নিজস্ব প্রতিনিধি:
বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লায় জিম্মি আছেন ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু। আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে জাহাজটি ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে।
জাহাজে থাকা নাবিক ও ক্রুরা হলেন- জাহাজের মাস্টার মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, চিফ অফিসার আতিক উল্লাহ খান, সেকেন্ড অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, থার্ড অফিসার এন মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, ডেক ক্যাডেট সাব্বির হোসাইন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামান, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলাম, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. রোকন উদ্দিন, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভীর আহমেদ, ইঞ্জিনি ক্যাডেট আইয়ুব খান, ইলেকট্রিসিয়ান ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ, ক্রু মো. আনোয়ারুল হক, মো. আসিফুর রহমান, মো. সাজ্জাদ হোসেন, জয় মাহমুদ, মো. নাজমুল হক, আইনুল হক, মোহাম্ম শ্মসুদ্দিন, মো . আলী হোসেন, মোশাররফ হোসেন শাকিল, মো. শরিফুল ইসলাম, মো. নুর উদ্দিন ও মো. সালেহ আহমদ।
এদের মধ্যে সন্ধ্যা সাতটার দিকে জাহাজের নাবিক আসিফুর রহমান ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। এতে তিনি লেখেন, ‘সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে আমরা আক্রমণের শিকার। আমরা সবাই সুস্থ ও নিরাপদে আছি। আমাদের প্রার্থনায় রাখুন।’
এর আগে বিকেল ৫টা ৩২ মিনিটে পাঠানো ভয়েস মেসেজে একজন নাবিক বলেন, ‘আমাদের জন্য দোয়া করিও। সোমালিয়ার জলদস্যুরা অ্যাটাক করেছে। অলরেডি আমরা অ্যারেস্টেড। আমাদের এক জায়গায় বন্দি করে রাখছে। মনে হচ্ছে নিয়ে যাবে আমাদের। ওরা বোট উঠিয় ফেলছে অলরেডি।’
জাহাজটিতে থাকা এক ইলেকট্রিশিয়ান জানান, তাদের একটি রুমে বন্দি করে রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে জলদস্যুদের একটি বোট তোলা হয়েছে জাহাজে। অপর বোটে জলদস্যুদের একটি দল চলে গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে পাঠানো নাবিকদের বেশ কয়েকটি ভয়েস মেসেজ হাতে এসেছে।
এর একটিতে ভুক্তভোগী নাবিককে বলতে শোনা যায়, ‘জলদস্যুরা আমাদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমরা সবাই ব্রিজে আটক আছি। আমি এখন ওয়াশরুমে এসে আপনাকে ভয়েস দিচ্ছি। ওদের সবার কাছে গান আছে।’
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে জাহাজটি। এরপর বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জাহাজটি ভারত মহাসাগর থেকে সোমালিয়া নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করে দস্যুরা। বর্তমানে নাবিকদের ইন্টারনেট কানেকশন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘জাহাজটি সোমালিয়া বন্দরের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সন্ধ্যা সাতটার পরে চিফ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। উনারা ভালো আছে। জলদস্যুদের নিজস্ব চ্যানেল আছে।
সাধারণত জাহাজ বন্দরে নিয়ে যাওয়ার পর মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। আমরা মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তাদের পদক্ষেপ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। বাংলাদেশি নাবিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।’
সময় জার্নাল/এলআর