দুলাল বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি :
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় এক ব্যক্তির পুকুরে বালু খুঁড়লেই প্রাচীন আমলের বিভিন্ন ধরনের দেব-দেবীর মূর্তি পাওয়া যাচ্ছে। মূর্তিগুলো দেখতে পুকুর পাড়ে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা। কয়েক দিন ধরে উপজেলার ফুকরা ইউনিয়নের গুঘালিয়া গ্রামের একটি পুকুরে মূর্তিগুলো পাওয়া যাচ্ছে। মূল্যবান সম্পদ মনে করে স্থানীয় শিশুরা প্রতিদিন বালু খূঁড়ে খূড়ে এসব মূর্তি তুলছে।
পুকুরটির মালিক নিকটবর্তী সরাইকান্দি গ্রামের বদরুল আলম শেখ। এক সপ্তাহ আগে সেখানে গোসল করতে নেমে বালুর মধ্যে ওই দেব-দেবীর মূর্তিগুলো পায় স্থানীয়রা। সে সময় তারা বালু খূঁড়ে আরও কিছু মূর্তি পেলে বাড়িতে নিয়ে যায়। এভাবে প্রতিদিন বালু খূঁড়ে মূর্তি পাচ্ছে শিশুরা।
এলাকাবাসী বলছে, এ রকম মূর্তি এর আগে দেখেননি তারা।
ফুকরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ ইশতিয়াক পটু বলেন, তার এলাকার একটি পুকুরে বালু খূঁড়লেই ‘প্রাচীন আমলের’ মূর্তি পাওয়া যাচ্ছে বলে তিনি স্থানীয়দের কাছে শুনেছেন। তবে সেগুলো কীসের তৈরি সে বিষয়ে তার ধারণা নেই।
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.রাশেদুজ্জামান খোঁজখবর নিতে ওই ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠান। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন দেব-দেবীর অর্ধশতাধিক মূর্র্তি ও মূর্তির অংশবিশেষ জব্দ করে নিয়ে আসেন।
মূর্তিগুলো কোন আমলের ও কিসের তৈরি, সেটা প্রতœতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষার পর জানতে পারবেন বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। স্থানীয়দের ধারণা, মূর্তিগুলো ব্রোঞ্জের তৈরি।
গুঘালিয়া গ্রামের বাসিন্দা সাজ্জাদ শেখ আজ বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন,‘এক সপ্তাহ আগে আমরা ওই পুকুরে গোসল করতে গিয়ে বালুর মধ্যে একটি মূর্তি দেখতে পাই। পরে বালু খূঁড়ে আরও কিছু মূর্তি পাওয়া যায়। বাড়িতে এনে লোকজনকে দেখাই এবং স্থানীয় এক সাংবাদিককে বিষয়টি জানাই। তিনি বিষয়টি ইউএনও স্যারকে জানালে আমাদের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এসে সেগুলো নিয়ে যান।’
ফুকরা ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা শংকর বাড়ৈ বলেন, গুঘালিয়া গ্রামের একটি পুকুরে স্থানীয় কয়েকটি শিশু গোসল করতে গিয়ে বালু খূঁড়ে প্রাচীন আমলের মূর্তি পায়। বিষয়টি ইউএনও জানতে পেরে তাঁকে সেখানে পাঠান। পরে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে সেগুলো উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
কাশিয়ানীর ইউএনও মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, স্থানীয় এক সাংবাদিকের মাধ্যমে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। পরে ঘটনাস্থল থেকে মূর্তিগুলো উদ্ধার করা হয়। সেগুলো জেলা প্রশাসকের ট্রেজার (কোষাগারে) জমা দেওয়া হবে। প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে মূর্তিগুলো কিসের তৈরি বলতে পারবেন। তার আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
এমআই