শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

বাকৃবিতে কোষাধ্যক্ষ ও রেজিস্ট্রার একই ব্যক্তি

শুক্রবার, ফেব্রুয়ারী ১৬, ২০২৪
বাকৃবিতে কোষাধ্যক্ষ ও রেজিস্ট্রার একই ব্যক্তি

সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী, বাকৃবি প্রতিনিধি:

উপাচার্য, রেজিস্ট্রার এবং কোষাধ্যক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদ। এই গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পদের ব্যক্তিদের দায়িত্ব ও কাজের পরিধিও অনেক বেশি। অনেক সময় নিজ নিজ কাজ করতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় তাদের। কিন্তু বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) রেজিস্ট্রার এবং কোষাধ্যক্ষ এই দুইটি গুরুত্বপূর্ণ পদে একই ব্যক্তি দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে বাকৃবির ভারপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষ ও রেজিস্ট্রারের পদে দায়িত্ব পালন করছেন মো. অলিউল্লাহ। একজন ব্যক্তি দুটি দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করতে পারছেন কিনা, বাকৃবিতে কি যোগ্য লোকের অভাব? এমন নানান আলোচনা-সমালোচনা চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মহলে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রেজিস্ট্রার মো. ছাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয় মো. অলিউল্লাহকে। পরে ১ মার্চ থেকে বাকৃবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন তিনি। পরবর্তীতে তিনি ভারমুক্ত হয়ে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করছেন।

অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে ভারপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষ হিসেবেও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন মো. অলিউল্লাহ। তার আগে কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন মো. রাকিব উদ্দিন। মেয়াদ শেষ হবার পরও দুইবার কার্যসীমা বাড়ানো হয়েছিলো রাকিব উদ্দিনের। কিন্তু কোষাধ্যক্ষের পদে বাকৃবি প্রশাসন যোগ্য কাউকে খুঁজে পায়নি এতাদিনেও। তাই অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মো. অলিউল্লাহকে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কমিটির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. আবু হাদি নূর আলি খান বলেন, একজন রেজিস্ট্রার মহোদয়ের যে পরিমাণ কাজের পরিধি তার থেকে বেশি কাজ একজন কোষাধ্যক্ষের। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন সেকশনে কত টাকা বাজেট আছে, কোন ক্রয়কার্যটা কিভাবে সম্পাদন করা হবে, কতটুকু বাজেট স্যাংশন করবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট সক্ষমতা কত এসব কাজ একজন কোষাধ্যক্ষ করে থাকেন। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে যত কর্মকর্তা-কর্মচারীর ফাইলগুলো আছে সেগুলো রেজিস্টার মহোদয়কে দেখতে হয় । দুই পদের কাজ যেহেতু একজন করছে এতে করে কার্যক্রমের বিষয়গুলো একটু ধীরগতিতে হচ্ছে। নিঃসন্দেহে তার উপর চাপ পড়ছে।  বাকৃবির মত একটি জায়গায় যোগ্য ব্যক্তি কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ না হলে বিশ্ববিদ্যালয় সমস্যার  মুখে পড়বে। দ্রুতই কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া উচিত তবে এমন কাউকে দেওয়া যাবে না যে, যার দক্ষতা নেই । সেক্ষেত্রে কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছুটা সময় উপাচার্য মহোদয় নিতেই পারেন । তবে খুব দ্রুত নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্থাপন শাখার অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (সংস্থাপন-৫) আরীফ জাহাঙ্গীর বলেন, এটা একটা সমস্যা। প্রচন্ড বিশৃঙ্খলা হচ্ছে এই সেকশনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এমনটা কখনো হয়নি, এটার কোন যৌক্তিকতা নেই। একটা শাখাই একজন ব্যক্তি কুলিয়ে উঠতে পারেন না সেখানে আরেকটা শাখার দায়িত্ব। সমস্যা হবে, বিশৃঙ্খলা বড় আকারে দেখা দিবে এটাই স্বাভাবিক। কোষাধ্যক্ষ অফিসের লোকজন ফাইল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনে দৌড়াদৌড়ি করছে। রেজিস্ট্রার অফিসে এক পাশে সংস্থাপনের ফাইল, অন্যপাশে কোষাধ্যক্ষের ফাইল পড়ে থাকে। একজন ব্যক্তি কোনো দিনই এ ধরণের দুটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব কুলিয়ে উঠতে পারেন না। এই ধরনের ঘটনাও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম। নজিরবিহীন এমন বিষয়টি কোনো হলো সেটা আমি জানি না। কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব একটা দক্ষতার জায়গা। যদি অভিজ্ঞতা না থাকে এবং ওই ব্যাকগ্রাউন্ডের না হয়, তাহলে কিভাবে কোষধ্যক্ষের কাজ করা যায়? এটি অস্বাভাবিক।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এবং ভারপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষ মো অলিউল্লাহর সাথে মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, একজন ব্যক্তি দুই দায়িত্ব পালনে হিমশিম খেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ কিন্তু ঠিকই চলমান রয়েছে। কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা এজন্যে কাজগুলো আমি তদারকি করছি। চেষ্টা করছি খুব দ্রুতই কোষাধ্যক্ষ দেওয়ার। কিন্তু যেহেতু এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ। যোগ্য এবং দক্ষ ব্যক্তি নিয়োগে তাই একটু সময় নিচ্ছি। রেজিস্ট্রারকেও এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে বলা হয়েছে।  বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী আমরা বিজ্ঞাপন দিয়ে দক্ষ ব্যক্তিকে নিয়োগ দিব।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল