শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

স্ত্রী-কন্যাসহ কাস্টমস কর্মকর্তার জানাজা সম্পন্ন

রোববার, মার্চ ৩, ২০২৪
স্ত্রী-কন্যাসহ কাস্টমস কর্মকর্তার জানাজা সম্পন্ন

খালেদ হোসেন টাপু, রামু কক্সবাজার

ঢাকা বেইলি রোডে বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ড ট্র্যাজিডিতে অকালে ঝরে পড়া কক্সবাজারের উখিয়া হলদিয়া পালং এর  বাসিন্দা শুল্ক কর্মকর্তা শাহ জালাল ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (০৩ মার্চ) সকাল ১১ টায় কক্সবাজারের মরিচ্যা  মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি  বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে শোকার্ত মানুষের ঢল নামে।

জানাজা পূর্বে তাঁদের আলোকিত জীবন নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন উখিয়া-টেকনাফের সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদি, নিহত শাহ জালালের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, উখিয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, উখিয়া  উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরী, উখিয়া উপজেলার প্রখ‍্যাত আলেমেদ্বীন  মাওলানা আবুল ফজল, ঝিলংজা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান, উখিয়া  থানার ওসি মো: শামীম হোসেন, শাহ জালালের বড় ভাই হলদিয়া পালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সাজু,  হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস, শাহজালালের শ্বশুর রামু ফতেখাঁরকুল শ্রীকুল গ্রামের বাসিন্দা  ইঞ্জিনিয়ার মোক্তার আহমদ হেলালী,  বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহেরসহ স্থানীয় আওয়ামী ও পরিবারের সদস্যরা।

জানাজা শেষে  বাড়ির একটু দুরে পশ্চিম মরিচ‍্যা জামে মসজিদের  কবরস্থানে শুল্ক কর্মকর্তা শাহ জালাল, তাঁর স্ত্রী মেহেরুন্নেছা মিনা ও তাঁদের একমাত্র আদরের মেয়ে ফাইরুজ কাশেম জামিরার দাফন সম্পন্ন  করা হয় ।

এর আগে সকাল থেকে দূর-দূরান্ত থেকে তাঁদের এক নজরে দেখতে ছুটে আসেন হাজারো মানুষ। মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে চলে স্বজনদের আহাজারি। চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি সাধারণ মানুষও। সবার বুকে ছিল পাহাড়সম পাথর। ব্যথিত হৃদয়ে ক্ষণজন্মা শাহ জালাল ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানকে চির বিদায় দেন সবাই। এসময় সবার কণ্ঠে ধ্বনিত হয়, এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে। আর যেন কোন বাবা-মায়ের কোল খালি না হয়। সরকারকে এ নিয়ে গভীরভাবে ভাবা উচিত।

শুল্ক কর্মকর্তা শাহজালাল উদ্দিন স্ত্রী মেহেরুন্নেছা মিনা ও একমাত্র মেয়ে চার বছরের শিশু ফাইরুজ কাশেম জামিরাকে নিয়ে থাকতেন ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কাস্টম কোয়ার্টারে।
 তিন দিনের ছুটিতে খাগড়াছড়ি বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হন তারা। 

খাগড়াছড়ি বেড়াতে যাওয়ার আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রী–সন্তানকে নিয়ে তিনি রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের একটি রেস্তোরাঁয় যান।

আগুনে পুড়ে সেখানেই তিনজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এতে জীবিত অবস্থায় আর ফেরা হলো না আপন নিবাস কক্সবাজারে। স্ত্রী–সন্তানসহ নিথর দেহে কক্সবাজারে ফিরেছেন তিনি।

শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে লাশ তিনটি গ্রহণ করেছেন নিহত শাহ জালাল উদ্দিনের  শ্বশুর ইঞ্জিনিয়ার মোক্তার আহমদ হেলালী ও শাহ জালালের বড় ভাই শাহজাহান সাজু।

 গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শাহজালালের স্ত্রী মেহেরুন্নেছা  মিনার রামু ফতেখাঁরকুল শ্রীকুল গ্রামের বাড়ি ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নে পৌঁছায় তাদের মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স। তাদের মরদেহ কক্সবাজার পৌঁছার পর সৃষ্টি হয় হৃদয়বিদারক পরিস্থিতি। স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়। রাত সাড়ে ১১টায় রামু কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মাঠে মেরুন্নেছা মিনার নামাজের যানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মরদেহ নেওয়া হয় শাহজালালের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের হলদিয়াপালংয়ে। রবিবার সকাল ১১ টায় মরিচ্যা মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি  বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে  শাহজালাল ও তার মেয়ে জামিরার জানাজা শেষে তাদেরকে  পারিবারিক কবরস্থানে শায়িত করা হয় ।

এদিকে ছেলে শাহজালালসহ আদরের নাতনি ও পূত্রবধূকে হারিয়ে বাবা আবুল কাশেম এখন অনেকটাই বাকরুদ্ধ। যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর অত্যাচার সহ্য করা এই বীর মুক্তিযোদ্ধা এখন ছেলের শোকে কাতর। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেইলি রোডের ‘গ্রিনফ কোজি কটেজ’ ভবনে লাগা আগুনে মারা যান কাস্টমস ইন্সপেক্টর শাহ জালাল উদ্দিন (৩৫), তার স্ত্রী মেহেরুন নেসা হেলালী (২৪) ও তাদের মেয়ে ফাইরুজ কাশেম জামিলা (৪)।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল