নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের ইতিহাসে গত বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছর ডেঙ্গুর ‘পিক সিজন’ আসার আগেই গত আড়াই মাসে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ অবস্থায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এক হাজার ৫০০ ছাড়িয়েছে। এরমধ্যে এই সময়ে মারা গেছেন ২০ জন। এরমধ্যে নয়জন পুরুষ এবং ১১ জন নারী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, ২০০০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে ৮৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু শুধু গত বছরই ডেঙ্গুতে ১ হাজার ৭০৫ জন মারা গেছেন। চলতি বছরের প্রথম আড়াই মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি।
তিনি আরও বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া না হলে চলতি বছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব গত বছরের চেয়ে বেশি হওয়ার আশঙ্কা আছে।
এদিকে, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নির্মূলে করণীয় বিষয়াদি নিয়ে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রের সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন।
বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের একার পক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। নাগরিকদের মশা নিধনে সক্রিয় হতে হবে।
এ সময় ডেঙ্গু রোগীদের যথাযথ ও সময়মতো চিকিৎসাসেবা দিতে দেশের সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, গত বছর যেভাবে ডেঙ্গুর বিস্তার ছিল এতেই বোঝা যায়, এবার আগে থেকেই সতর্ক না হয়ে কোনো উপায় নেই।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একই সঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেনতনা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। এরমধ্যে মারা গেছেন এক হাজার ৭০৫ জন।
আরইউ