জেলা প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের জুড়ীতে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় বাবা-মা ও তিন ভাই-বোনের পর এবার চলে গেলো শিশু সোনিয়া আক্তারও (১২)।
বুধবার (২৭ মার্চ) ভোরে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়ার পর মৃত্যু হয় তার। এ নিয়ে এ ঘটনায় ওই পরিবারের ৬ জনেরই মৃত্যু হলো।
এর আগে মঙ্গলবার ভোরে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব গোয়ালবাড়ী গ্রামের ভাঙ্গার পাড় এলাকায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে একই পরিবারের পাঁচ সদস্যের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন- ফয়জুর রহমান (৫০), তার স্ত্রী শিরি বেগম (৪৫), তাদের মেয়ে সামিয়া (১৫), সাবিনা (৯) এবং ছেলে সায়েম উদ্দিন (৭)।
এছাড়া মৃত ভেবে ফয়জুর-শিরি দম্পতির আরেক মেয়ে সোনিয়া আক্তারকে (১২) রাখা হয়েছিল মরদেহের সারিতে। ঘণ্টাখানেক পর সোনিয়ার শ্বাস-প্রশ্বাস বুঝতে পেরে দ্রুত তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মৌলভীবাজার জেলা হাসপাতালে। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তাকে দিনভর আইসিইউতে রাখা হয়।
সোনিয়া স্থানীয় ইন্তাজ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। তার মারা যাওয়া বোন সামিয়া নবম শ্রেণিতে এবং সাবিনা চতুর্থ শ্রেণিতে পড়তো।
সোনিয়ার মামা আজির উদ্দিন বলেন, সোনিয়াদের বাড়ি থেকে আমাদের বাড়ির দূরত্ব মাত্র পাঁচ মিনিটের। সেহরি খেয়ে সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়েছে তখনই এ ঘটনা ঘটেছে। সোনিয়াদের ঘরের পাশেই মসজিদ। প্রথমে মসজিদের লোকজন আগুন দেখে ডাকাডাকি শুরু করেন। খবর পেয়ে আমরাসহ আশেপাশের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। কিন্তু তখন আর কিছু করার ছিল না।
অন্যদিকে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুত সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার নজরুল ইসলাম মোল্লাকে প্রধান করে গঠিত তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুত সমিতি। এ কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন সহকারী প্রকৈশলী দেলওয়ার হোসেন ও এনফোর্সমেন্ট কো-অর্ডিনেটর মুরাদ হোসেন।
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুত সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) এ বি এম মিজানুর রহমান বলেন, সোমবার রাতে জেলার বিভিন্ন জায়গায় ঝড়বৃষ্টি হয়। এ কারণে রাত আড়াইটার দিকে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করা হয়। ভোর ৫টার দিকে আবার চালু করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এরপর কোনো এক সময় এ ঘটনা ঘটেছে।
সময় জার্নাল/এলআর