সময় জার্নাল ডেস্ক:
বছরের অন্য দিনগুলোতে ভালবাসা প্রকাশ করি আর নাই করি, আগামীকাল তো করতেই হবে। ১৪ ফেব্রুয়ারি, বুধবার। ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালোবাসা দিবস বলে কথা। ভালবাসা আর গোলাপ একই সাথে চলে। তাই ফুলের রানী গোলাপের চাহিদাও অনেক।
সাভারের গোলাপ গ্রাম সংলগ্ন ফুল বাজারে সাধারণত ৩০০ পিসের ১ বান্ডেল গোলাপ বিক্রি হয় আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকায়। তবে ভ্যালেন্টাইন ডে বা ভালোবাসা দিবসে এই ফুলের দাম হয়ে যায় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা।
মৌসুমের শুরুতে গোলাপের ফলন ভালো হলেও শেষটা ভালো যাচ্ছে না কৃষকের। অজানা ছত্রাকের হানায় নষ্ট হচ্ছে ফুলের রানী গোলাপ।
ফলে চহিদার তুলনায় উৎপাদন কম থাকায় ভালোবাসা দিবসের ফুলের বাজার এখন বেশ চড়া। উৎপাদন কম হওয়ায় ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে গোলাপের দাম বেড়েছে তিনগুণ।
লাখ লাখ টাকা খরচ করে গোলাপ ফুল চাষ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করা হয়। এই শিল্প থেকে শত শত মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, গোলাপ ফুলে ছত্রাক কিংবা নানা রোগের যখন আক্রমণ ঘটে তখন এই শিল্প রক্ষায় কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাভার উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এবছর ২৩০ হেক্টর জমিতে গোলাপের চাষ হয়েছে। ১৯৯০ সালে মিরপুর থেকে এসে বিরুলিয়ায় প্রথম গোলাপের চাষ করেন সাদেকুল নামের এক ব্যক্তি।
তার বাণিজ্যিকভাবে গোলাপ চাষ দেখে স্থানীয়রাও উদ্বুদ্ধ হয়ে শুরু করেন গোলাপের চাষ। চাষিরা লাভবান হওয়ায় ইউনিয়নের মোইস্তাপাড়া, সামাইর, শ্যামপুর, সাদুল্লাপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে গোলাপ চাষ।
এখানে মেরিন্ডা, হাজারি, লিংকন, পাপা মিলন, বধূয়া বা হলুদ ও সাদা জাতের গোলাপের চাষ হয়। তবে বাজারে চাহিদা বেশি লাল মেরিন্ডার। এ গ্রামের ৯০ শতাংশ মানুষেরই প্রধান জীবিকা ফুলচাষ।
অপর এক ফুলচাষি নাজিমুদ্দিন জানান, গত কয়েক দিন ধরেই বেচা-বিক্রি বেশি। তবে যতটুকু আমরা আশা করেছিলাম ততটুকু ফুল বিক্রি করতে পারছি না।
গত কয়েক দিন আগেই প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০টি ফুল তোলা গেছে। কিন্তু বর্তমানে ৫০টিও পাওয়া যাচ্ছে না। ছত্রাকের কারণে কুঁড়ি থেকে ফুল ফোটার আগেই সব পচে গেছে। এতে চাহিদা থাকলেও বিক্রি করা যাচ্ছে না।
বাগানের এ পরিস্থিতিতে বাজারে প্রভাব পড়েছে দামে। এ সময়টাতে সাধারণত ৩০০ পিসের ১ বান্ডিল গোলাপ বিক্রি হয় ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকায়। তবে ফেব্রুয়ারির শুরুতেই এর দাম হয়ে যায় ৪ হাজার টাকা। কিন্তু এবার উৎপাদন কম থাকায় ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে যার দাম হয়েছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা অর্থাৎ প্রায় ৩ গুণ।
সাভার উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মোছা. ইশরাত জাহান জানান, সাভার উপজেলায় এবার ২৩০ হেক্টর জমিতে গোলাপের চাষ হয়েছে। এ বছর প্রায় ৪০ কোটি ফুল বিক্রি হবে বলে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চাষিরাও লাভবান হবেন।
তবে গোলাপে ছত্রাকের আক্রমণের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত সেখানে পরিদর্শন করছি। চাষিদের সঙ্গে উঠান বৈঠক, বাগানের পাশে, ফুল বাজারের পাশে ফেস্টুনসহ নানা সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
সময় জার্নাল/এলআর