আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় দৃশ্যত গুঁড়িয়ে গেছে ফিলিস্তিনের গাজা। এরই মধ্যে পুরোপুরি ‘মর্ত্যের নরকে’ পরিণত হয়েছে এটি। সীমান্ত এলাকা রাফায় ইতোমধ্যে তিল ধারণের জায়গা নেই। সেখানকার প্রায় ১৪ লাখ শরণার্থী মিশরে প্রবেশ করতে পারে এমন আশঙ্কায় হঠাৎ ‘রহস্যময়’ দেয়াল তুলছে দেশটির সরকার। এর ফলে অবরুদ্ধ গাজা পুরোপুরি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। খবর আরটি নিউজের
দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস, নিউইয়র্ক টাইমস এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিকগুলো জানিয়েছে, শুক্রবার গাজার রাফা সীমান্তের কাছে মিশরের প্রাচীর তুলতে দেখা গেছে। স্যাটেলাইটে তোলা ছবিতে দেখা গেছে, সেখানকার মাটি পরিষ্কার করা হচ্ছে এবং একটি প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে।
তবে মিশরের প্রকল্প কর্মকর্তারা এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এদিকে রাফার এই সীমান্তকে গাজাবাসীর জন্য ‘সুরক্ষিত বাফার জোন’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মাসের শুরুতেই দেয়াল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) রাফাতে স্থল হামলা শুরু করার পরই মিশর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বলা হচ্ছে- ফিলিস্তিনিরা রাফা সীমান্ত দিয়ে মিশরে যেনো প্রবেশ না করতে পারে সেজন্যই এই প্রাচীর নির্মাণ করছে মিশর।
নিউইয়র্ক টাইমস এক মিশরীয় সামরিক বাহিনীর ঠিকাদারকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, পাঁচ মিটার উচু দেয়ালটি গাজার দক্ষিণ সীমান্তের বাফার জোনের পাঁচ কিলোমিটার এলাকা বন্ধ করে দেবে।
শুক্রবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষমন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট দাবি করেছেন, আইডিএফ গাজাবাসীকে মিশরে যেতে বাধ্য করবে না। তিনি বলেন, আমরা মিশরের সঙ্গে আমাদের শান্তি চুক্তিকে সম্মান করি। যা এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতার ভিত্তিপ্রস্তর এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
এদিকে গাজার খান ইউনিসে চলমান বৃহত্তম হাসপাতালটি ইসরায়েলি সেনারা অবরুদ্ধ করে রেখেছে। সেখানে চিকিৎসা কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। কোন ধরনের ত্রাণ সামগ্রী সেখানে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায়। এতে নিহত হন ১ হাজার ১৩৯ জন। আহত হওয়ার সংখ্যা ৮ হাজার ৭৩০। এ হিসাব ইসরায়েল সরকারের।
হামাসের হামলার জবাবে ৭ অক্টোবরই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তাদের হামলা থেকে মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, আশ্রয়শিবির-কিছুই বাদ যায়নি।
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৮৫৮ জনে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ৬৮ হাজার ৬৬৭ জন। যার বেশিরভাগ নারী ও শিশু। উদ্বাস্তু হয়েছে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার মধ্যে ১৮ লাখের বেশি।
এমআই