কাউছার আহমেদ, নোবিপ্রবি প্রতিনিধি:
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) কৃষি বিভাগের ল্যাবে টিস্যু কালচার থেকে মাশরুম উৎপাদন করা হয়েছে। বিভাগটির সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নূরুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী রাস্মিন চাকমা এবং মো. বিল্লাল হোসেন টিস্যু কালচার থেকে মাশরুম উৎপাদনে সক্ষম হয়েছেন। কৃষি বিভাগের ল্যাব থেকে মাশরুম বীজ সংগ্রহ নোয়াখালী অঞ্চলের অঞ্চলের কৃষকরা উৎপাদন করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন ড. নুরুজ্জামান।
জানতে চাইলে ড. নূরুজ্জামান বলেন, প্রায় ছয় মাসের কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে আমাদের ল্যাবে টিস্যু কালচারের মাধ্যমে আমরা মাশরুম উৎপাদনে সক্ষম হয়েছি। মূলত ওয়েস্টার মাশরুমের চারটি ভ্যারাইটি- পিওটু, অ্যাসওটু, অ্যাইচকে-৫১ এবং ডব্লিওএস নিয়ে টিসু কালচারের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের কার্বোহাইড্রেট, অ্যামাইনো অ্যাসিড, ফ্যাটিঅ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, মিনারেল এবং ফাইবার টেস্ট সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি জানান, মাশরুমের এ ধরণের টিস্যু কালচার সাভারের মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউট বহু আগে থেকেই হয়ে আসছে। তাছাড়া বাংলাদেশের মাগুরা ও কুমিল্লাতে স্বল্প পরিসরে মাশরুমের টিস্যু কালচার হলেও নোয়াখালী অঞ্চলে এ ধরনের টিস্যু কালচার নেই বললেই চলে।
কৃষি বিভাগের এই সহকারী অধ্যাপক আরো বলেন, সাভার মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউট থেকে সংগৃহীত মাশরুমের ত্রুটিং বডি থেকে সরিষার দানার মত অংশ নিয়ে টিস্যু কালচারের মাধ্যমে বীজ তৈরি করা হয়েছে, যে বীজগুলো কিংবা প্যাকেটগুলো আমাদের ল্যাব থেকে কৃষকরা সংগ্রহ করে এবং উক্ত প্যাকেট থেকে মাশরুম উৎপাদন করে আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। তাছাড়া ভোক্তারাও আমাদের ল্যাব থেকে এ প্যাকেট সংগ্রহ করে বাসার বারন্দায় কিংবা পরিত্যক্ত জায়গায় রেখে নিজেরাই মাশরুম উৎপাদন করে পুষ্টির চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।
তিনি আরও বলেন, পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই মাশরুমের বিশ্বব্যাপী চাহিদা থাকলেও বাংলাদেশে উৎপাদন ব্যবস্থা ও স্বল্পতার কারণে এদেশের জনগণ এর পুষ্টিগুণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শুধু মাশরুম খেয়ে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ বেঁচে থাকা সম্ভব।
নোয়াখালীসহ আশেপাশের অঞ্চলে কৃষক ও ভোক্তা পর্যায়ে ওয়েস্টার মাশরুমসহ অন্যান্য মাশরুম বাণিজ্যিকভাবে ছড়িয়ে দেওয়াই প্রাথমিক লক্ষ্য বলে উল্লেখ করেন এই গবেষক। তাছাড়া ভবিষ্যতে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও আশেপাশের এলাকা থেকে বন্য মাশরুম সংগ্রহ করে এ প্রক্রিয়ায় সংখ্যা বাড়িয়ে বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষীদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়াও লক্ষ্য বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সময় জার্নাল/এলআর