জাহিদুল ইসলাম, রাবি প্রতিনিধি :
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামী মঙ্গলবার । ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া পরীক্ষায় জালিয়াতি বা অসদুপায় ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাশাপাশি মাঠে কাজ করবে নিরাপত্তা বাহিনী।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ সিনেট ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার।
লিখিত বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, এবারের স্নাতক প্রথম বর্ষের (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষা ৫ মার্চ থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত ক, খ ও গ—তিনটি ইউনিটে অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর বিশেষ কোটাসহ মোট ৪ হাজার ৪৩৮টি আসনের বিপরীতে মোট ১ লাখ ৮৫ হাজার ৬৮০টি চূড়ান্ত আবেদন জমা পড়েছে। ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে জালিয়াতি চক্রের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। কোনো প্রকার জালিয়াতি, কারসাজি বা অশুভ তৎপরতাসংক্রান্ত নির্ভরযোগ্য তথ্য পেলে প্রক্টর দপ্তরকে জানিয়ে সবার সহযোগিতাও প্রত্যাশা করেন তিনি।
ভর্তি পরিক্ষা বিভাগীয় শহরে হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারছি না। শিক্ষক নিয়োগ সম্পূর্ন হলে আমরা সামনে থেকে রংপুর,ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং খুলনায় আঞ্চলিক পরিক্ষা নেওয়ার চিন্তা করছি।
পরীক্ষা চলাকালে ক্যাম্পাসের ভেতরে যানবাহন চলাচলে নির্দেশনার সম্পর্কে উপাচার্য বলেন, সকাল সাড়ে ৭টার পর ক্যাম্পাসে কোনো প্রকার ভারী যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। ব্যক্তিগত গাড়ি ও অন্যান্য যানবাহন কাজলা ও বিনোদপুর গেট দিয়ে প্রবেশ করে মেইন গেট দিয়ে বেরিয়ে যাবে। কৃষি ও চারুকলা অনুষদে যাওয়ার ক্ষেত্রে মন্নুজান হল, বেগম খালেদা জিয়া হল, স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন ও তুঁতবাগান–সংলগ্ন রাস্তাটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তবে শারীরিক প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা সব রাস্তা ব্যবহার করতে পারবেন।
ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে বিশেষ সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে উল্লেখ করে উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, পরীক্ষা চলাকালে শুধু অভিভাবকদের অপেক্ষার জন্য শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে (টিএসসিসি) বসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে ১১টি ওয়াটার প্রুফ টেন্ট স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি টেন্টে অভিভাবকদের বসার জন্য ২০০টি করে চেয়ার থাকবে। পরীক্ষা দিতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ইতিমধ্যে নগরীতে আসা শুরু করেছেন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকেরা। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আবাসিক হলগুলোতে পরীক্ষার্থীদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছাত্রী জিমনেসিয়ামে মহিলা অভিভাবকদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া পশ্চিমপাড়ায় আবাসিক এলাকায় ৯০ নম্বর বাসায় অভিভাবকদের থাকার সীমিত ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ভর্তি-ইচ্ছুক পরীক্ষার্থীদের চিকিৎসা–সেবা নিশ্চিত করতে পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্র পরিচালিত একটি মেডিকেল টিম গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন পরিচালিত দুই সদস্যের একটি মেডিকেল টিম এবং ৬টি অ্যাম্বুলেন্সসহ সার্বক্ষণিক চিকিৎসা–সহায়তা প্রস্তুত থাকবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে।
ঘণ্টাব্যাপী ভর্তি পরীক্ষা এমসিকিউ পদ্ধতিতে গ্রহণ করা হবে। পরীক্ষা চলাকালে কোনো পরীক্ষার্থী পরীক্ষাকক্ষের বাইরে যেতে পারবেন না। পরীক্ষার হলে মুঠোফোন, ক্যালকুলেটরসহ মেমোরিযুক্ত অন্য কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে রাখা যাবে না। পরীক্ষা শুরুর ১ ঘণ্টা আগে পরীক্ষা ভবনের গেট এবং ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষাকক্ষের প্রবেশ গেট খুলে দেওয়া হবে। প্রতিটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ১০টা, বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা, বেলা ১টা থেকে ২টা এবং বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চারটি পালায় অনুষ্ঠিত হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও অধ্যাপক হুমায়ুন কবির, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে প্রমুখ।
এমআই