২৮ বিমান, দু’টি এইচএএল হেলিকপ্টার রয়েছে। ওই দেশের সমুদ্রে টহলের পাশাপাশি অসুস্থ নাগরিকদের এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে আকাশপথে পৌঁছে দেয় ভারতীয় সেনা। প্রয়োজনে ত্রাণসহ মানবিক সাহায্য করে।
তিনি বলেন, ‘প্রথমে এক রকম বরাদ্দ করা হয়েছিল। পরে তা পুনর্বিবেচনা করে পরিবর্তনের প্রক্রিয়া চলছে। ওই পুনর্বিবেচনার সময় নতুন প্রস্তাবও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ ভারতের পররাষ্ট্র মুখপাত্রের কথায়, ‘মালদ্বীপে এ বর বরাদ্দ ৭৭৯ কোটি রুপি, যা আগে ছিল ৬০০ কোটি রুপি। কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে, তার ওপর ভিত্তি করে নতুন বরাদ্দও খতিয়ে দেখা হবে। মালদ্বীপের উন্নয়নে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সঙ্গী থাকব।’
সময় জার্নাল/এলআর